কিডনি-ফুসফুসে জমাট রক্ত, জানা যায়নি মৃত্যুর কারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ১৯, ২০২২, ০৯:৪২ পিএম

কিডনি-ফুসফুসে জমাট রক্ত, জানা যায়নি মৃত্যুর কারণ

গাজীপুরে প্রাইভেট কার থেকে শিক্ষক দম্পত্তির মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তে দুজনের ফুসফুস ও কিডনিতে জমাট রক্ত পাওয়া গেছে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলা হয়নি।

শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান মো. শাফি মোহাইমেন জানান, বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে মরদেহ দুটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়েছে। এ সময় দুইজনের ফুসফুস ও কিডনিতে প্রায় একই রকম লক্ষণ পাওয়া গেছে। তাদের প্রত্যেকের ফুসফুস ও কিডনিতে জমাট রক্ত পাওয়া গেছে। এটা সাধারণত খাবারে বিষক্রিয়া কিংবা অন্য কোনো কারণেও হতে পারে। তাই তাদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হতে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকাস্থ সিআইডি ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।

নিহতরা হলেন- গাজীপুরের টঙ্গীর শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম জিয়াউর রহমান (৫০) ও তার স্ত্রী মোসা. মাহমুদা আক্তার জলি (৩৫)। তিনি টঙ্গীর আমজাদ আলী সরকার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন।  

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) ভোররাতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাছা থানার দক্ষিণ খাইলকুর বগারটেক এলাকায় প্রাইভেট কার থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে স্বজনরা। পরে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ ও নিহতদের স্বজনরা জানায়, ইতোপূর্বে গাজীপুরের কালীগঞ্জের পুনসই হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন জিয়াউর রহমান। ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে টঙ্গীর শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। তার স্ত্রী মোসাম্মৎ মাহমুদা আক্তার জলি টঙ্গী আমজাদ আলী সরকার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সপরিবারে গাছা থানার কামারজুরি এলাকার নিজ বাড়িতে থাকতেন। ব্যক্তিগত গাড়িতে করে দুজনেই স্কুলে যাওয়া-আসা করতেন।

বুধবার স্কুল শেষে সহকর্মী ও সম্পর্কিত মামাতো ভাই মো. কামরুজ্জামানকে গাড়িতে তুলে নিয়ে জিয়াউর রহমান তার স্ত্রী জলির স্কুলে যান। সেখান থেকে স্ত্রী জলিকে গাড়িতে তুলে বাসার উদ্দেশে রওনা হন। পথে কামরুজ্জামানকে নামিয়ে দেন। জিয়াউর রহমানের ছেলে মিরাজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাবার মোবাইলে কল দেন। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তার মায়ের মোবাইলে ফোন দিলে বাসায় আসছেন বলে জানান। এরপর থেকে ফোনে তাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি। পরে তারা গাছা থানা, টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানায় যোগাযোগ করেন। রাতভর তারা বিভিন্ন জায়গায় তাদের খোঁজ করেন। এক পর্যায়ে ভোররাতে দক্ষিণ খাইলকৈর বগারটেক এলাকা থেকে ওই গাড়ির ভেতর চালকের আসনে জিয়াউর রহমান ও পাশেই তার স্ত্রীর মাহমুদা আক্তার জলির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে প্রথমে তাদের তায়রুন্নেছা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও পরে উত্তরার একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।  

নিহতের বড় ভাই মো. রিপন বলেন, হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত। তাদের সঙ্গে থাকা স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন কিছুই খোয়া যায়নি। ঘটনাটি যদি পরিকল্পিত নাই হতো তাহলে টাকা, স্বর্ণ, মোবাইল ও গাড়ি নিয়ে যেত। তার কিছুই হয়নি।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ ইলতুৎমিশ বলেন, ঘটনাটি তদন্তে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করা হয়েছে। কী কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়।

Link copied!