ঢালিউডের আলোচিত অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্চ ১৮, ২০২৩, ০৬:২৩ পিএম

ঢালিউডের আলোচিত অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি গ্রেফতার

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় ঢালিউডের আলোচিত অভিনেত্রী মাহিয়া মাহিকে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ।

শনিবার সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে হযরত শাহজালাল (রহঃ) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) আবু তোরাব মো. শামসুর রহমান বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

স্বামীর সাথে ওমরাহ পালন শেষে শনিবার দেশে ফেরার পথে মাহিয়া মাহি গ্রেফতার হলেন। মাহির সাতে তার স্বামীর আসার কথা থাকলেও তিনি দেশে ফিরেন নি। শুক্রবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে এক ফেসবুক লাইভে দেশে ফেরার পর গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন মহিয়া মাহি।

এর আগে, শুক্রবার রাতে ঢালিউডের আলোচিত অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি ও তার স্বামী রাকিব সরকারের বিরুদ্ধে গাজীপুরে ২টি মামলা দায়ের করা হয়। ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের(জিএমপি) পক্ষে গতকাল শুক্রবার (১৭ মার্চ) রাতে বাসন থানায় এসআই রোকন মিয়া বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।  অন্যটি জমি দখলের অভিযোগে স্থানীয়  এক বাসিন্দা করেন।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৭ মার্চ) ভোরে ফেসবুকে এসে নায়িকা জানান, গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের পূর্ব পাশের একটি বিতর্কিত জমি এবং গাড়ির শোরুমের জায়গা টাকার বিনিময়ে গাজিপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার দখল করেছেন।

গাজীপুর পুলিশ কমিশনারকে নিয়ে অভিযোগ করে ফেসবুক লাইভে মাহিয়া মাহি বলেন, আমাদের একটি গাড়ির শোরুম আছে— ভাওয়াল কলেজের পাশে সনিরাজ কার প্লেস। এই শোরুম নিয়ে অনেক দিন ধরে অনেকে প্রবলেম করছে। এখানে একটি লোক আছে— ইসমাইল হোসেন ওরফে লাদেন। উনি গাজীপুর কমিশনারকে... গাজীপুরের কমিশনার অনেক দিন ধরেই আমার হাজব্যান্ড ও তার ফ্যামিলি, মানে এখানে সুলতান ভাই আছেন, ফয়সাল ভাই আছেন, সবার পেছনে লেগেছেন। সুলতান সরকারের ভাই হিসেবে রকিব সরকারের বিরুদ্ধে লেগেছেন। তো, তিনি দেড় কোটি টাকা ঘুষ খেয়ে আমাদের শোরুম দখল করে দেওয়ার জন্য তার অতিরিক্ত কমিশনার দেলোয়ারের মাধ্যমে টাকা নিয়েছেন, আমাদের শোরুমটি দখল করে দেবেন এই মর্মে। 

এ জন্য পুলিশ কমিশনারের কাছেও গিয়েছেন বলে জানিয়ে মাহি বলেন, তিনি বারবার জমির কাগজপত্র চেয়েছেন। কিন্তু পুলিশ কেন জমির কাগজপত্র নিয়ে ডিল করবে, এটি পুলিশের কাজ না। জায়গা-জমির বিষয়টি হবে আদালতের মাধ্যমে। আদালত রায় দেবেন।

মাহিয়া মাহি আরও বলেন, “আমরা থানায় জিডি করতে গেলে ওসি প্রথম দিন জিডি নেননি। আমাদের একটি ফেক জিডির কাগজ দিয়েছেন। জিডি না নেওয়ায় পুলিশ কমিশনার অ্যাকটিং (অভিনয়) করে ওসিকে কিছুদিনের জন্য প্রত্যাহার করেন। এখন আবার ক্লোজড উঠিয়ে নিয়েছেন। আমি লাইভ করছি, আগামীকাল (শনিবার) আমি দেশে আসব। বাংলাদেশে এসে আমি এটি নিয়ে তুলকালাম করে ফেলব।”

১২ মিনিটের ফেসবুক লাইভে পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ এনে মাহি বলেন, ‘দখলকারীরা দা-চাপাতি নিয়ে ঘটনাস্থলে আছে। কিন্তু কমিশনারকে বারবার ফোন দিলেও তিনি কেটে দিচ্ছেন। এ সময় তিনি তার অনুসারীদের ঘটনাস্থলে গিয়ে দখলকারী লোকজনের ভিডিও করতে নির্দেশ দেন।’

তবে নায়িকার অভিযোগ অস্বীকার করে জিএমপি কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, “এই অভিযোগ ডাহা মিথ্যা। দুপক্ষের দ্বন্দ্বে পুলিশকে জড়ানোর কিছু নেই। একটি শ্রেণি দীর্ঘদিন ধরেই এই এলাকায় চাঁদাবাজি, দখলদার ও মাদক ব্যবসায় জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে জিএমপি। আর তাই তারা একজন সেলিব্রেটিকে পুঁজি করে আমাদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ বানোয়াট অভিযোগ এনেছে। এ ঘটনায় আমি কিংবা গাজীপুর মহানগর পুলিশের সংশ্লিষ্টতার কোনো সুযোগ নেই।”

Link copied!