মাঠ হাপিশ করার ক্ষেত্রে রাজধানীর হাফ সেঞ্চুরি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ২, ২০২২, ০৬:০১ এএম

মাঠ হাপিশ করার ক্ষেত্রে রাজধানীর হাফ সেঞ্চুরি

নগরের নির্মল বিনোদন, সুস্থ পরিবেশ ও শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশ নিশ্চিতের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মাঠ। নগর পরিকল্পনাবিদদের মতে, পর্যাপ্ত সংখ্যক মাঠের উপস্থিতি একটি শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। চলতি শতকের শুরুতেও রাজধানীতে ৭০টির মতো মাঠ ছিল। এখন সেখানে মাত্র ২০টি মাঠ টিকে আছে। নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বা হাপিশ করে ফেলা হয়েছে বাকি ৫০টি মাঠ। যেগুলো টিকে আছে সেখানেও খেলাধুলার পরিবেশ হারিয়ে গেছে। বেশিরভাগ মাঠ বেদখল হয়ে যাচ্ছে বা গেছে।

২০০৩ সালে রাজধানীর খেলার মাঠ ও পার্ক বেদখলের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি রিট করেছিল বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) পক্ষ থেকে ২০০৪ সালে একই বিষয়ে আরেকটি রিট করা হয়। এ দুই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীর ৭০টি খেলার মাঠ ও পার্কের জন্য সংরক্ষিত জায়গা ১৫ দিনের মধ্যে দখলমুক্ত করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এ আদেশ যথাযথভাবে পালনে কোনো ধরনের অগ্রগতি লক্ষ করা যায়নি। বরং দিন দিন পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে।

এ বিষয়ে বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, “আমরা ঢাকা সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত মাঠগুলো নিয়ে রিট করেছিলাম। আদালত মাঠ ও পার্ক দখলমুক্ত করতে বলেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার কোন বাস্তবায়ন হয়নি।”

সিটি করপোরেশনের খেলার মাঠগুলোর মধ্যে ১২টি ঢাকা দক্ষিণ সিটির অধীনে। ঢাকা উত্তরের অধীনে রয়েছে আটটি। ঢাকা দক্ষিণের ১২টি মাঠ হলো বাংলাদেশ মাঠ, গোলাপবাগ মাঠ, মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকা মাঠ, লালবাগ শ্মশানঘাট খেলার মাঠ, খিলগাঁও খেলার মাঠ, ধানমন্ডি খেলার মাঠ, কলাবাগান খেলার মাঠ, মরহুম হাজি আলী ঈদগাহ মাঠ, বালুর মাঠ ঈদগাহ মাঠ, আরমানিটোলা খেলার মাঠ, ধূপখোলা মাঠ ও জোড়াপুকুর খেলার মাঠ।

অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটির ৮টি খেলার মাঠ হলো বনানী মাঠ, বনানী খেলার মাঠ, বড় মগবাজার খেলার মাঠ, গোলার টেক মাঠ, তাজমহল রোড মাঠ, জাকির হোসেন রোড খেলার মাঠ, সলিমুল্লাহ রোড খেলার মাঠ ও বৈশাখী খেলার মাঠ।

মাঠ বেদখল হওয়ার বিষয় নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, ”মাঠ নাই শব্দটা সত্য নয়। মাঠকে দখল করা হয়েছে বা উদ্ধার করার চেষ্টা নাই। আমরা সেই চেষ্টা তেতুঁলতলা মাঠের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একই পরিণতিতে ফেরত আনার চেষ্টা করছি। এ কারণে আমরা চিহ্নিত করার কাজটি শুরু করেছি। মাঠগুলো চিহ্নিত করে আমরা সিটি করপোরেশনের সাথে বসবো কিভাবে উদ্ধার করা যায় সেই প্রক্রিয়া শুরু করবো।”

মাঠ বেদখল হয়ে যাচ্ছে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের এই প্রশ্নের জবাবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, “কোন মাঠ বেদখল হয়নি।”

ধূপখোলা মাঠের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ধূপখোলা মাঠে কাজ চলছে। এই মাঠে সংস্কারের কাজ চলছে। র‌্যাবের ভবন নির্মিত হচ্ছে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের একটি মাঠে। সেটা গণপূর্তের জমি ছিলে। গণপূর্ত আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে র‌্যাবের হাতে হস্তান্তর করে। আমি দায়িত্ব নেয়ার পরে দেখেছি যে এর নির্মাণ কাজ অনেক এগিয়ে গেছে। সুতরাং সেটাতে আর কিছু করার নেই। এছাড়া আর কোন মাঠই হারিয়ে যায় নাই। পাশাপাশি আমরা নতুন নতুন মাঠ তৈরির ব্যাপারে সমন্বিত পরিকল্পনা চালাচ্ছি।”

Link copied!