আপনার স্মার্টফোনটি বৈধ কিনা যাচাই করবেন যেভাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

অক্টোবর ১, ২০২১, ০৩:২১ এএম

আপনার স্মার্টফোনটি বৈধ কিনা যাচাই করবেন যেভাবে

আগামীকাল শুক্রবার (১ অক্টোবর) থেকে দেশের সকল অনিবন্ধিত মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে। একই সঙ্গে এখন থেকে অনিবন্ধিত মোবাইল উৎপাদন বা আমদানি বা ক্রয়-বিক্রয় করলে টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

এখন থেকে নতুন হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে সচল করতে হলে অবশ্যই তার আইএমইআই নম্বরটি বিটিআরসি'র ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থায় নিবন্ধিত থাকতে হবে।

শুধুমাত্র বৈধভাবে দেশে উৎপাদিত এবং বৈধ পথে আমদানিকৃত হ্যান্ডসেটগুলো এনআইআর ব্যবস্থায় নিবন্ধিত থাকবে। ফলে চোরই পথে আসা এবং নকল হ্যান্ডসেট আর বাংলাদেশের নেটওয়ার্কে ব্যবহার করা যাবে না।

এ অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই ফোন ব্যবহারকারীদের মনে প্রশ্ন উঠেছে, তিনি যে ফোনটি ব্যবহার করছন সেটি বৈধ নাকি অবৈধ!

খুব সহজেই এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। তারা বলছে, মোবাইল থেকে মেসেজ পাঠিয়ে গ্রাহকেরা সহজেই বৈধ বা অবৈধ মোবাইল চিহ্নিত করতে পারবেন।

বিটিআরসি জানিয়েছে, নতুন মোবাইল ফোন কেনার আগে সেটির মোড়কের গায়ে লেখা ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বরটি দেখে নিতে হবে। এরপর ফোনে মেসেজ অপশনে গিয়ে বড় অক্ষরে কেওয়াইডি লিখে স্পেস দিয়ে ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বরটি লিখে ১৬০০২ নম্বরে মেসেজ পাঠাতে হবে। ফিরতি মেসেজে গ্রাহক বিটিআরসির তথ্যভান্ডারে ওই আইএমইআই নম্বরটি আছে কি না, তা জানতে পারবেন।

বিটিআরসি সংশ্লিষ্টরা জানান, এনইআইআর সার্ভারে বাংলাদেশে উৎপাদিত এবং বৈধভাবে আমদানি করা হ্যান্ডসেটগুলোর শনাক্তকরণ নম্বর বা আইএমইআই সংরক্ষিত থাকবে। বর্তমানে বিটিআরসির এনওসি অটোমেশন অ্যান্ড আইএমইআই ডাটাবেজ (এনএআইডি) সিস্টেমে প্রায় ১৪ কোটি আইএমইআই নম্বর সংযোজন হয়েছে। এনএআইডি সিস্টেমের আইএমইআইসমূহ, মোবাইল অপারেটরের ইআইআর এবং বিটিআরসিতে স্থাপিত জাতীয় পর্যায়ের কেন্দ্রীয় এনইআইআর একটি সমন্বিত ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করবে।

এনইআইআর সার্ভারে সরাসরি প্রত্যেক মোবাইল অপারেটরের নিজ নিজ ইআইআর এর সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে। গ্রাহকদের মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোবাইল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়ে ব্যবহার উপযোগী হবে। এনইআইআর সব হ্যান্ডসেটের বৈধতা যাচাইয়ের মাধ্যমে মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেটের প্রবেশাধিকার বিষয়ে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দেবে।

সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, বিদেশ থেকে কেনা বা উপহার হিসেবে পাওয়া মোবাইল সেটগুলোকে নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হবে। গ্রাহকের উপর যেন বাড়তি চাপ সৃষ্টি না হয় সেভাবেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিদেশ থেকে আনা হ্যান্ডসেট ক্রয়ের কাগজপত্র দেখিয়ে ব্যবহারকারী নিজেই ওয়েবসাইট এবং মোবাইল ফোন অপারেটরের কাস্টমার কেয়ার থেকে নিবন্ধন করে নিতে পারবেন।

বিদেশ থেকে ব্যক্তিগত ব্যবহার কিংবা উপহারের জন্য হ্যান্ডসেট নিয়ে আসার ক্ষেত্রে একটা নির্দিষ্ট সংখ্যা বেধে দেওয়া হবে। ওই সংখ্যার বেশি হ্যান্ডসেট আনলে সরকার নির্ধারিক কর পরিশোধ করতে হবে।

মূলত অবৈধ পথে হ্যান্ডস্টে আমদানি বন্ধ এবং স্মার্টফোন ব্যবহারের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ বন্ধের জন্যই এনইআইআর সার্ভার চালু করা হচ্ছে। অবৈধ পথে হ্যান্ডসেট আমদানি বন্ধ হলে বছরে প্রায় সরকারের তিন হাজার কোটি টাকার বাড়তি রাজস্ব আয়ও নিশ্চিত হবে। একই সঙ্গে এ সার্ভারের ব্যবহার শুরু হলে মোবাইল হ্যান্ডসেট ছিনতাই এবং চুরিও নিরুৎসাহিত হবে।

Link copied!