গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে মো. আজমত উল্লা খানকে সর্বাত্মক সহায়তা করার কথা জানিয়েছেন সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
মঙ্গলবার (৬ জুন) অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ আত্মসাতসহ বেশ কিছু অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হাজির হয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হেরে যাওয়া আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী আজমত উল্লাকে নিজের বড় ভাই আখ্যা দিয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমি তাকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি আমারই বড় ভাই। গাজীপুরের মানুষের উন্নয়নে তিনি কাজ করবেন। আমি তাকে সর্বাত্মক সহায়তা করব।”
নিজের বিরুদ্ধে দুদকের আনা অভিযোগ অসত্য দাবি করে গাজীপুর মহানগর শাখা আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাধারণ সম্পাদক বলেন, “গত ১৭-১৮ মাস ধরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ দুদকে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। কে বা কারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে তার কোন হদিস নেই বা কাগজের সাথে বাস্তবের কোন মিল নেই।”
এসময় তিনি আরও বলেন, “দুদক আমাকে চিঠি দিয়েছিল আমি এসে তাদের সকল প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, যে যায়গায় সাতশ কোটি টাকা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় উন্নয়ন কাজে বরাদ্দ দিয়েছে সে যায়গায় কাগজের মধ্যে লিখে দিয়েছে সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকা আত্মসাত। কে বা কারা এ ধরণের অভিযোগ দিয়েছে সে বিষয়ে কোন ধরণের ডকুমেন্ট দুদক দেখাতে পারেনি।”
গাজীপুর সিটির সাবেক এই মেয়র আরও বলেন, “দুদক বলেছে যেহেতু আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে আমরা সে বিষয়ে তদন্ত করব। আমি বলেছি যখন যেভাবে আমাকে ডাকা হবে আমি তাদের সকল প্রশ্নের উত্তর দিব।”
তার নামে মিথ্য ব্যাংক একাউন্ট খুলে অভিযোগ করা হয়েছে উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “ন্যায় বিচারের সার্থে কে বা কারা মিথ্যা ও ভুয়া একটা স্বাক্ষর দিয়ে একাউন্ট খুলেছে সেটার বিচার আমিও চাই।”
নির্বাচন করতে যাতে না পারেন এজন্য এমন অভিযোগ কিনা এমন প্রশ্নে সাবেক এ মেয়র বলেন, আপনারা সাংবাদিক আমার থেকে আপনারা এ বিষয়ে ভালো জানবেন। এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে চাই না।
প্রসঙ্গত, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ সম্পদের বিষয়ে জাহাঙ্গীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন দুদকের সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান।
তিনি জানান, সোমবার সকাল ১০টার আগেই জাহাঙ্গীরের একজন আইনজীবী দুদক কার্যালয়ে আসেন। পরে সাবেক এই মেয়র হাজির হন। এর আগে দুদক জাহাঙ্গীর আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে গত ১৬ মে নোটিশ পাঠায়।
ভুয়া ব্যাংক হিসাবে টাকা অবৈধ লেনদেন, বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে জাহাঙ্গীর আলমকে ওই নোটিশ দেয় দুদক।
নোটিশে ২১ ও ২২ মে দুদকে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার অনুরোধ করে দুদকের উপপরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. আলী আকবর। তবে দুদকের তলবে হাজির হতে এক মাস সময় চেয়ে গত ১৮ মে আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করেন জাহাঙ্গীর আলম। এ ব্যাপারে ইতিবাচক জবাব না পেয়ে ২১ মে দুদকে উপস্থিত হয়ে সময় চাওয়ার বিষয়ে তিনি ব্যাখ্যা দেন। তার ব্যাখ্যার জবাবে দুদক ৬ ও ৭ জুন দুদকে হাজির হয়ে জাহাঙ্গীরকে বক্তব্য দিতে বলা হয়।