চাঁদের বুকে রয়েছে ১ লাখ বছর বেঁচে থাকার মতো অক্সিজেন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ১৯, ২০২১, ০১:৫২ এএম

চাঁদের বুকে রয়েছে ১ লাখ বছর বেঁচে থাকার মতো অক্সিজেন

মানুষ এতোদিন জানতো পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদে কোন বাতাস নেই। কিন্তু মানুষের সেই ধারণার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। চন্দ্রপৃষ্ঠে মানুষের বেঁছে থাকার জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন রয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, অন্তত ৮০০ কোটি মানুষের বেঁচে থাকার জন্য ১ লাখ বছরের অক্সিজেন রয়েছে চাঁদের বুকেই।

ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য জরুরি অক্সিজেন আছে চন্দ্রপৃষ্ঠের ওপরের শীলাচূর্ণের স্তরেই। শিলাচূর্ণের এই আবরণকে বলা হয় রেগোলিথ।

নতুন প্রকাশিত গবেষণাপত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চন্দ্রপৃষ্ঠে যে পরিমাণ অক্সিজেন আছে, তা যদি ঠিকঠাক আহরণ করা সম্ভব হয়, তবে ৮০০ কোটি মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে ১ লাখ বছর কাটিয়ে দিতে পারবেন। তবে সেই অক্সিজেন বায়বীয় রূপে নেই। গবেষকেরা এখন রেগোলিথ থেকে অক্সিজেন আহরণের টেকসই পদ্ধতি বের করার চেষ্টা করছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে উল্কা নিয়ে একটি প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী চাঁদের রেগোলিথের ৪১ থেকে ৪৫ শতাংশই অক্সিজেন। স্পেস ডটকমের আরেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাঁদ থেকে ব্যবহারযোগ্য অক্সিজেন আহরণ করতে চাইলে বিজ্ঞানীদের ইলেক্ট্রোলাইসিস নামের প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।

পৃথিবীতে ইলেক্ট্রোলাইসিসের মাধ্যমে খনিজ আকরিক থেকে ধাতব পদার্থ আহরণ করা হয়। সঙ্গে উপজাত হিসেবে উৎপন্ন হয় অক্সিজেন। তবে চাঁদে এ পদ্ধতিতে অক্সিজেন আহরণই মূল কথা। ধাতব সেখানে উপজাত, যা হয়তো একদিন কাজে লাগানো যাবে।

চাঁদের বায়ুমণ্ডল বেশ হালকা। তাতে যৎসামান্য অক্সিজেন থাকলেও মূল উপাদান হাইড্রোজেন, নিয়ন ও আরগন। চাঁদে খনিজ যেমন সিলিকা, অ্যালুমিনিয়াম এবং আয়রন ও ম্যাগনেশিয়াম অক্সাইড থাকে ভিন্ন রূপে, সেটা চন্দ্রপৃষ্ঠে থাকা পাথর, ধুলা, নুড়ি ইত্যাদির মধ্যে।

দ্য কনভারসেশন ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চন্দ্রপৃষ্ঠের নিচের শক্ত পাথুরে স্তরগুলোর অক্সিজেন যদি বাদও দেওয়া হয়, কেবল রেগোলিথ বিবেচনায় নিলেও প্রচুর অক্সিজেন পাওয়া যাবে। চন্দ্রপৃষ্ঠে রেগোলিথের গড় গভীরতা যদি ১০ মিটার ধরা হয় এবং তা থেকে যদি সব অক্সিজেন আহরণ করা সম্ভব হয়, তবে তা পৃথিবীর ৮০০ কোটি মানুষের জন্য কমবেশি ১ লাখ বছরের জন্য অক্সিজেন মিলবে।

চলতি বছর বেলজিয়ামভিত্তিক স্টার্টআপ স্পেস অ্যাপলিকেশনস সার্ভিসেস তিনটি পরীক্ষামূলক চুল্লি বা রিঅ্যাক্টর তৈরির ঘোষণা দিয়েছে, যেগুলো ইলেক্ট্রোলাইসিস প্রক্রিয়ায় অক্সিজেনের উৎপাদন বাড়াতে পারে। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির অভিযানের অংশ হিসেবে ২০২৫ সাল নাগাদ এই রিঅ্যাক্টরগুলো চাঁদে পাঠানো হতে পারে।

Link copied!