করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারত। দেশটিতে প্রতিদিনই মৃত্যুর মিছিলে যোগ হচ্ছে তিন হাজারের বেশি মরদেহ। বিশ্বের যেসব দেশে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়িয়েছে তাদের মধ্যেও ভারত তৃতীয়। সোমবার (২৪ মে)পর্যন্ত দেশটিতে তিন লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবারও (২৫ মে) দেশটিতে ৩ হাজার ৪৯৮ জন মারা গেছেন। তবে করোনায় শনাক্ত ও সক্রিয় রোগীর সংখ্যা কমে আসছে দেশটিতে।
করোনায় মৃত্যু
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের সবশেষ তথ্য অনুযায়ি,করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার (২৫ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত (বাংলাদেশ সময়) ভারতে মোট ৩ লাখ ৭ হাজার ২৪৯ জন মারা গেছেন। সোমবার (২৪ মে) পর্যন্ত মারা গিয়েছিল মোট ৩ লাখ ৩ হাজার ৭৫১ জন। এই হিসেবে মঙ্গলবার গত ২৪ ঘন্টায় দেশটিতে ৩ হাজার ৪৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার (২৩ মে) পর্যন্ত দেশটিতে মৃত্যু হয়েছিল ২ লাখ ৯৯ হাজার ২৯৬ জনের। এহিসেবে সোমবার গত ২৪ ঘন্টায় দেশটিতে করোনাভাইরাসে মারা যায় ৪ হাজার ৪৫৫ জন।
ওয়ার্ল্ডওমিটারের গত কয়েকদিনের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বুধবার (১৯ মে) দেশটিতে সৃষ্টি হয়েছিল সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ওইদিন গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ৫২৯ জন মারা যায়। একদিনে এত সংখ্যক মানুষের মৃত্যু বুধবার দেখেছে পৃথিবীর বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশটি।
মঙ্গলবার (১৮ মে) গত ২৪ ঘন্টায় দেশটিতে ৪ হাজার ৩২৯ জন মারা গিয়েছিল। ওইদিন পর্যন্ত ছিল ভারতের সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।
বুধবার (১৯ মে) সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত (বাংলাদেশ সময়) ভারতে মোট ২ লাখ ৮৩ হাজার ২৭৬ জন মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১৮ মে) পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৭৮ হাজার ৭১৯।
রবিবার (১৬ মে) থেকে বেড়ে যায় মৃত্যুর সংখ্যা। ওইদিন গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৪ হাজার ৭৭ জন মারা গেছেন। এনিয়ে ওইদিন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছিল ২ লাখ ৭০ হাজার ৩১৯ জনের।
শনিবার (১৫ মে) পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় মোট মারা গিয়েছিল ২ লাখ ৬৬ হাজার ২৪২ জন। ওইদিন গত ২৪ ঘন্টায় দেশটিতে ৩ হাজার ৮৯০ জনের মৃত্যু হয়।
করোনা শনাক্ত
ওয়ার্ল্ডওমিটারের সবশেষ তথ্য অনুযায়ি, মঙ্গলবার (২৫ মে) পর্যন্ত ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন মোট ২ কোটি ৬৯ লাখ ৪৭ হাজার ৪৯৬ জন। সোমবার (২৪ মে) পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৬৭ লাখ ৫১ হাজার ৬৮১।এই হিসেবে মঙ্গলবার গত ২৪ ঘন্টায় মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৯৫ হাজার ৮১৫ জন। অনেকদিন পর দেশটিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখের নীচে দেখলো পৃথিবীর বৃহত্তম এই গণতান্ত্রিক দেশটি।
রবিবার (২৩ মে) পর্যন্ত এই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৬৫ লাখ ২৮ হাজার ৮৪৬। এই হিসেবে সোমবার গত ২৪ ঘন্টায় ভারতে মোট করোনায় আক্রান্ত হন ২ লাখ ২২ হাজার ৮৩৫ জন।
গত কয়েকদিনের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার (২০ মে) গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ২ লাখ ৭৬ হাজার ১১০ জন। এনিয়ে ওইদিন পর্যন্ত দেশটিতে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৫৭ লাখ ৭২ হাজার ৪৪০ জন।
ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য অনুযায়ি, বুধবার (১৯ মে) গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন ২ লাখ ৬৭ হাজার ৩৩৪ জন। মঙ্গলবার (১৮ মে) পর্যন্ত দেশটিতে শনাক্ত হয়েছিল ২ লাখ ৬৩ হাজার ৫৫৩ জন। এনিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ওইদিন আড়াই কোটি পেরিয়ে যায়।
রবিবার (১৬ মে) গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩ লাখ ১১ হাজার ১৭০ জন। এনিয়ে দেশটিতে ওইদিন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হন ২ কোটি ৪৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৫ জন।
শনিবার(১৫ মে) গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছিল ৩ লাখ ২৬ হাজার ২৯৮ জন।এনিয়ে ওইদিন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয় ২ কোটি ৪৩ লাখ ৭২ হাজার ২৪৩ জন।
করোনা থেকে সুস্থ
গত এক সপ্তাহের বেশি সময় দেশে আক্রান্তের থেকে সুস্থ হচ্ছেন বেশি। ওয়ার্ল্ডওমিটারের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ভারতে মঙ্গলবার (২৫ মে) পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ কোটি ৪০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৬০ জন। সোমবার (২৪ মে) পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৩৭ লাখ ২০ হাজার ৯১৯। এ্ই হিসেবে মঙ্গলবার গত ২৪ ঘন্টায় দেশটিতে সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ২৬ হাজার ৮৪১ জন।
রবিবার(২৪ মে) পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল ২ কোটি ৩৪ লাখ ১৮ হাজার ৫২৩ । এই হিসেবে সোমবার গত ২৪ ঘন্টায় দেশটিতে মোট সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ২ হাজার ৩৯৬ জন।
সুস্থ হওয়ার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যা কমে আসছে। ভারতে মঙ্গলবার পর্যন্ত সক্রিয় রোগী রয়েছে ২৮ লাখ ৯৯ হাজার ৭৩৬ জন। সোমবার (২৪ মে) পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল ৩০ লাখ ৩০ হাজার৭৬২ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীন থেকে সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত ১৮৯টি দেশে ছড়িয়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গত বছরের ১১ মার্চ করোনাভাইরাস সংকটকে ‘মহামারি’ ঘোষণা করে।
