শিক্ষা উপমন্ত্রীর নির্দেশে চবিতে ছাত্রলীগের অবরোধ স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগস্ট ২, ২০২২, ০৮:০৬ পিএম

শিক্ষা উপমন্ত্রীর নির্দেশে চবিতে ছাত্রলীগের অবরোধ স্থগিত

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ফেসবুকে আন্দোলন প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়ে একটি বার্তা দিয়েছেন। এরপর অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন দুদিন ধরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে রাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আন্দোলনরত ছাত্রলীগের কর্মী মোহম্মদ দেলোয়ার।

তিনি বলেন, আমরা চলমান আন্দোলন স্থগিত করেছি। আমাদের একমাত্র অভিভাবক মাননীয় শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ভাইয়ের আশ্বাস পেয়েছি। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির দিকে যাব এখন।

এর আগে সোমবার বিকেল ৩টায় পাঁচ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধের ডাক দেন বিজয় গ্রুপের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।

অবরোধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন পুল থেকে শহরের উদ্দেশে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। পাশাপাশি শাটল ট্রেন চলাচলও বন্ধ রয়েছে।

এর আগে রবিবার মধ্যরাতে শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তবে কমিটি ঘোষণার পরপর পদবাণিজ্য ও অছাত্রদের রাখার অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন পদবঞ্চিতরা। পরে তাঁরা কমিটি পুনর্বিন্যাসের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেন।

আন্দোলনের প্রেক্ষাপট

দীর্ঘ তিন বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ। রবিবার দিবাগত মধ্যরাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে। কিন্তু কমিটি ঘোষণা করার পর থেকেই ক্যাম্পাসজুড়ে পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যায়। অছাত্রদের কমিটিতে রাখার অভিযোগ এনে ক্যাম্পাসের মূল ফটকে তালা দিয়ে অবরোধ করে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা।

২০১৯ সালে ১৪ জুলাই রেজাউল হককে সভাপতি ও ইকবাল হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে চবি শাখা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল।

চবি শাখা ছাত্রলীগের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষে বিভক্ত। একটি পক্ষ চট্টগ্রাম সিটির সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী। আরেকটি পক্ষ সিটির সাবেক মেয়র ও চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসানের অনুসারী। আর নাছিরের অনুসারী সাধারণ সম্পাদক ইকবাল।

শাখা ছাত্রলীগের দুটি পক্ষের মধ্যে রয়েছে ১১টি উপপক্ষ। এগুলোর মধ্যে বিজয় ও চুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি) মহিবুলের অনুসারী। বাকি ৯টি উপপক্ষ—ভার্সিটি এক্সপ্রেস, কনকর্ড, বাংলার মুখ, সিক্সটি নাইন, একাকার, রেড সিগন্যাল, উল্কা, এপিটাফ ও স্বাধীনতা নাছিরের অনুসারী।

রবিবার রাত দুইটায় ক্যাম্পাসের মূল ফটকে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন পদবঞ্চিতরা। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের বিজয় গ্রুপের অনুসারীদের সদ্য যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়া মো. ইলিয়াসের বিরুদ্ধে ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে স্লোগান দিতে দেখা যায়। আন্দোলনকারীদের মতে ইলিয়াসের মদদেই তাঁরা পদ বঞ্চিত হয়েছেন।

মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে প্রায় শতাধিক নেতা–কর্মী বিক্ষোভে অংশ নেন। এ সময় তাঁরা ‘অবৈধ কমিটি, মানিনা মানব না’ ও ‘টাকার বিনিময়ে কমিটি মানিনা মানব না’ বলে স্লোগান দেন।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য এ কমিটির অনুমোদন দেন।

Link copied!