মেসিকে আটকানোর কৌশলে জয়ের ছক আঁকছেন ফন গাল

ক্রীড়া ডেস্ক

ডিসেম্বর ৮, ২০২২, ০৯:১৩ পিএম

মেসিকে আটকানোর কৌশলে জয়ের ছক আঁকছেন ফন গাল

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা শেষবার সরাসরি জিতেছিল ৪৪ বছর আগে, ১৯৭৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে বুয়েনেস এইরেসে। তাই বলা যায় আর্জেন্টিনার জন্য এই ম্যাচ বেশ কঠিনই পরিস্থিতি নিয়ে আসছে। তবে খেলার হিসাব করলে কাতার বিশ্বকাপে ডাচদের জন্য এখন পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে কঠিন ম্যাচ বলা যায়। আর এই ম্যাচে তাঁদের চিন্তা মেসিকে ঘিরেই। 

মেসি একাই তো ম্যাচ জিতিয়ে দিতে পারেন, এটাই মাথায় রাখছে ডাচরা। নিজেদের রক্ষণে মেসি ঢুকে পড়লে তাঁকে আটকানো বেশ মুশকিল। তাই মেসিকে নিচ থেকেই থামিয়ে দেওয়ার ছক কাটছেন ডাচরা।

জয়ের জন্য নেদারল্যান্ডসের কোচ লুই ফন গালের আঁকা ছকে মেসিকে থামানোর বিষয়টা যে আলাদা করেই থাকবে, তা বলে দেওয়াই যায়। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার মধ্যমণি হয়েই আছেন মেসি। মেক্সিকো, পোল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া—তিন ম্যাচেই মেসি ছিলেন দুর্দান্ত। মেক্সিকো ও অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে নিজে গোল করেছেন, গোল করিয়েছেনও।

২০১৪ বিশ্বকাপেও নেদারল্যান্ডসের কোচ ফন গালই ছিলেন। তিনি সেমিফাইনালে সেটিই করেছিলেন। মেসিকে নিচে আটকে রেখেছিলেন। তাঁর পেছনে লাগিয়েছিলেন নাইজেল ডি ইয়ংকে এবং সেটি কার্যকর হয়েছিল। গোটা ম্যাচেই নিষ্প্রভ ছিলেন মেসি। ১২০ মিনিটে মেসি ডাচদের গোলে মাত্র একবার শট নিতে পেরেছিলেন। পরে টাইব্রেকার জিতে ফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। কালকের ম্যাচে নাইজেল ডি ইয়ংয়ের সেই কাজটা খুব সম্ভবত করতে হবে মার্টেন ডি রুন।

মেসিকে পাহাড়া দিয়ে রাখার পাশাপাশি তাঁর পাসিং লাইনগুলোও বন্ধ করে দিতে হবে। এটা করতে হবে নিচে থেকেই। তিনি মার্কারকে ছিটকে বেরিয়ে যেতে পারেন অবলীলায়। ডাচ রক্ষণকে সেই মুহূর্তের জন্য সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকতে হবে। সেই দায়িত্ব ভার্জিল ফন ডাইকের। এ ক্ষেত্রে তাঁর আদর্শ রন ভ্লার। ব্রাজিল বিশ্বকাপে ভ্লারের ট্যাকলগুলো নিশ্চয়ই ভুলে যাননি মেসি।

কোনো হইচই ছাড়াই শেষ আটে নেদারল্যান্ডস। প্রথম ম্যাচে সেনেগালকে ২-০ গোলে হারানোর পর দ্বিতীয় ম্যাচে ইকুয়েডরের সঙ্গে ১-১ ড্র করে। শেষ ম্যাচে কাতারের বিপক্ষে ২-০ গোলের জয়ে শেষ ষোলোয় ওঠে ডাচরা। শেষ ষোলোতে যুক্তরাষ্ট্রকে ৩-১ গোলে হারিয়ে এখন কোয়ার্টার ফাইনালে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে  তিনবারের বিশ্বকাপ রানার্সআপরা। 

অন্যদিকে প্রথম ম্যাচেই সৌদি আরবের কাছে ২-১ গোলে হেরে বিশ্বকাপ যাত্রা অনিশ্চয়তার মধ্যেই ফেলে দিয়েছিল আর্জেন্টিনা। গ্রুপপর্বের পরের দুই ম্যাচে মেক্সিকো ও পোল্যান্ড দুই দলের বিপক্ষেই ২-০ গোলে জিতে গ্রুপ শীর্ষে থেকে দ্বিতীয় রাউন্ডে যায় তারা। শেষ ষোলোতে অস্ট্রেলিয়াও বাধা হয়নি মেসিদের। হেরেছে ২-১ গোলে। 

আর্জেন্টিনার সঙ্গে বিশ্বকাপে পাঁচবার মাঠে নেমে দুবার জিতেছে নেদারল্যান্ডস। আর্জেন্টিনা জিতেছে একবার। ড্র হয়েছে দুটি ম্যাচ। এই ড্র হওয়া দুটি ম্যাচের একটি ছিল ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। যেটিতে আর্জেন্টিনা টাইব্রেকারে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে জায়গা করে নিয়েছিল ফাইনালে।

১৯৭৪ সালে পশ্চিম জার্মানির বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডস ৪-০ গোলে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনাকে। ১৯৭৮ সালের ম্যাচটি ছিল আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপের ফাইনাল। মারিও কেম্পেসের জাদুতে সে ম্যাচে আর্জেন্টিনা ৩-১ গোলে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিল।

এর পরের লড়াইটি ১৯৯৮ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল। ডেনিস বার্গক্যাম্পের সেই জাদুকরি গোলের ম্যাচ। ডাচরা জিতেছিল ২-১ গোলে। ২০০৬ সালে জার্মানি বিশ্বকাপে গোলশূন্য ড্রয়ের পর ২০১৪-বিশ্বকাপের সেমিফাইনালও নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে ছিল ০-০। এরপর টাইব্রেকারে সেদিন ডাচদের ভাগ্য-বিপর্যয় ঘটে। 

Link copied!