ঈদ মানেই নতুন পাঞ্জাবির সঙ্গে নতুন টুপি আর সুগন্ধি বা আতর। আর ঈদগাহে যেতে নতুন জায়নামাজের যেন বিকল্প নেই। কিন্তু আলাদাভাবে ঈদ জামাত আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত ও করোনার কারনে প্রভাব পড়েছে টুপি, আতর, সুরমা ও জায়নামাজের বাজারে।
ঈদের আগেই মূল ব্যবসা
আতর, টুপি, জায়নামাজ বেশি বেচাকেনা হয় ঈদের সময়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে গত পবিত্র ঈদুল ফিতরের সময় দোকানপাট বন্ধ ছিল। কিন্তু চলতি বছরে লকডাউনের মধ্যে মার্কেট খোলা রাখা, ঈদগাহে জমায়েত না রাখাসহ অন্যান্য কারনে বেচাকেনা কমে গিয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানায় অন্যান্য ঈদের অর্ধেকও বিক্রি হয়নি এবার। ব্যবসায়ীরা বলছেন, টুপি–আতর সারা বছর বিক্রি হয়। তবে প্রায় ৮০ ভাগ বেচাকেনা হয় ঈদের সময়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে গত দুই ঈদে ব্যবসা হয়নি। এবারও বেচাকেনা তেমন না হওয়ায় টুপি–আতর ব্যবসায়ীরা ভালো নেই।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার কারণে গত বছর আতর, সুরমা ও টুপি ব্যবসায় লাভের চেহারা দেখেননি। গত বছরের ক্ষতি কাটিয়ে এ বছর ব্যবসা সচ্ছল করার আশায় দোকান খুলেছিলেন। কিন্তু ব্যবসা নেই বললেই চলে। ক্রেতার সমাগম আগের তুলনায় দশ ভাগের এক ভাগ। অনেকের মতে, ক্রেতা না থাকায় দোকান ভাড়াও উঠবে কি না সন্দেহ আছে।
বিভিন্ন মূল্যের আতর ও টুপি পাওয়া যাচ্ছে
আতর, সুরমা, টুপি ও জায়নামাজ বিক্রিতে দেশের সবচেয়ে বড় পাইকারি ও খুচরা বাজার বায়তুল মোকাররম মার্কেট। এখান থেকেই সারা দেশে চলে যায় এসব পণ্য। সরেজমিন দেখা যায়, এই মার্কেটে বাহারি ডিজাইনের পণ্যের অভাব নেই। খুচরা দামে এখানে একটি টুপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা থেকে শুরু করে নয় হাজার টাকা পর্যন্ত। জায়নামাজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এই মার্কেটে রয়েছে রেডডোজ, সিলভার, সুলতান, কাঁচা বেলি রোজ চকোলেটসহ নানা ধরনের আতর। যার খুচরা মূল্য ৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়। এসব আতর মূলত আসে ভারত, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের নানা দেশ থেকে।
হতাশ ব্যবসায়ীরা
বায়তুল মোকাররমের স্বর্ণ মার্কেটের অংশে রয়েছে সবচেয়ে বেশি আতর, টুপি আর সুরমার দোকান। এখানে এ জাতীয় দোকানের সংখ্যা ২১৬টি। কিন্তু অধিকাংশ ব্যবসায়ীর মুখে হতাশার চিত্র। মূলত ঈদের সপ্তাহে বেশি ব্যস্ত থাকার কথা এখানকার ব্যবসায়ীদের। কিন্তু সেই ব্যস্ততা নেই। গত বছর করোনা মহামারিতে বন্ধ ছিল এই মার্কেট, এবার সেই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্য থাকলেও দোকান খুলে হতাশ ব্যবসায়ীরা।
যোহরা আতর হাউসের এক কর্মচারী মোমিন বলেন, ‘আগে সবার মধ্যে এক ধরনের আগ্রহ থাকত আতর কেনার। কারণ ঈদগাহে যেতে হবে আতর দিতে হবে আর এ বছর সেই আগ্রহ নেই।’ আরেক ব্যবসায়ী শহিদুল আলম বলেন, ‘এই সময় এই মার্কেটে আমরা কথা বলার সময় পেতাম না, ক্রেতায় ভরপুর থাকত, এখন বসে থাকতে হচ্ছে।’
এই মার্কেটের সামনে ফুটপাতে টুপির ব্যবসা করেন হাবিবুল ইসলাম। জানান, ঈদকে সামনে রেখে দোকানে যা মাল তুলেছেন তার অর্ধেক অবিক্রীত। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বেচাকেনা ভালো নাই দেহি কাইল পরশু কী হয়।’