জুলাই ১, ২০২১, ০৩:৫৭ পিএম
রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পাঁচ বছর পূর্ণ হল আজ বুধবার (১ জুলাই)। ২০১৬ সালের এমনই এক রাত থেকে শুরু করে ২ জুলাই সকাল পর্যন্ত গুলশানের এই রেস্তোঁরায় চলে জঙ্গিদের নৃশংসতা। হত্যা করা হয় ১৭জন বিদেশিসহ মোট ২২ জনকে। এই দিনটিকে স্মরণ করে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আজ সেখানে উপস্থিত ছিল জাপান অ্যাম্বাসি এবং নিহতদের পরিবারের অনেকে। ফুল দিয়ে তাদের প্রতি জানানো হয় শ্রদ্ধা।
আজ সকালে কিছু সময়ের জন্য খোলা হয় গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের পাঁচ নম্বর প্লটের ওই বাড়িটি। এখানে একটি অস্থায়ী মঞ্চ করা হয় নিহতদের স্মরণে। সকাল ৭টা থেকে ১০টার কিছু বেশি সময় পর্যন্ত নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য খোলা থাকে রেস্তোরাঁটি।
গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোফাজ্জল হোসেন জানান, করোনা মহামারির কারণে কঠোর লকডাউনের মধ্যেও সীমিত পরিসরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষ করে বিদেশি নাগরিকদের জন্য এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে সেখানে বেশি মানুষের ভিড় করতে দেওয়া হয়নি।
ভয়াবহ এই জঙ্গি হামলার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে বেরিয়ে আসতে থাকে জঙ্গিদের নারকীয় এই হত্যাযজ্ঞের ব্লু-প্রিন্ট। জানা যায়, হামলায় জড়িত জঙ্গিরা সকলেই ‘হোম গ্রোন। সেদিন 'আল্লাহু আকবর' বলে চিৎকার করে শান্তির ধর্ম ইসলামের অবমূল্যায়ন করে আধা-স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, গ্রেনেড এবং আরও কিছু অস্ত্র সহ পাঁচ যুবক হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় ঢুকে পড়ে এবং নির্বিচারে গুলি চালানো শুরু করে। আতঙ্কিত ও বিস্মিত হয়ে ভেতরের লোকজন টেবিলের নীচে ছড়িয়ে পড়ে সুরক্ষার জন্য।
হোটেলে উপস্থিত সকলকে জিম্মি করে পবিত্র কুরআন শরীফের আয়াত তেলাওয়াত করতে বলা হয়। এভাবে বাছাই করে নেয়া হয় অমুসলিমদের। জেএমবির কিছু সদস্য নতুনভাবে উজ্জীবিত হয়ে এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়, যাদেরকে ‘নব্য জেএমবি’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
হলি আর্টিসানের ঘটনার পর ধারাবাহিক অভিযানে জঙ্গিদের রুখে দিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সক্ষম হলেও, হলি আর্টিসানে নৃশংস জঙ্গি হামলার পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি মামলার বিচার প্রক্রিয়া। ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর এই মামলায় সাত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে বেকসুর খালাসের রায় দেন আদালত। এরপর আসামিরা রায়ের বিরুদ্ধে জেল আপিল করে, আর রায়ে খালাস পাওয়া একজনের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর প্রায় দীর্ঘ ১৯ মাস পেরিয়ে গেলেও উচ্চ আদালতে গিয়ে বিচারিক কার্যক্রমের আর তেমন কোন অগ্রগতি নেই।