ইসিতে জাতীয় পার্টির দুই চিঠি, সিদ্ধান্ত নিবে কমিশন

নিজস্ব প্রতিবেদক

নভেম্বর ১৮, ২০২৩, ০৯:৫৩ এএম

ইসিতে জাতীয় পার্টির দুই চিঠি, সিদ্ধান্ত নিবে কমিশন

এখন পর্যন্ত ৭ টি দল জোটের প্রতীক বরাদ্দের জন্য চিঠি দিয়েছে। ছবি : দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ।

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির দুইটি চিঠি এসেছে নির্বাচন কমিশনে। যার ফলে জাতীয় পার্টি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিবে কমিশন। রওশন এরশাদ স্বাক্ষরিত চিঠিতে জোটের কথা উল্লেখ থাকলেও জাতীয় পার্টির মহাসিচব মুজিবুল হক চুন্নু স্বাক্ষরিত চিঠিতে মনোনয়নের ক্ষমতা চেয়ারপার্সন জিএম কাদেরকে দেয়া হয়েছে। শনিবার ইসিতে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলা হয়।

ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ব্রিফিংয়ে  বলেন, এখন পর্যন্ত ৭ টি দলের কাছ থেকে চিঠি পেয়েছে ইসি। যারা জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে করেছ। দলগুলো হলো, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ,জাতীয় পার্টি মঞ্জু,জাতীয় পার্টি রওশন এরশাদ,বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল,তৃণমূল বিএনপি,বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি,বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল।

জাতীয় পার্টির দুই চিঠি প্রসঙ্গে অশোক কুমার বলেন,  জাতীয় পার্টির কাছ থেকে চিঠি দুইটা এসেছে। কমিশনের কাছে উত্থাপন করা হবে। তখন কমিশন যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই চূড়ান্ত। তবে সাধারণত দলের চেয়ারপার্সন,সাধারণ সম্পাদক কিংবা মহাসচিব এই চিঠি দিতে পারে বলে জানান তিনি।

আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে অশোক কুমার বলেন, আওয়ামী লীগের চিঠিতে আছে তারা জোটবদ্ধ হয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে। আর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত ফরমে মনোনয়ন বিতরণ করা হবে। তবে আওয়ামী লীগের চিঠিতে বলা নাই তাদের সাথে কারা জোটবদ্ধ হবে। এদিকে সাম্যবাদী দল ও বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে এই মর্মে চিঠি দিয়েছে।

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির দুইপন্থীর চিঠি। দেখুন সরাসরি..............

আওয়ামী লীগের সাথে জোটে রওশনপন্থী জাতীয় পার্টি

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করবে রওশনপন্থী জাতীয় পার্টি। নির্বাচন কমিশন ভবনে চিঠি দেয়ার মাধ্যমে এ কথা জানান বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের মুখপাত্র কাজী মামুনুর রশিদ। 

এ সময় তিনি বলেন, ‍‍`গতকাল আমাদের ফোরামে আলোচনা হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সাথে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করবে। আমরা আশা করি জিএম কাদেরও এই নির্বাচনে অংশ নিবে।‍‍`

রওশন এরশাদের মুখপাত্র কাজী মামুনুর রশীদ বলেন, ‍‍`আমরা প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে। পরে আওয়ামীলীগের সাথে জোট হলে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করি জিএম কাদেরও এই নির্বাচনে অংশ নিবে। নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে। আর না হলে রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাবে।‍‍`

সকালে জাতীয় পার্টির অন্য একটি অংশ মনোনয়নপত্র দেওয়ার ক্ষমতার বিষয় একটি চিঠি নির্বাচন কমিশনে দিয়েছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‍‍`জাতীয় পার্টির অন্য কোন অংশ নাই। রওশন এরশাদ যেখানে থাকবে সেটাই জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টিতে মনোনয়নপত্র রওশন এরশাদ এর স্বাক্ষরেই হবে।‍‍`

রওশনপন্থী জাতীয় পার্টির চিঠিতে বলা হয়েছে, আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি বিগত ৩ টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় এবারও চতুর্থবারের মতো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরীক দল হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। এটা হবে শুধু মাত্র নির্বাচনী জোট। নির্বাচন অন্তে জাতীয় পার্টির নির্বাচিত সংসদ সদস্যগণ দলীয় সিদ্ধান্ত অনুসরন করবেন। এই নির্বচনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থীরা দলীয় প্রতিক “লাঙ্গল” কিংবা প্রার্থীর ইচ্ছানুসারে মহাজোটে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করতে পারবেন। এই ব্যপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি।

জি এম কাদের দিবে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন

জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চিঠিতে বলা হয়, গত ১৬ নভেম্বর ইসির উপ সচিব মোঃ মাহবুব আলম শাহ স্বাক্ষরিত জানানো হয় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ১২.(৩ক) দফা (২) এর অধীন প্রত্যেক মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দলিলাদি সংযুক্ত করতে হবে। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের পক্ষে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা সমপর্যায়ের পদাধিকারী মাধ্যমে স্বাক্ষরিত এই মর্মে একটি প্রত্যয়নপত্র দিতে হবে। 

যে প্রার্থীকে উক্ত দলের পক্ষ হইতে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। তবে শর্ত থাকে যে, কোনো নিবন্ধিত দলের পক্ষ হতে প্রাথমিকভাবে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া যাবে এবং একের অধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়া হলে হইলে তাহাদের প্রার্থিতা অনুচ্ছেদ ১৬ এর দফা (২) সাপেক্ষ হবে। 

চিঠিতে আরো বলা হয়, মনোনীত প্রার্থী নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে দলের প্রার্থী মনোনয়ন ও প্রতীক বরাদ্ধ করবেন- জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

এদিকে এক ভিডিও বার্তায় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু গণমাধ্যমকে বলেছেন, আমরা এখনও সংলাপ চাই। সংলাপ ছাড়া জাতীয় পার্টি নির্বাচনে যাবে কি যানে না, তা দুই -এক দিনে পার্টি নেতাদের সাথে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

Link copied!