ভারতে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় পরিস্থিতি চরম উদ্বেগজনক হয়ে উঠলেও কেন্দ্রীয় সরকার এখনই পূর্ণ লকডাউন জারি করবে না, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এমনটাই জানিয়েছেন। কিন্তু যে সব রাজ্যে পরিস্থিতি বেশি খারাপ তারা নিজেদের মতো ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে।
ভারতে গত চব্বিশ ঘন্টায় আগের সব রেকর্ড ভেঙে প্রায় ২ লাখ ৭৩৯ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর জেরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৪০ ছাড়াল। মোট আক্রান্তের নিরিখেও বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের পরই স্থান ভারতের। মারাও গেছেন ১ হাজার ৩৮ জন। এ নিয়ে মোট ১ লক্ষ ৭৩ হাজার ১২৩ জন করোনায় প্রাণ হারালেন।
ভারতে মোট রোগীর ৯.২৪ শতাংশ এই মুহুর্তে অ্যাকট্ভি কেস, অর্থাৎ তারা এখনও রোগের সঙ্গে লড়ছেন। প্রায় নব্বই শতাংশের মতো রোগী সেরে উঠেছেন, আর মৃত্যুর হার ১.২৫ শতাংশের মতো - অর্থাৎ প্রতি দশ হাজার করোনা রোগীর মধ্যে সোয়াশো জনের মতো মারা যাচ্ছেন।
মঙ্গলবার ( ১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব রাজেশ ভূষণ মেনেই নিয়েছেন পরিস্থিতি সত্যিই দুশ্চিন্তায় ফেলার মতো। তিনি বলেন, "আগে একদিনে সর্বোচ্চ বৃদ্ধির যা রেকর্ড ছিল, তা এর মধ্যেই ছাপিয়ে গেছে - এবং এই প্রবণতা ঊর্ধ্বমুখী, রোজই নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে। ফলে পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক - আর প্রতিটা রাজ্যকে আমরা ক্রমাগত সেই কথাটাই বলে চলেছি, তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করছি।"
"এই মুহুর্তে কেন্দ্রীয় সরকারের ৫৩টি বিশেষজ্ঞ দল দেশের সবচেয়ে আক্রান্ত ৫৩টি জেলায় ক্যাম্প করে আছেন, মহামারি মোকাবিলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন", জানান মি ভূষণ।
এই মুহুর্তে কোভিড পরিসংখ্যান গত বছরের চেয়েও অনেক খারাপ হওয়া সত্ত্বেও জাতীয় পর্যায়ে যে দেশব্যাপী লকডাউন জারির কথা ভাবা হচ্ছে না, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট ডেভিড মালপাসের সঙ্গে এক ভিডিও বৈঠকে মিস সীতারামন বলেন, ভারত কোভিডের মোকাবিলা করবে টেস্টিং, ট্র্যাকিং, ট্রিটমেন্ট, টিকা আর কোভিড-সম্মত আচরণবিধি পালনে জোর দিয়ে - লকডাউন দিয়ে নয়।
তিনি আরও বলেন, "যতই দ্বিতীয় ধাক্কা আসুক, আমাদের স্পষ্ট কথা হল ভারত বড় আকারে কোনও লকডাউনে যাবে না। অর্থনীতির চাকাকে আমরা স্তব্ধ করতে চাই না।"
"শনাক্ত রোগীদের আইসোলেশনে রেখে বা আক্রান্ত এলাকা কোয়ারেন্টিন করেই আমরা সেকেন্ড ওয়েভের মোকাবিলা করব, কোনও লকডাউন জারি করা হবে না", বলেন মিস সীতারামন।