৫০ হাজার বছর পর খালি চোখে ধূমকেতু দেখার সুযোগ পাচ্ছে বিশ্ববাসী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জানুয়ারি ৮, ২০২৩, ০৮:১৩ পিএম

৫০ হাজার বছর পর খালি চোখে ধূমকেতু দেখার সুযোগ পাচ্ছে বিশ্ববাসী

খালি চোখে ধূমকেতু দেখার সুযোগ পাচ্ছে বিশ্ববাসী। তাও আবার ৫০ হাজার বছর পর! বিজ্ঞানীরা জানান, এর আগে সর্বশেষ এ ধূমকেতু যখন পৃথিবীকে অতিক্রম করেছিল, তখন পৃথিবীতে নিয়ানডারথলদের বিচরণ ছিল। আর কিছুদিন পরই পৃথিবী ও সূর্যের কাছাকাছি দিয়ে অতিক্রম করবে এই ধূমকেতু।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, ধূমকেতুটি আগামী ১২ জানুয়ারি সূর্যকে অতিক্রম করবে। এরপর ১ ফেব্রুয়ারি ধূমকেতুটি পৃথিবীর কাছ দিয়ে যেতে পারে। সে সময় আকাশ পরিষ্কার থাকলে খালি চোখেই সুযোগ পাওয়া যাবে ধূমকেতু দেখার। খালি চোখে না দেখা গেলে দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে সহজেই এটি দেখা যাবে।

গত বছরের মার্চ মাসে ধূমকেতুটি বৃহস্পতি গ্রহকে অতিক্রম করার সময় ছিল এটিকে শনাক্ত করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জুইকি ট্রানসিয়েন্ট ফ্যাসিলিটি। গবেষকেরা এ ধূমকেতুর নাম দেন সি/২০২২ ই৩ (জেডটিএফ)।

বিজ্ঞানের তত্ত্ব অনুযায়ী, ধূমকেতুটি উর্ট ক্লাউড নামের একটি এলাকা থেকে এসেছে। উর্ট ক্লাউড মূলত সৌরজগতের চারপাশে বিশাল গোলক, যেখানে রহস্যময় বরফের বস্তুর অবস্থান রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

ফ্রান্সের প্যারিস অবজারভেটরির জ্যোতির্বিজ্ঞানী নিকোলাস বিভার বলেন, এই ধূমকেতু এবার পৃথিবীকে অতিক্রমের পর পুরোপুরি সৌরজগতের বাইরে চলে যাবে। এই ধূমকেতুর গঠন নিয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। এ জন্য নাসার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপটিকেও কাজে লাগানো হচ্ছে

বিভার বলেন, ধূমকেতুটি বরফ, ধুলিকণা ও সবুজ রঙের আভা দিয়ে তৈরি। পূর্ণিমা থাকলে ধূমকেতুটি দেখা কঠিন হয়ে যাবে। তবে এ মাসের শেষ দিকে পূর্ণিমা হচ্ছে না। তাই আকাশ পর্যবেক্ষকদের জন্য ধূমকেতু দেখার এটি ভালো সুযোগ। জানুয়ারির ২১-২২ তারিখে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য এটি পর্যবেক্ষণের ভালো একটি সুযোগ হবে। 

ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক থমাস প্রিন্স বলেন, ‘ধূমকেতুটি পৃথিবীর কাছে আসার দূরবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে এটির গঠন জানা সহজ হবে। এ ছাড়া এটি আমাদের সৌরজগৎ ও এর বাইরের গ্রহ সম্পর্কেও তথ্য দিতে পারে।’

১ ফেব্রুয়ারির পর ১০ ফেব্রুয়ারি ধূমকেতুটি যখন মঙ্গল গ্রহ অতিক্রম করবে, তখনো এটি দেখার সুযোগ পাওয়া যাবে।

বিজ্ঞানীরা বলেন, ধূমকেতুটির ব্যাস প্রায় এক কিলোমিটার হতে পারে। এর আগে ২০২০ সালে খালি চোখে দেখা যাওয়া নিউওয়াইজ নামের ধূমকেতুটির চেয়ে এটি অনেক ছোট। এ ছাড়া ১৯৯৭ সালে হেলি-বপ নামের যে ধূমকেতুটি পৃথিবী থেকে দৃশ্যমান হয়েছিল, সেটির ব্যাস ছিল ৬০ কিলোমিটার। বিভার বলেন, তবে এবারের ধূমকেতুটির বিশেষত্ব হচ্ছে, এটি পৃথিবীর অনেক কাছ দিয়ে যাবে। এটি প্রত্যাশার চেয়েও বেশি উজ্জ্বল হয়ে দেখা দিতে পারে।

Link copied!