নাটকে বিদেশী শুটিংয়ের অংশ কমে যাচ্ছে

বিনোদন ডেস্ক

জুলাই ৫, ২০২২, ০৩:৫১ পিএম

নাটকে বিদেশী শুটিংয়ের অংশ কমে যাচ্ছে

বিদেশে শুটিং হওয়া নাটক হয়ে উঠেছিল দেশের টিভি চ্যানেলগুলোর ঈদ অনুষ্ঠানমালার অন্যতম অনুষঙ্গ। বিদেশে নাটকের শুটিং করা নিয়ে ঈদের তিন–চার মাস আগেই আলাদা পরিকল্পনা করতেন টিভি চ্যানেলের প্রযোজক ও নির্মাতারা। তারপরে উৎসবমুখর পরিবেশে তিন থেকে চারজন পরিচালক একসঙ্গে উড়াল দিতেন থাইল্যান্ড, নেপাল, মালদ্বীপসহ আশপাশের দেশগুলোতে। কখনো ছুটতেন মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুরেও। এসব নাটকের দৃশ্যপট, গল্পের ভিন্নতা দর্শকদের আলাদাভাবে আকর্ষণ করত। শিল্পী–কলাকুশলীদের মধ্যে কাজগুলো নিয়ে বিশেষ যত্নের ছাপও লক্ষ করা যেত। বিদেশের শুটিংয়ে জমত তারকাদের আড্ডা। কিন্তু আড়াই বছর ধরে চেনা সেই দৃশ্য যেন হারিয়ে যেতে বসেছে। ঈদনাটকে বিদেশে শুটিংয়ে অনীহা দেখা যাচ্ছে প্রযোজক, পরিচালকসহ অনেক তারকা ও কলাকুশলীর মধ্যে।

দেশের প্রথম বেসরকারি টিভি চ্যানেল একুশে টেলিভিশন প্রচারে আসার সময় থেকেই একক নাটকের চাহিদা বাড়তে থাকে। চ্যানেলটি নাটক নির্মাণে ভিন্নতা আনতে দেশের বাইরে শুটিং শুরু করে—এমনটাই জানান প্রযোজক ও পরিচালকেরা। সেই সময় ফেরদৌস হাসান, মোহন খান, রায়হান খানসহ বেশ কয়েকজন নির্মাতা প্রায়ই দেশের বাইরে শুটিংয়ে যেতেন। পরে তরুণ নির্মাতাদের মধ্যে দীপু হাজরা, অঞ্জন আইচ, শামীম জামান, বি ইউ শুভ, অনিরুদ্ধ রাসেল, সরদার রোকন, মেহেদী হৃদয়রা বিদেশে শুটিংয়ে আগ্রহী হন। বিভিন্ন সময়ে তাঁদের নাটকগুলোতে দেখা গেছে জাহিদ হাসান, মোশাররফ করিম, মাহফুজ আহমেদ, জয় শাহরিয়ার, রিচি সোলায়মান, বিপাশা হায়াত, তানভীন সুইটি, দীপা খন্দকার, নুসরাত ইমরোজ তিশা, আবদুন নূর সজল, জিয়াউল ফারুক অপূর্ব, মোনালিসা, এফ এস নাঈম, মৌসুমী হামিদ, সারিকা, উর্মিলা, তৌসিফ মাহবুব, মুমতাহিনা টয়া, ফারহান আহমেদ জোভান, তানজিন তিশাসহ আরও অনেকে। ১৯৯৮ সালে তিন নির্মাতা তাঁদের বেশির ভাগ নাটকের শুটিং করতেন বিদেশে। তাঁদের একজন মোহন খান। তিনি বলেন, ‘সেই সময় আমরা ৯০ শতাংশ নাটকের শুটিং বিদেশে করেছি।’ তাঁর পরিচালনায় অর্ধশতাধিক নাটকের শুটিং হয়েছে দেশের বাইরে। দীর্ঘদিন পর আবারও তিনি পরিকল্পনা করছেন দেশের বাইরে শুটিংয়ের। এই নির্মাতা বলেন, ‘সেই সময়ে বিদেশে দৃশ্যায়ন করা নাটকের শুটিংয়ের অনেক চাহিদা ছিল। দর্শকদের বিভিন্ন লোকেশনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য টিম নিয়ে বিদেশে ছুটতাম। কিন্তু এখন বড় সমস্যা বাজেট। বিদেশে ১৫টির বেশি লোকেশনে শুটিং করতাম। এখন তো বাইরে গিয়ে হোটেল থেকেই কেউ খুব একটা বের হতে চান না। তা ছাড়া আগে যে দেশগুলোতে বিনা মূল্যে শুটিংয়ের অনুমতি পেয়েছি, তারা এখন বড় অঙ্কের অর্থ ধার্য করেছে। কিন্তু দর্শকদের জন্য আলাদা কিছু করার টান এখনো রয়েছে।’

 

বিদেশে শুটিং করা এসব নাটক বেশির ভাগ প্রযোজনা করতেন আলী বসির, মনোয়ার পাঠান, সাজু মুনতাসির, বোরহানউদ্দীনসহ আরও কয়েকজন। তাঁদের অনেকে মনে করেন, এখন অভিনয়শিল্পীরা ঢাকার বাইরেই শুটিং করতে চান না। সেখানে বিদেশে শুটিংয়ের কথা বললেই নানা শর্ত দেন। কেউ কেউ বাড়তি পারিশ্রমিক চেয়ে বসেন। মনোয়ার পাঠান বলেন, ‘এখন আর্টিস্টদের সময়ের অনেক দাম। আসা–যাওয়ায় অনেকটা সময় চলে যায়। এই সময় তাঁদের নেই। আগে পাতায়া, ব্যাংকক—এসব লোকেশনের প্রতি দর্শকদের আকর্ষণ ছিল। এখন সব লোকেশন ইউটিউবেই দেখা যায়।

Link copied!