এপ্রিল ২৭, ২০২২, ০৮:২৮ পিএম
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ভোট হয়েছে প্রায় ৪০ দিন। তবে ফলাফলকে কেন্দ্র করে চলছিল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনা যা শেষ পর্যন্ত মারামারিতে রূপ নিল।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আইনজীবী সমিতি ভবনের তিন তলায় সম্মেলন কক্ষের সামনে প্রথমে হাতাহাতি ও পরে কিল-ঘুষিতে জাড়িয়ে পড়ে উভয় পক্ষ। একপর্যায়ে কক্ষের জানালার কাচ ভাঙচুর করেন আইনজীবীরা। এ ঘটনায় সমিতির একটি কক্ষের কাচ ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ দিন বারের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. অজি উল্লাহর নেতৃত্ব একদল আইনজীবী নির্বাচনের নতুন উপ-কমিটি দাবি করে ভোট পুনর্গণনা করে ফল ঘোষণা করতে সমিতির ওই সম্মেলন কক্ষে প্রবেশ করতে গেলে মারামারি ও হাতাহাতির এ ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই কক্ষেই সমিতির নির্বাচনের ভোটের ব্যালটসহ অন্যান্য জিনিসপত্র রাখা আছে। গত ২৫ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে সেখান থেকেই অজি উল্লাহ নেতৃত্বে ভোট পুনর্গণনা করে সাত সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা নতুন উপ-কমিটি ফল ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়।
বুধবার ভোট পুনর্গণনা করে ফল ঘোষণার জন্য ওই কক্ষে প্রবেশকে কেন্দ্র করে হাতাহাতি ও দুই পক্ষের আইনজীবীদের ধাক্কা-ধাক্কির মধ্যে কক্ষের তালা ভেঙে অজি উল্লাহ নেতৃত্বে একটি দল সেখানে প্রবেশ করেন। এরপর কক্ষের বাইরে থেকে বিএনপিপন্থী আইনজীবী সদস্যরা কক্ষের কাঁচ ভাংচুর করে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি স্লোগানও দিতে দেখা যায়।
এর আগে গত ১৫ ও ১৬ মার্চ সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে সাত সদস্যের নির্বাচন উপ-কমিটি। এর একদিন পর ১৭ মার্চ ভোট গণনা করে রাতে ফলাফল ঘোষণার সময় আওয়ামী লীগ পন্থী আইনজীবী প্যানেলের সম্পাদক আব্দুন নুর প্রার্থী ভোট পুনর্গণনার দাবি করে লিখিত আবেদন জানালে ফল ঘোষণা আটকে যায়।
পরবর্তীতে দীর্ঘ এক মাস ১৩ দিন পর মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে অবস্থিত ল’ রিপোর্টার্স ফোরামে এক সংবাদ সম্মেলন করে সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি অজি উল্লাহ দাবি করেন, গত ১২ এপ্রিল সমিতির কার্যকরী কমিটির মেয়াদের শেষে এক সভায় তাকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের একটি নির্বাচন উপ কমিটি করা হয়েছে।
ওই সময় তিনি আরও বলেন, “আমি নির্বাচন পরবর্তী অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য গত ১৬ এপ্রিল থেকে কার্যক্রম শুরু করেছি। প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থীকে (সম্পাদক) নোটিশ করি, বারের অফিসে নোটিশ করি। কক্ষের দাবি হস্তান্তরের জন্য এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে ই-মেইলে পত্র প্রেরণ করি। তিনি চাবি হস্তান্তর করেননি, তারপর তার সাথে আদালতে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলি”
প্রসঙ্গত, গত ১৫ ও ১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনের ৫১টি বুথে সমিতির ২০২২-২০২৩ মেয়াদের এ নির্বাচনের ভোট নেওয়া হয়। মোট আট হাজার ৬২৩ জন ভোটারের মধ্যে দুই দিনে ভোট দেন পাঁচ হাজার ৯৮৩ জন।