মে ৪, ২০২৩, ১১:১০ এএম
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল আনসারী আবারও বাংলাদেশ নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক ও ভুল তথ্য দিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন। তার প্রশ্নের কোনো সুনির্দিষ্ট উত্তর দেনিনি মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল। বরং দ্বিতীয় আরেকটি প্রশ্ন করার সময় মুশফিকুল ফজলকে থামিয়ে দেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিভাগের এই সিনিয়র কর্মকর্তা।
বুধবার (৩ মে)মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে স্বাধীনতা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিষয়ে বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্ন করায়, দ্বিতীয় কোনো প্রশ্ন না নিয়ে তাকে থামিয়ে দেন বেদান্ত।
জাতিসংঘ, ষ্টেট ডিপার্টমেন্ট, হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়ে অংশগ্রহণ করে থাকেন খালেদা জিয়ার সাবেক এই সকহারী প্রেস সচিব। ছবি: সংগৃহীত
ওই ব্রিফিংয়ে মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, ‘আপনি জানেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতার জন্য বাংলাদেশ সংগ্রাম করছে। জাতিসংঘ ডিএসএ তথা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রত্যাহার করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের সিনিয়র মন্ত্রীরা বলেছেন তারা আইন প্রত্যাহার করতে রাজি নন। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ইস্যুতে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান সর্বশেষে রয়েছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কী?
মুশফিকুল ফজলের এই প্রশ্নে বেদান্ত প্যাটেল সুনির্দিষ্ট কোনো জবাব না দিয়ে এ বিষয়ে মন্তব্য করতেও অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা এই আইন নিয়ে আমাদের উদ্বেগের বিষয়ে আগেও অনেক কথা বলেছি। আমার কাছে আপনাদের জন্য কোনো নতুন মূল্যায়ন নেই এবং এ বিষয়ে আমি আপনাকে আমাদের পূর্ববর্তী মন্তব্যগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই।”
এসময় আবারও প্রশ্ন করার চেষ্টা করলে তাকে থামিয়ে দেন বেদান্ত প্যাটেল।
এর আগে, মঙ্গলবারও ওয়াশিংটনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের সরকার ও গণমাধ্যম নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক প্রশ্ন করেন মুশফিকুল ফজল। ওই ব্রিফিংয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সহকারী প্রেস সচিব মুশফিকুল ফজল বলেন, ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের তৎপরতা নিয়ে নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।’ এবিষয়ে আপনার মন্তব্য কী? তবে তার প্রশ্নের জবাবে, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র আরও সুদৃঢ় সম্পর্ক চায় বলে উল্লেখ করেন বেদান্ত প্যাটেল।
২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সেক্রেটারি ছিলেন মুশফিকুল ফজল আনসারী। সংগৃহীত ছবি
ওই সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের সমালোচনা করে প্রশ্ন করার চেষ্টা করেন মুশফিকুল ফজল। এসময় তাকে থামিয়ে দিয়ে, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘যে কোনো দেশেই সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, এটাই চায় যুক্তরাষ্ট্র।’
কে এই মুশফিকুল ফজল আনসারী
২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সেক্রেটারি ছিলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীর ভাগিনা এবং বিএনপির আন্তর্জাতিক কমিটির সাবেক সদস্য সচিব ছিলেন এই মুশফিকুল। তিনি এক সময় বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল এনটিভি এবং বাংলাভিশনে টকশো করতেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। এই মুশফিক ফজলেই সাংবাদিকতার মুখোশে রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মুশফিক ফজল আনসারী জাতিসংঘ, ষ্টেট ডিপার্টমেন্ট, হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়ে যোগ দিয়ে বাংলাদেশ ও সরকারবিরোধী এবং বিএনপি ও খালেদা জিয়ার পক্ষে নানা কথা বলেন, প্রশ্ন করেন। বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন এবং আন্তর্জাতিক মহলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে সকল ধরণের অপপ্রচারের কাজ করে চলেছেন বলে যুক্তরাষ্ট্র শাখা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ।