শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় যে ব্যাপক পরিবর্তন চাইছি তার জন্য শিক্ষক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা পরিবর্তন বা সংস্কারের কথা নয় বরং রূপান্তরের কথা বলছি। এই রূপান্তরের মূল হাতিয়ার হচ্ছে শিক্ষক। তাদের হাত ধরেই শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন আসবে।
শনিবার (৫ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মার্কেটিং অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (ডিইউএমএএ) উদ্যোগে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের ৫২ জন শিক্ষার্থীকে ‘এমজিআই-মার্কেটিং অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন স্কলারশিপ’ প্রদান করা হয়। পাশাপাশি শিক্ষকতার ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের শিক্ষকদের এমন শিক্ষক হতে হবে যার থেকে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রেরণা পান, শিক্ষার্থীদের মন বোঝেন, যার থেকে শিক্ষার্থীরা আলোকিত পথের দিশা দেন, যাকে দেখে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হয়।
তিনি আরও বলেন, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী হওয়াও একটা গর্বের বিষয়। এখন সবকিছুতেই মার্কেটিংয়ের প্রয়োজন হয়। এটি এমন একটি বিষয় যা গোটা জগতকে চালাচ্ছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যখন সবাইকে উদ্যোক্তা হওয়ার কথা বলছেন সেখানে অধ্যাপক মীজানুর রহমানের মতো শিক্ষকরা ছাত্রদের হাতে কলমে উদ্যোক্তা হওয়ার মন্ত্র নিয়মিত শিখিয়ে যাচ্ছেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আজকে আমাদের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে পড়াশোনার জন্য উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। একইসাথে একজন শিক্ষাগুরুকে সম্মাননা প্রদান করা হচ্ছে। মীজানুর রহমান যিনি তার কাজের মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছেন। আমি প্রত্যাশা করব আমাদের শিক্ষার্থীরা যারা বৃত্তি পেলো, এই বৃত্তির যে প্রত্যয় সেটি তাদের জীবনে প্রেরণা হয়ে থাকবে। আগামী দিনে পথ চলার ক্ষেত্রে তাদের এই প্রত্যয় তাদের পথচলায় সাহস জোগাবে একজন পরিপূর্ণ মানুষ হওয়ার জন্য।
তিনি আরও বলেন, এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্দিক থেকে উন্মুক্ত। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল আছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কাঁটাও আছে৷ তোমাদের অভিভাবকরা তোমাদের পাশে নেই। তোমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যেখানে ফুলের সৌরভ (ভালো জিনিস) পাবে সেটিই তোমরা বেছে নিবে এবং তোমাদের জীবনকে মহিমান্বিত করবে।
সম্মাননাপ্রাপ্ত অধ্যাপক মীজানুর রহমান নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, আমি শিক্ষক। এটা আমি পছন্দ করেই করি। আমার শিক্ষকতার জীবনে আমি ছাত্র-ছাত্রীদের সবকিছুর প্রেক্ষাপট ধরে ধরে শিখাতাম যাতে খণ্ডিত জ্ঞান শিক্ষার্থীরা অর্জন না করেন। এতে তারা একটা বিষয় সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা পেত। আমি যেখানেই যাই আমি এই মার্কেটিং বিভাগেই ফিরে আসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি, কারণ এটাই আমার ভিত্তি। আমি বিভাগের প্রতি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সকলের দোয়াপ্রার্থী।
ডিইউএমএএর সহসভাপতি সালাউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে অতিথিদের বক্তব্যের পর কেক কেটে অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের শিক্ষকতা জীবনের ৪০ বছরপূর্তি উদযাপন করা হয়। পরে তাকে নিয়ে লেখা ‘শিক্ষকতার ৪০ বছর’ বইয়ের মোড়কও উন্মোচন করা হয়। এরপর বিকালে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও করেন তারা।