ঢাকা থেকে বরগুনাগামী ঝালকাঠির পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ নামে লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪২ জন মারা গেছেন। এখনও অনেকে নিখোঁজ থাকায় তাদের উদ্ধারে দ্বিতীয় দিনের মতো অভিযান চলছে।
শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ঝালকাঠি ও বরিশাল শাখার একাধিক ডুবুরিদল লঞ্চঘাট এলাকা থেকে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে।
ফায়ার সার্ভিস, ঝালকাঠি জেলা শাখার উপপরিচালক মো. কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া গণমাধ্যমে জানান, “আগুন লাগার পর জীবন বাঁচাতে অনেকে লঞ্চ থেকে নদীতে লাফ দেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বেঁচে ফিরলেও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। তাদের উদ্ধারে ডুবুরি দল সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করবে।”
এর আগে, স্মরণকালের ভয়াবহ লঞ্চ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মারা যাওয়া ৩৩ জনের মরদেহ বরগুনায় পৌঁছে। শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১২টার দিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছায় মরদেহবাহী গাড়ি। পরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রেডক্রিসেন্ট বরগুনার সদস্যরা মরদেহগুলো নামিয়ে হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যান।
জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে মরদেহ সংরক্ষণের জন্য অত্যাধুনিক ব্যবস্থা নেই। একারণে বেলা ১১টার পর সার্কিট হাউজ মাঠে সম্মিলিত জানাজা শেষেধর্মীয় রীতি অনুযায়ী ১২টার মধ্যে দাফন করা হবে।” সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী এলাকায় গণদাফন করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে, শনিবারও নিখোঁজদের সন্ধানে সুগন্ধার তীরে অপেক্ষায় রয়েছেন নিহতদের স্বজনরা। কেউ আবার ট্রলার নিয়ে নদীর বিভিন্ন প্রান্তে খুঁজে বেড়াচ্ছেন প্রিয়জনকে। অনেকে নিখোঁজদের ছবি নিয়ে নদী তীরের বাসিন্দাদের দেখাচ্ছেন, আর বিলাপ করছেন। কেউ আবার নদী তীরের মিনিপার্ক, ডিসিপার্ক, লঞ্চঘাট এবং ঘটনাস্থল দিয়াকুল এলাকায় ঘুরছেন। অন্তত নিখোঁজ স্বজনদের মরদেহ যেন বাড়ি নিয়ে যেতে পারেন, সেই অপেক্ষায় আছেন স্বজনরা।
প্রসঙ্গত, ২৩ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশে যাওয়া এমডি অভিযান-১০ নামে ওই লঞ্চে আগুন লাগে। এতে এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মরদেহ পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন ৭০ জনের বেশি। অনেকে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। অগ্নিদগ্ধ ও আহতদের অনেককে তাদেরকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল ও ঢাকা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।