পাহাড়ে লেজারের প্রতিধ্বনি শোনাল পারসেভ্যারেন্স

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

মার্চ ১৫, ২০২১, ১০:৫৩ পিএম

পাহাড়ে  লেজারের প্রতিধ্বনি শোনাল পারসেভ্যারেন্স

মানুষের কান শুনল মঙ্গল থেকে পাঠানো শব্দ। শনশন করে বাতাস বইবার শব্দ আগেই শুনিয়েছে পার্সি। এবার শোনাল পাহাড়ের গায়ে লেসার রশ্মির ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসার শব্দ। রুক্ষ-সূক্ষ পাহাড়ের গায়ে খট খট করে রশ্মির প্রতিফলনে সে শব্দও বিচিত্র। কয়েক সেকেন্ডের সেই অডিও ক্লিপ শুনিয়েছে নাসা।

জেজেরো ক্রেটার থেকে চারপাশটা এখন ঘুরে দেখছে পারসিভিয়ারেন্স। একের পর এক ছবি তুলছে। ভিডিও করছে। শব্দ রেকর্ড করছে। মঙ্গলে পাখির কিচিরমিচির, নদীর কুলকুল শব্দ নেই, মৃত নদীর ফসিলের ওপর প্রাচীন গহ্বরের গায়ে ধাক্কা লেগে বয়ে যাওয়া হাওয়ার শব্দই এখন নাসার সম্পদ। সে শব্দের কম্পন পরীক্ষা করে প্রাণের উৎস খোঁজার চেষ্টা করছে নাসা।

ল্যান্ডার মঙ্গলের মাটিতে ল্যান্ড করার সময় ধুলো ওড়ানোর শব্দ ধরেছে রোভার। ধুলোর ঝড়ের শনশন শব্দও রেকর্ড করা হয়েছে। নীচু স্বরে বাতাস বয়ে যাওয়ার শব্দ পৃথিবীতে পাঠিয়ে দিয়েছে পারসিভিয়ারেন্স। ক্রেটারের পাশে ২৩ ফুট উচ্চতার পাহাড়ে লেসার রশ্মি ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসার সময় যে শব্দ হচ্ছে তাও রয়েছে নাসার সংগ্রহে। পারসিভিয়ারেন্স এখন পাহাড়ের শব্দ শুনছে। মঙ্গলের গিরিখাত, উপত্যকা, পাহাড়ি খাঁজের ধ্বনি-প্রতিধ্বনি রেকর্ড করছে।

লালমাটিতে চাকার দাগ ফেলে ঘোরাফেরা করছে রোভার। রুক্ষ পাথুরে মাটিতে কখনও সোজা পথে গেছে, আবার কখনও পাথুরে খাঁজ বেয়ে ১৫০ ডিগ্রি বাক নিয়ে এদিক ওদিক ঘুরছে। আবার আড়াই মিটারের মতো পিছিয়েও এসেছে। কোনও যান্ত্রিক গলদ হয়নি। আগুপিছু করে, ডানে-বায়ে বাক নিয়ে মঙ্গলের মাটিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

নাসার জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরির গবেষক অ্যানাইস জারিফিয়ান বলেছেন, নাসার ‘মিস কৌতুহল’ বা কিউরিওসিটিও এত দ্রুত চাকা গড়াতে পারেনি। যা পারসিভিয়ারেন্স পারছে। মঙ্গলের এক দিনে (মার্সিয়ান ডে) প্রায় ২০০ মিটার ড্রাইভ করার পরিকল্পনা আছে রোভারের। পৃথিবীর দিন-রাতের আয়ু যতটা, মঙ্গলের দিন-রাতের আয়ুও প্রায় ততটাই। পৃথিবী নিজের কক্ষপথে লাট্টুর মতো ঘুরতে যে সময় নেয় (২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট), তার চেয়ে সামান্য কিছুটা বেশি সময় নেয় লাল গ্রহ। ঘণ্টার হিসেবে তাই মঙ্গলের একটি দিন (দিন ও রাত মিলে) আমাদের চেয়ে সামান্য একটু বড়। তার দৈর্ঘ্য ২৪ ঘণ্টা ৩৭ মিনিট থেকে ২৪ ঘণ্টা ৩৯ মিনিটের মধ্যে। একে বলে ‘সল’। এখন এই সময় ধরেই লাল গ্রহের অজানা রহস্যভেদ করছে পারসিভিয়ারেন্স।

সূত্র: বিবিসি।

 

 

 

 

   

 

Link copied!