বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেছেন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার শফিকুল ইসলামকে আওয়ামী লীগে নেওয়া হোক। তাদের দলে নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি। সোমবার জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে এ অনুরোধ জানান হারুন।
সংসদে হারুন বলেন, ‘এখানে প্রধানমন্ত্রী রয়েছেন। আরও যে বিষয়টি উদ্বেগের সেটা হলো, পুলিশের আইজিপি ও কমিশনার যে ভাষায় কথা বলছেন। পোশাক খুলে দিয়ে রাজনীতিতে দেন না কেন? তাদেরকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়াইয়া দেন। তারপর যা ইচ্ছে, তাই বলুক। পুলিশের আইজিপি ও কমিশনার ওই পোশাক পরে যে ভাষায় কথা বলেছেন, এটা বলতে পারে না।’
হারুনুর রশীদ বলেন, ‘আইজিপি বলেছেন অপরাধীদের স্থান পুলিশে হবে না। পুলিশে অপরাধের সংজ্ঞা কী? উনি নিজে যে অপরাধ করছেন। বোট ক্লাবের সভাপতি এখনো রয়েছেন। এটি কোন সংবিধান বলে আছে, (তা) এখন পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিকে জানান নাই। অপরাধ যদি শীর্ষ জায়গা থেকে হয়ে থাকে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেন, তাহলে আপনি পুলিশ সদস্যদের অপরাধে কী ব্যবস্থা নেবেন? শীর্ষ পর্যায়ে যারা রয়েছেন, তাঁরাই সবচেয়ে বেশি অপরাধ করছেন।’
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের আলোচনা সভায় আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘দেশের অর্থনীতির ওপর অবরোধ আরোপ করতে একটি রাজনৈতিক দলের নেতারা লবিস্ট নিয়োগ করছেন, জিএসপি বন্ধ করতে চিঠি লিখছেন। আপনারা রাজনীতি করেন জনগণের জন্য, আবার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। জনগণকে নিশ্চিহ্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। আপনারা কারা, হু আর ইউ? কী চান আপনারা?’
একই সভায় ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘একটি পার্টির খুব সিনিয়র এক নেতা বলা শুরু করেছেন, তাদের নেত্রী নাকি এক নম্বর মুক্তিযোদ্ধা। এর চেয়ে হাস্যকর...।’
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দুর্বিষহ যন্ত্রণায় রয়েছে বলে সংসদে জানান হারুন। তিনি বলেন, আজকে টিসিবির পণ্য প্রায় ১ কোটি পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে এবং ন্যায্য মূল্যে দেওয়া হচ্ছে। সব থেকে বেশি উদ্বেগের যেটা হলো, সব জেলা ও উপজেলায় টিসিবির ডিলার রয়েছে। কিন্তু এখন গোটা রাষ্ট্রযন্ত্র ও প্রশাসন যন্ত্র প্যাকেজিংয়ের কাজে লিপ্ত হয়ে গেছে। প্রশাসনের কাছে জনগণ সেবা পাচ্ছে না। গত এক মাস যাবৎ তারা, ডিসিরা প্যাকেট করছে তেল, ডাল ও চিনি দুই কেজি করে, গরিব মানুষকে এই প্যাকেজ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। একজন রিকশাওয়ালা ও দিনমজুরের ছোলা ও খেজুরের প্রয়োজন নাই। ওই পণ্যগুলোর মধ্যে তার হয়তো পেঁয়াজ ও তেল দরকার; কিন্তু গোটা পণ্যগুলো নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আগে দেখেছি টিসিবি ও রেশনে গরিব মানুষ্য ন্যায্যমূল্যে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারত। কোনো অবস্থাতে সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।’
বাম জোটের হরতালে পুলিশের লাঠি চার্জের বিষয়ে ইঙ্গিত করে হারুন বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে যারা কথা বলতে চেষ্টা করছে, তাদের পুলিশ দিয়ে দমন করেছেন। এভাবে তো চলতে পারে না। মানুষকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।’
নির্মাণ সামগ্রীর দাম বাড়ায় গোটা দেশের স্কুল, কলেজ ও রাস্তাঘাট নির্মাণ স্থবির হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেন হারুন। তিনি বলেন, ‘নিত্যপণ্যের জন্য (বাজার নিয়ন্ত্রণ) টিসিবির মাধ্যমে হচ্ছে; কিন্তু নির্মাণকাজ কিসের মাধ্যমে সমন্বয় করবেন?’ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগ ডে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিও নিয়েও তিনি মন্তব্য করেন।