ছবি: সংগৃহীত
“বিদআত” আখ্যা দিয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলায় প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো একটি বটগাছ কেটে ফেলেছেন স্থানীয় ইমাম ও আলেমরা।
সোমবার, ৫ মে সকাল ৯টার দিকে শিরখাড়া ইউনিয়নের আলম মীরের কান্দি এলাকায় গিয়ে তারা গাছ কাটা শুরু করেন তারা।
ডালপালা থেকে শুরু করে একে একে গাছটির প্রায় ৭৫ শতাংশ কেটে ফেলা হয়। এই ঘটনার একটি ভিডিও সোমবার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই এ ঘটনার সমালোচনা করছেন। এছাড়া অনেক স্থানীয় বাসিন্দাও এই গাছটি কাটা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিরখাড়া ইউনিয়নের আলম মীরের কান্দি এলাকায় কুমার নদীর পাড়ে অবস্থিত এই বটগাছটি। অনেকেই গাছটিকে “অলৌকিক ক্ষমতার” অধিকারী বলে বিশ্বাস করতেন এবং গাছের নিচে মোমবাতি জ্বালিয়ে মানত করতেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে শিরখাড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, “বটগাছটি কেটেছেন স্থানীয় আলেমরা। তবে কার নেতৃত্বে এই কাজ করা হয়েছে সে তথ্য আমি পাইনি। অনেক স্থানীয় বাসিন্দাই মনে করছেন গাছটি কাটা ঠিক হয়নি। তবে তারা ভয়ে কথা বলছেন না।”
একই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজম খান বলেন, “বটগাছটির নিচে কিছু মানুষ ‘আচার’ পালন করতেন। এই বিষয়টিকে আলেমরা আপত্তিকর মনে করেন। ইসলামে এ ধরনের বিধি-বিধান না থাকার কারণেই গাছটি কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যার কারণে সবাই একত্রিত হয়ে বটগাছটি কাটা শুরু করেন। তারা কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন।”
তিনি আরও বলেন, “গাছ কাটায় সব গ্রাম থেকেই লোকজন উপস্থিত ছিল, তাদের মধ্যে তার এলাকার মানুষও ছিল। কাদের ব্যাপারী, দাদন হুজুর, কাবিল বেপারী, ইব্রাহিম হুজুরসহ স্থানীয় মসজিদের ইমামও ছিলেন।”
গাছ কাটা সময় উপস্থিত ছিলেন শ্রী নদী গ্রামে বাসিন্দা মো. দাদন। গাছটি কাটায় প্রায় ২০০ লোক অংশ নেয় জানিয়ে তিনি বলেন, “মানুষ ওই বটগাছের নিচে পূজা করত বলে আলেমরা সেটা মেনে নিতে পারেননি। এ কারণেই গাছটি কেটে ফেলা হয়েছে।”
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, “আমি বিষয়টি রাতে (সোমবার) জানতে পেরেছি। ঘটনার সঙ্গে যারা সংশ্লিষ্ট, তাদেরকে ডাকা হয়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে আমি পরবর্তীতে এ বিষয়টি আপনাদেরকে জানাতে পারব।”