শক্তিশালী কন্টেন্ট বাঁচাবে স্ট্যান্ড আপ কমেডি : রিমন

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ৬, ২০২১, ০৯:১০ পিএম

শক্তিশালী কন্টেন্ট বাঁচাবে স্ট্যান্ড আপ কমেডি : রিমন

নজর কাড়া পারফর্মেন্সে মীরাক্কেল-১০ এর মঞ্চ মাতাচ্ছেন বাংলাদেশী স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান আবিদুর ইসলাম রিমন। জি-বাংলার জনপ্রিয় রিয়ালিটি শো "মীরাক্কেল আক্কেল চ্যালেঞ্জার" এর মঞ্চে তিনবার রসিকরত্ন এবং প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে পারফর্মা অফ দ্য ডে জিতে নিয়েছেন আবিদ। স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান আবিদুল ইসলাম রিমনের বাড়ি সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের নয়াগ্রাম গ্রামে। তিনি হাফিজ ফয়জুর রহমান ও হাজেরা বেগম দম্পতির পুত্র। সিলেটের মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি থেকে মার্কেটিং বিভাগে গ্রেজ্যুয়েশন সম্পন্ন করেছেন রিমন। আবিদুর ইসলাম রিমন তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স এবং স্ট্যান্ড-আপ কমেডি নিয়ে তার ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন দ্য রিপোর্টের সাথে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছে তুহিন কান্তি দাস

 

দ্য রিপোর্টঃ মীরাক্কেল-১০ এ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন, কেমন লাগছে?

রিমনঃ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করা আমার কাছে বিশাল ব্যাপার মনে হয়। মীরাক্কেলে -১০ এর সৌজন্যে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার সেই বিরল সৌভাগ্য আমার হয়েছে। অনুভূতি অসাধারণ। স্পেশালি জি বাংলা যেদিন মীরাক্কেলের প্রমোতে আমার পরিচয় বাংলাদেশের রিমন হিসেবে প্রচার করেছিলো, সেদিন সেটা দেখে চোখে জল এসে গেছিলো। বাংলাদেশের রিমন ডাকটা শুনে আমি গর্বিত হই।

 

দ্য রিপোর্টঃ মীরাক্কেল-১০ এ আপনার পারফরমেন্সের পরিস্থিতি কি?

রিমনঃ স্বপ্নের মঞ্চে এখন অব্দি মোটামুটি ভালই করতেছি। টানা তিনটে এপিসোডে পেয়েছি মীরাক্কেলের রসিকরত্ন সম্মান। সেই সাথে হয়েছি পারফর্মার অব দ্য ডে। তবে এখনো প্রতিনিয়ত শিখছি। অনেক তৈরি হতে হবে।

 

দ্য রিপোর্টঃ কমেডিয়ান হিসেবে যাত্রা শুরু কবে করলেন? 

রিমনঃ মীরাক্কেস-৬ আমাকে স্ট্যান্ড কমেডিয়ান হওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছিলো। কিন্তু সাহস করতে পারতেছিলাম না। কারণ আমি যেই শহরের ছেলে অর্থাৎ সিলেটের কেউ এর আগে কখনো স্ট্যন্ড-আপ কমেডি করে বড় কোন মঞ্চে যেতে পারেনি। সেইজন্য স্বপ্নটা মনে রেখেই জাতীয় দৈনিক পত্রিকা গুলোতে নিয়মিত রম্য লেখা শুরু করলাম। আর সেই সুবাধে পরিচয় হয় মীরাক্কেল-৬ চ্যাম্পিয়ন আবু হেনা রনি ভাইয়ের সাথে। একজন স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ান হিসেবে তৈরি হতে তিনি আমাকে পরামর্শ দিলেন। বললেন, তুমি যেহেতু রম্য লিখতে পারো, এখন শুধু পরিশ্রম করো। সাফল্য আসবেই। সেই থেকেই শুরু।

 Mir

দ্য রিপোর্টঃ বাংলাদেশের স্ট্যান্ড আপ কমেডির বর্তমান অবস্থা নিয়ে আপনার ভাবনা কি?

