পোশাক কারখানাসহ রপ্তানিমুখী শিল্প-কারখানায় কর্মরত যেসব শ্রমিক ঈদ উল আজহা উপলক্ষ্যে বাড়িতে যেয়ে এখনও রাজধানীতে এসে পৌঁছতে পারেনি, কাজে যোগ দিতে তাদের পরিবহনের জন্য লঞ্চ চলাচলের সময় সোমবার (২ আগস্ট ) সকাল ৬টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এর আগে এই সময়সীমা রবিবার (১ আগস্ট) দুপুর ১২ টা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দিয়েছিল সরকার।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন। গতকাল রোববার (১ আগস্ট) দুপুর ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচলের অনুমতি দিয়েছিল সরকার।
বিআইডব্লিউটিএ পরিচালক (নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা) মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম এ লঞ্চ চলাচলের সময়সীমা বৃদ্ধির বিষয়ে গণমাধ্যমে বলেন, ‘লঞ্চ চলাচল অব্যাহত থাকবে, এমন একটি নির্দেশনা আমরা পেয়েছি। অনেক যাত্রী, সরকার যে উদ্দেশ্যে লঞ্চ চলাচল খুলে দিয়েছে সেটা ১২টার মধ্যে পূরণ হবে না। সেজন্য সময় বাড়ানো হয়েছে।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে চলমান কঠোর লকডাউনের মধ্যেও রাজধানী ও নারায়ণগঞ্জ এলাকার তৈরি পোশাক কারখানাগুলোতে রবিবার থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে। এসব কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছেন পোশাক শ্রমিকেরা। এরপর ধাপে ধাপে সাভার, গাজীপুরসহ অন্যান্য এলাকার কারখানাগুলো খুলে দেওয়া হবে।
কঠোর লকডাউনে তৈরি পোশাক শিল্প কারখানার কর্মস্থলে যোগ দিতে সকালবেলা পায়ে হেঁটে শ্রমিকরা ছুটে আসেন। তবে অনেক শ্রমিক ঈদ উল আজহা উপলক্ষ্যে এখনও রাজধানীর বাইরে অবস্থান করায় কর্মস্থলে যোগ দিতে পারেনি।
রবিবার (১ আগস্ট) রাজধানীর বাড্ডা, মালিবাগ, রামপুরা, মিরপুর, কারওয়ানবাজারসহ বেশ কয়েকটি এলাকার পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সকাল ৮টার আগেই দলে দলে কাজে যোগ দিয়েছেন। কর্মস্থলে যোগ দেওয়া শ্রমিকদের বেশিরভাগইনারী শ্রমিক। গার্মেন্টস খোলার কথা শুনে তাদের অনেকেই কষ্ট করে কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন।
এর আগে, ১ আগস্ট থেকে তৈরি পোশাক কারখানাসহ রফতানিমুখী শিল্প-কারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা থাকবে বলে জানিয়ে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপ-সচিব মো. রেজাউল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ১ আগস্ট সকাল ৬টা থেকে রফতানিমুখী সব শিল্প ও কলকারখানা বিধিনিষেধের আওতা বহির্ভূত রাখা হলো।
উল্লেখ্য, ২৩ জুলাই কঠোর বিধিনিষেধ জারি হওয়ার পর থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিল্প-কারখানা। তবে ঈদের পর থেকেই কারখানা খোলার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন শিল্প-কারখানার মালিকরা।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল ব্যবসায়ী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে বৈঠক করে যত দ্রুত সম্ভব শিল্পকারখানা খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানান। তার একদিন পরই রপ্তানিমুখী সব শিল্পকারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার।