দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা চবি ছাত্রলীগের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ২, ২০২২, ০৫:৪৯ পিএম

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা চবি ছাত্রলীগের

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের আন্দোলন আজ মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস কার্যত অচল হয়ে আছে।

আন্দোলনরত ছাত্রলীগকর্মী মোহাম্মদ দেলোয়ার বলেন, ‘আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে। শাটল ট্রেন ও বাস বন্ধ থাকবে। তবে গতকাল রাতে আমরা অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে মূল ফটক খুলে দিয়েছি।’

এদিকে অবরোধের কারণে আজও কোনো শাটল ও বাস পৌঁছায়নি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বন্ধ আছে ক্লাস সমূহ। পরীক্ষা স্থগিতের ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত আসেনি বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক চৌধুরী আমির মোহাম্মদ মুছা। তিনি বলেন, ‘বিভাগীয় সভাপতিরা এই সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে শাটল-বাস যেহেতু আসেনি, পরীক্ষা বাতিল হতে পারে।’

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার রতন কুমার চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল শাটল চালকসহ তিনজনকে অপহরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছেলে। তাই নিরাপত্তার জন্য আমরা শাটল বন্ধ রেখেছি।’

আন্দোলনের প্রেক্ষাপট

দীর্ঘ তিন বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ। রবিবার দিবাগত মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে। কিন্তু কমিটি ঘোষণা করার পর থেকেই ক্যাম্পাসজুড়ে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যায়। অছাত্রদের কমিটিতে রাখার অভিযোগ এনে ক্যাম্পাসের মূল ফটকে তালা দিয়ে অবরোধ করে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা।

২০১৯ সালে ১৪ জুলাই রেজাউল হককে সভাপতি ও ইকবাল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে চবি শাখা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল।

চবি শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষে বিভক্ত। একটি পক্ষ চট্টগ্রাম সিটির সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী। আরেকটি পক্ষ সিটির সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসানের অনুসারী। আর নাছিরের অনুসারী সাধারণ সম্পাদক ইকবাল।

শাখা ছাত্রলীগের দুটি পক্ষের মধ্যে রয়েছে ১১টি উপপক্ষ। এগুলোর মধ্যে বিজয় ও চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) মহিবুলের অনুসারী। বাকি ৯টি উপপক্ষ—ভার্সিটি এক্সপ্রেস, কনকর্ড, বাংলার মুখ, সিক্সটি নাইন, একাকার, রেড সিগন্যাল, উল্কা, এপিটাফ ও স্বাধীনতা নাছিরের অনুসারী।

রবিবার রাত দুইটায় ক্যাম্পাসের মূল ফটকে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন পদবঞ্চিতরা। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের বিজয় গ্রুপের অনুসারীদের সদ্য যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়া মো. ইলিয়াসের বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে স্লোগান দিতে দেখা যায়। আন্দোলনকারীদের মতে ইলিয়াসের মদদেই তাঁরা পদ বঞ্চিত হয়েছেন।

মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে প্রায় শতাধিক নেতা–কর্মী বিক্ষোভে অংশ নেন। এ সময় তাঁরা ‘অবৈধ কমিটি, মানিনা মানব না’ ও ‘টাকার বিনিময়ে কমিটি মানিনা মানব না’ বলে স্লোগান দেন।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য এ কমিটির অনুমোদন দেন।

Link copied!