রিমনঃ বাংলাদেশের স্ট্যান্ড-আপ কমেডির অনেক সীমাবদ্ধতা আছে।তবে আসল সীমাবদ্ধতার কারণটা অবশ্য বলা যাবেনা। কারণ আমার  নিজের সীমাবদ্ধতা আছে। তবে একটা কারণ না বললে নয়,আমাদের পারফর্মার অনেক আছে কিন্তু উপযুক্ত প্লাটফর্ম নাই। সেইজন্য অনেক প্রতিভাবান স্টান্ড আপ কমেডিয়ান হারিয়ে যাচ্ছে। তবে সুখবর হলো, এখন অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিকভাবে ওটিটি প্লাটফর্ম এবং ইউটিউবে স্ট্যান্ড-আপ কমেডি শো করছে। অনেকে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে নতুন নতুন কনটেন্ট তৈরি হবে এবং বাংলা স্ট্যন্ড-আপ কমেডি সম্মৃদ্ধ হবে বলে আমি আশাবাদী।

 

দ্য রিপোর্টঃ আপনার আদর্শ হিসেবে অনুসরণীয় কেউ আছেন?

রিমনঃ স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান হিসেবে আমার আদর্শ ঐ ভাবে কেউ নেই। ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি স্ট্যান্ড-আপ কমেডি শুধু বিনোদন নয়। বর্তমান সময়ে এটি একটি প্রতিবাদের ভাষা। একেকজনের আদর্শ একেক রকম। তবে আমি দেশ- বিদেশের বেশ কয়েকজন স্ট্যান্ড আপ কমেডিয়ানকে ব্যাক্তিগত ভাবে অনেক পছন্দ করি। তাঁদের থেকে নিয়মিত শিখি এবং অনুপ্রাণিত হই।

 

দ্য রিপোর্টঃ নিজেকে স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান হিসেবে কোথায় দেখতে চান?

রিমনঃ স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান হিসেবে নিজেকে আমি কোথাও দেখতে চাই না। আসলে ব্যাপারটা নিয়ে ঐ ভাবে কখনো ভাবি না। তবে স্বপ্ন দেখি, একদিন আমি সবার মন ভালো করার কারণ হবো। 

 

দ্য রিপোর্টঃ বাংলাদেশে স্ট্যান্ড-আপ শিল্প কে জনপ্রিয় করতে আপনার কোন বার্তা?

রিমনঃ বাংলাদেশ কমেডি ক্লাব নামে একটা সংগঠন আছে। যারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে স্ট্যান্ড-আপ কমেডিকে জনপ্রিয় করতে। এটা অসাধারণ উদ্দ্যোগ। তবে পাশাপাশি আমি মন করি, স্টান্ড-আপ কমেডি শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে পারে শক্তিশালী কনটেন্ট। তবুও সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়ে প্রচুর পরিমাণ বিষয়ভিত্তিক  নতুন নতুন কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। দর্শক কী চায়? সেই দিক বিবেচনা করে কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। এটা ধ্রুব সত্য, স্ট্যান্ড-আপ কমেডি শিল্প জনপ্রিয় করতে নতুন কনটেন্ট তৈরির কোন বিকল্প নেই।

 

দ্য রিপোর্টঃ একটা ছোট্ট শিশু কেন স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান হতে চাইবে?

রিমনঃ কমার্শিয়াল দিক বিবেচনা করলে একজন শিশুর কখনোই স্টান্ড-আপ কমেডিয়ান হওয়া উচিৎ নয়। এতে অনিশ্চিত ভবিষ্যত। তবে শিশুদের মনতো অনেক পবিত্র, সেই পবিত্র মন দিয়ে যদি ভাবে আমি আমার আশেপাশের মানুষদের আনন্দে রাখবো। বড় হয়ে সমাজের অসঙ্গতি ব্যাঙ্গ বিদ্রুপের মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরবো। তাহলে আমার বিশ্বাস শিশুরা স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান হতে চাইবে।

Link copied!