আইফোনে স্পাইওয়্যার: ইসরায়লি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা অ্যাপলের

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ২৫, ২০২১, ০৪:২৯ এএম

আইফোনে স্পাইওয়্যার: ইসরায়লি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা অ্যাপলের

বিশ্বের বিখ্যাত মোবাইল ফোন নির্মাতা কোম্পানি অ্যাপল তাদের আইফোন ব্যবহারকারীদের ওপর নজরদারির অভিযোগে ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার কোম্পানি এনএসও-এর বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার ডিস্ট্রিক্ট আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার কোম্পানি এনএসও এবং তাদের মূল প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অ্যাপল এই অভিযোগ এনে মামলা করেছে যে, এনএসও ও তার মূল প্রতিষ্ঠান হ্যাকিং সরঞ্জাম ব্যবহার করে আইফোন ব্যবহারকারীদের ওপর নজরদারি চালাচ্ছে।

এই প্রযুক্তি দিয়ে ফোন ব্যবহারকারীর মেসেজ, ফটো এবং ইমেল তারা হাতিয়ে নিতে পারে এবং গোপনে ব্যবহারকারীর অজান্তে তার ফোনের মাইক ও ক্যামেরা চালু করে দিতে পারে।

এনএসও কোম্পানির পেগাসাস সফটওয়্যার আইফোন এবং অ্যানড্রয়েড দু'ধরনের ফোনেই ভাইরাস ঢুকিয়ে হ্যাক করতে পারে।

এনএসও বলছে তাদের হ্যাকিং প্রযুক্তির লক্ষ্যবস্তু সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা। তারা আরও দাবী করছে যে, যেসব দেশে মানবাধিকারের রেকর্ড ভাল, তাদের সেনাবাহিনী, আইন প্রয়োগকারী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেই শুধু তারা এই হ্যাকিং প্রযুক্তি সরবরাহ করে থাকে।

কিন্তু এই সফটওয়্যার ব্যবহার করে অধিকারকর্মী, আন্দোলনকারী, রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকদের ফোনও হ্যাক করা হচ্ছে বলে আভিযোগ আছে।

ইসরায়েলি স্পাইওয়্যারের টার্গেট পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো এবং আরো এক ডজন রাষ্ট্রনেতা।

এ মাসের (নভেম্বর, ২০২১) গোড়ায় মার্কিন কর্মকর্তারা “বিদেশি কিছু সরকারকে তাদের নিজস্ব সীমানার বাইরেও দমন পীড়ন চালানোর সুযোগ করে দিয়েছে”-অভিযোগে এই কোম্পানিটিকে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল।

অ্যাপলের একটি ব্লগ পোস্টে জানানো হয়েছে, ''অ্যাপল ব্যবহারকারীদের যাতে ভবিষ্যতে ক্ষতি এবং হয়রানি করা না হয়, তার জন্য এনএসও যাতে অ্যাপল কোম্পানির কোনরকম সফটওয়্যার, বা তাদের সেবা ব্যবস্থা ও অ্যাপলের কোন ডিভাইস ব্যবহার করতে না পারে তার জন্য অ্যাপল স্থায়ী ইনজাংশানের (নিষেধাজ্ঞা) আবেদন জানিয়েছে।”

আইফোন প্রস্তুতকারী অ্যাপল বলছে, এই মামলা থেকে আদায় করা ক্ষতিপূরণের অর্থ, সেইসাথে তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে ১০ মিলিয়ন ডলার সিটিজেন ল্যাব নামে সাইবার নজরদারি বিষয়ক একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে দান করবে।

টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রথম এনএসও-এর এমন কার্যক্রম উদঘাটন করে।

তবে এনএসও জবাবে বলেছে, “এনএসও গ্রুপের তৈরি এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।”

"প্রযুক্তির নিরাপদ জগতে শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনকারীরা এবং সন্ত্রাসীরা অবাধে বিচরণ করতে পারে। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার বৈধ অস্ত্র আমরা সরকারগুলোর হাতে তুলে দিয়েছি। এনএসও গ্রুপ সত্য তুলে ধরতে তাদের কাজ চালিয়ে যাবে।"

সূত্র: বিবিসি

Link copied!