বলিউড সুপারস্টার সালমান খানকে হত্যা করার জন্য নির্দেশ পাওয়া পাওয়া এক কিশোরসহ দুই সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া ওই কিশোর গত ৯ মে ভারতের মোহালিতে পাঞ্জাব পুলিশের গোয়েন্দা সদর দপ্তরে গ্রেনেড হামলার ঘটনায়ও অভিযুক্ত। গ্রেপ্তারকৃতদের প্রকাশ করা তথ্যগুলো যাচাই করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পাঞ্জাব পুলিশ সদরদপ্তরে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে ওই কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদের বাসিন্দা ওই কিশোরকে পুলিশকে জানায়, সালমান খানকে হত্যার হুমকি দেওয়ার সঙ্গেও তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন।
ওই কিশোর ছাড়াও গত ৪ আগস্ট হরিয়ানায় একটি ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) উদ্ধারের ঘটনায় আরশদীপ সিং নামে অপর একজনকে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল।
পুলিশের বরাত দিয়ে ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, লরেন্স বিষ্ণোই এবং জগ্গু ভগবানপুরিয়া সিন্ডিকেট দীপক সুরকপুর (বর্তমানে পলাতক) এবং মনু ডাগরসহ (বর্তমানে কারাগারে) ওই কিশোরকে অভিনেতা সালমান খানকে ‘নির্মূল’ করার দায়িত্ব দিয়েছিল।
দিল্লি পুলিশের এক সিনিয়র কর্মকর্তা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানান, তদন্তে বের হয়ে এসেছে পাঞ্জাবের গোয়েন্দা পুলিশ সদরদপ্তরে গ্রেনেড হামলাটি পাকিস্তানের ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই) এবং স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দ্বারা সমর্থিত বাব্বর খালসা ইন্টারন্যাশনালের (বিকেআই) পরিকল্পনায় হয়েছিল। ওই হামলাটি আইএসআই সাথে সম্পৃক্ত হরবিন্দর সিং ওরফে রিন্দা সংঘটিত করেছিল বলেও তিনি জানান।
পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, আরেকজন পলাতক কানাডাভিত্তিক গ্যাংস্টার লখবীর সিং লান্ডাও রিন্দার সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন।
তিনি আরও জানান,ওই কিশোর ৫ এপ্রিল মহারাষ্ট্রের নান্দেদে ব্যবসায়ী সঞ্জয় বিয়ানি হত্যা এবং গত বছরের ৪ আগস্ট অমৃতসরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বাইরে গ্যাংস্টার রানা কান্দোওয়ালিয়াকে হত্যার ঘটনায়ও ওয়ান্টেড ছিলেন। লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের প্রধান শুটার হিসেবে পরিচিত ছিলেন কান্দোওয়ালিয়া।
পুলিশ জানায়, পাঞ্জাবের বাসিন্দা আরশদীপ সিং কুরুক্ষেত্রে আইইডি পুনরুদ্ধারের মামলায় এবং ওই এলাকায় মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র সরবরাহ সংক্রান্ত মামলায় ওয়ান্টেড ছিলেন।
পুলিশ গ্যাংস্টারদের একটি স্থানীয় নেটওয়ার্কের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছে। এই নেটওয়ার্কটি হামলাকারীদের নানাভাবে সহায়তা দিয়েছে। পুলিশের বিশেষ কমিশনার (স্পেশাল সেল) এইচজিএস ধলিওয়াল বলেন, তদন্তের সময় পুলিশ গুজরাটের জামনগর থেকে আরশদীপ সিং এবং ওই কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ জানায়, কিশোর ও আরশদীপ সিংকে গ্রেপ্তার করার সঙ্গে সঙ্গে রিন্ডা এবং লান্ডার মধ্যে সম্পর্কের বিষয়টি উন্মোচিত হয়েছে। কিশোরটিকে পরিচালনা করছিলেন রিন্দা এবং আরশদীপ পরিচালনা করছিলেন লান্ডা।
পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হওয়া কিশোর জানায়, লরেন্স বিষ্ণোই তাকে, দীপক সুরখপুর ও মনু ডাগরকে অভিনেতা সালমান খানকে নির্মূল করার কাজ দিয়েছিলেন। পরে সালমান খানের পরিবর্তে কান্দোয়ালিয়াকে তাদের প্রাথমিক টার্গেট বানানো হয়েছিল।
মোহালিতে পাঞ্জাব পুলিশের গোয়েন্দা সদর দপ্তরে রকেট চালিত গ্রেনেড ছোড়ার পর থেকে রিন্দা বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের কাছে টাকা পাঠাচ্ছিল বলে পুলিশের দাবি। সঞ্জয় বয়ানিকে হত্যার জন্য তারা ৯ লাখ রুপি পেয়েছে বলেও তারা জানায়।