আগস্ট ১৮, ২০২৫, ০৬:৪২ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
খেয়া ঘাটের মাঝি কাজে না যাওয়ায় বাড়িতে ঢুকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলায়।
হামলায় আহত ভুক্তভোগিরা হলেন ভীমদাস (৪০), তার মা মঙ্গলাদাস (৬০) এবং ভীমের ফুপাতো ভাই কালা চাঁদ দাস। গুরুতর আহত ভীমদাস বর্তমানে খুলনার আড়াইশ বেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানিয়েছেন তার ভাই অর্জুন দাস।
সোমবার, ১৮ আগস্ট এই বিষয়ে অভয়নগর থানায় একটি লিখিত আবেদন (এজহার) দায়ের করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
দ্য রিপোর্টের সাথে আলাপকালে অর্জুন জানান, রোববার বিকেলে স্থানীয় সিদ্ধিপাশা বাজরে চায়ের দোকান থেকে ভীমের বাবা নারায়ন দাস (৭০) কে ডেকে নিয়ে যান স্থানীয় নতুনহাট হাসপাতাল খেয়াঘাটের ইজারাদার এবং ৩নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ আকুঞ্জি।
এজহার থেকে জানা যায় ইমদাদ আকুঞ্জির ট্রলারে পারাপারের কাজ করতেন ভীম। ইজারাদার ইমদাদ আকুঞ্জি ঠিকমত টাকা না দেওয়ায় কাজ বাদ দিয়ে নওয়াপাড়া পৌরসভায় পরিছন্নকর্মী হিসেবে কাজ করেন ভীম। তবে ভীমকে ট্রলারের মাঝি হিসেবে কাজ করার জন্য বারবার ডাকেন ইমদাদ এবং বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখান।
অর্জুন জানান, ঘটনার দিন (রোববার) রাত অনুমানিক ০৯.৩০ টার দিকে ভীম বাড়িতে যায়। এসময় হঠাৎ করেই তাদের বাড়িতে হামলা চালায় একদল লোক। হামলার নেতৃত্ব দেন ইমদাদ আকুঞ্জির ছেলে টুটুল আকুঞ্জি, ভাতিজা ফরিদ আকুঞ্জি এবং স্থানীয় মোকসেদের ছেলে টুটুল।
হামলাকারীরা মারধরের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছেন জানিয়ে অর্জুন বলেন, “টুটুল এবং ফরিদ আমার দাদাকে (ভীমকে) টানতে টানতে ঘর থেকে বের করে। তাকে পিটিয়ে তার পা ভেঙ্গে দেয়। তাদের আটকাতে গেলে তারা আমার বৃদ্ধা মা আর ফুপাতো ভাইকেও হামলা করে।”
হামলার কারণ জানতে চাইলে অর্জুন জানান, কিছুদিন আগে স্থানীয় ঘাটে দিনে ৪ ঘন্টা দায়িত্ব পালন করতেন মাঝি নারায়ন দাস। সকাল ৬টা থেকে শুরু করে সকাল ১০টা পর্যন্ত খেয়া ঘাটে কাজ করে দিনে ২০০ টাকা পেতেন নারায়ন। দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করলেও অল্প টাকা মজুরি হওয়ায় সম্প্রতি কাজ বাদ দেন তিনি। এরপর বিভিন্ন সময়ে ঘাটের ইজারাদার ইমদাদ আকুঞ্জি তাকে কাজে ফেরত যাওয়ার জন্য বলেন।
অর্জুন বলছেন, কাজে যেতে অস্বীকার করার কারণেই মূলত তার বাবা ও পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা করা হয়েছে।
“আমাদের সন্তানরা যাদের বয়স ১৪-১৫ বছর তারা গতকাল থেকে ঘরছাড়া। বাগানে আছে তারা। আকুঞ্জিদের ১৪-১৫ বছর বয়সী ছেলেরা আমাদের ছেলেদের ধাওয়া করে বাগানে ঢুকিয়ে দিয়েছে,” বলেন অর্জুন।
দল ক্ষমতায় না থাকলেও কিভাবে এত দাপট দেখাচ্ছেন ইমদাদ আকুঞ্জি—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্জুন জানান, “ওদের কোন দল নেই। যখন যেই দল ক্ষমতায় ওরা সেই দলে আছে। এতদিন আওয়ামী লীগ করছে। এখন বিএনপি করে।”
এ বিষয়ে জানতে অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আকিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি একটি কাজে কুষ্টিয়া রয়েছেন। এই বিষয়ে কিছু জানেন না। ওসি (তদন্ত) এর সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
ওসিকে (তদন্ত) ফোন দেওয়া হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। একই সাথে পরিদর্শক (তদন্ত) শুভ্র প্রকাশ দাসের সাথেও কথা বলার চেষ্টা করেছে দ্য রিপোর্ট। কিন্তু তাকেও পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইমদাদ আকুঞ্জির সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা সত্ত্বেও যোগাযোগ করতে পারেননি এই প্রতিবেদক।