সার্চ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকরা যা বললেন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২২, ০৬:২৬ পিএম

সার্চ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকরা যা বললেন

যোগ্যতার ভিত্তিতে সকল পেশার লোকজন নিয়ে একটি ভারসাম্যমূলক নির্বাচন কমিশন তৈরির বিষয়ে মত দিয়েছেন বিশিষ্ট  দুই সিনিয়র সাংবাদিক। পাশাপাশি নারী ও সংখ্যালঘু থেকে একজন করে কমিশনার নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারেও তারা সার্চ কমিটিকে বলেছেন।

বৈঠক শেষে বেরিয়ে মনজুরুল আহসান বুলবুল ও নঈম নিজাম সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন। তাঁরা বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ জমা দিতে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুসন্ধান কমিটির সময় রয়েছে। তাঁরা এই সময়ের মধ্যেই সুপারিশ জমা দেবেন। এর মধ্যে এখনো নাম প্রস্তাব না করা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কেউ প্রস্তাব জমা দিলে, তা বিবেচনায় নেওয়া হবে বলে অনুসন্ধান কমিটির সদস্যরা বলেছেন।

মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে নির্বাচন কমিশন গঠনের সার্চ কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যেমে  সিনিয়র ওই দুই সাংবাদিক এসব কথা বলেন।

মঙ্গলবার সার্চ কমিটির সঙ্গে আলোচনার জন্য দেশের সিনিয়র ৮ জনের নাম প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে আট সিনিয়র সাংবাদিকের সঙ্গে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হলেও বৈঠকে চারজন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।

তারা হলেন-বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আইয়ের বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ,  বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের( বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি ও সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল এবং বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সম্পাদক ইনাম আহমেদ চৌধুরী।

বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে  মন্জুরুল হাসান বুলবুল বলেন, “আমরা বলেছি যোগ্যতার ভিত্তিতে যেন নারী ও সংখ্যালঘু থেকে একজন করে কমিশনার নিয়োগ হয়। যোগ্যতার ভিত্তিতে সকল পেশার লোকজন নিয়ে একটি ভারসাম্যমূলক নির্বাচন কমিশন তৈরি হয়। কোন একটি পেশার উপর যাতে জোর দেয়া না হয়।”

তিনি আরও বলেন, “ যাদের নাম এসেছে তাদের সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া দরকার। জানা দরকার কোন সুবিধা নিতে তারা রাজনৈতিক ঘোল পাল্টেছে কিনা।  কোন আর্থিক কেলেঙ্কারি আছে কিনা।”

গতকাল সোমবার  নাম প্রকাশ করা উচিত হয়নি এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, “কারণ এখানে অনেকেই আছে তারা নিজেরাই জানেনা তাদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। তালিকায় নাম দেখে হয়তো তারা খুশি হয়েছেন কিন্তু যদি তারা নির্বাচিত না হয় তখন বিব্রতকর অবস্থায় পড়বে। এছাড়া বলেছি প্রস্তাবকের নাম যেন প্রকাশ না করা না হয়।”

বিএফইউজের সাবেক এই সভাপতি আরও বলেন, “আমরা প্রস্তুাব করেছি সাহসী মানুষ এবং কর্তৃত্ব ও সবাইকে নিয়ে কাজ করতে পারবে এমন কাউকে। তারা মনে মনে করেন ২৪ তারিখের মধ্যেই চূড়ান্ত তালিকা সম্পন্ন করতে পারবেন।”

মনজুরুল হাসান বুলবুল আরও বলেন, “সার্চ কমিটি আমাদেরকে জানিয়েছে যে ২৪ তারিখ পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল যদি আমাদের কাছে নাম প্রস্তাব করে তবে আমরা সে নামগুলো গ্রহণ করবো।”

বৈঠক শেষে বেরিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম। তিনি বলেন, যিনি সর্বজন গ্রহণযোগ্য এবং যাকে নিয়ে বিতর্ক হবে না এমন ব্যক্তিদের নাম যেন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব করা হয়।যে ১০ জনের নাম রাস্ট্রপতির কাছে দেয়া হবে সেগুলো প্রকাশের পক্ষে আমরা আমরা মত দিয়েছি। তবে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অনুমতি নেয়ার দরকার রয়েছে।”

প্রসঙ্গত, এর আগে শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রথম দফায় বেলা সোয়া ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় দফায় দুপুর ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত এবং রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশিষ্টজনদের মতামত নেয় সার্চ কমিটি।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়েছে সোমবার। আইন অনুযায়ী, অনুসন্ধান কমিটি গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম জমা দেবে।

অনুসন্ধান কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের প্রতি পদের জন্য ২ জন করে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবে। এ ১০ জনের মধ্য থেকে সিইসিসহ পাঁচজনকে দিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি। দেশের ইতিহাসে এবারই প্রথমবারের মতো আইন অনুযায়ী ইসি গঠিত হচ্ছে।

এর আগে শনিবার নির্বাচন কমিশন গঠনে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করে দেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এ অনুসন্ধান কমিটি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ মোতাবেক দায়িত্ব ও কার্যাবলী সম্পন্ন করবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনুসন্ধান কমিটির কার্যসম্পাদনে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবে।

Link copied!