লন্ডনে অফিস খোলার জন্য ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার এবং তার আইনজীবী স্ত্রী শেরি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডের একটি ভবনের মালিক হয়েছিলেন। তবে স্ট্যাম্প ডিউটি বাবদ ৩ লাখ ১২ হাজার পাউন্ড তাদের দিতে হয়নি। সম্প্রতি প্যানডোরা পেপার্সে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
প্যানডোরা পেপার্সের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত চার বছর ধরে গোপন থাকা এই খবর বেরিয়ে এসেছে বিশ্ব নেতাদের গোপন সম্পদ ও লেনদেনের তথ্য ফাঁস করে দেওয়া প্যানডোরা পেপার্সে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্লেয়ার দম্পতি ২০১৭ সালে লন্ডনের ওই ভবন কিনেছিলেন শেরির ব্যবসার অফিস হিসেবে ব্যবহার করার জন্য।
বিবিসির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আসলে টনি ব্লেয়ার ও তারস্ত্রী সরাসরি ওই ভবন কেনেননি। ওই ভবনের মালিকানা ছিল একটি অফশোর কোম্পানির হাতে। আর সেই কোম্পানিকে কিনে নিয়েছিল ব্লেয়ারদের খোলা আরেকটি ব্রিটিশ কোম্পানি। তাতে ওই অফশোর কোম্পানি বিলুপ্ত হয় এবং সেই কোম্পানির সব সম্পত্তি চলে আসে ব্লেয়ারদের ব্রিটিশ কোম্পানির হাতে
ব্রিটেনের নিয়ম অনুযায়ি, জমি কিংবা বাড়ি কিনতে গেলে কর দিতে হয়, কিন্তু কোম্পানি কিনলে স্ট্যাম্প ডিউটির কোনো বালাই নেই। ফলে ওই ভবন কেনার জন্য প্রযোজ্য ৩ লাখ ১২ হাজার পাউন্ডের কর তাদের দিতে হয়নি।
ব্যারিস্টার শেরি ব্লেয়ার বলেছেন, ওই ভবন যদি তারা বিক্রি করতে চান, কেবল তখনই তাদের লাভের ওপর ওই কর দিতে হবে।
বিশ্বের শক্তিধর নেতা, প্রেসিডেন্ট, রাজনীতিবিদদের গোপন তথ্য ‘প্যানডোরা পেপার্স’ নামে ফাঁস বা উদঘাটন করেছে ওয়াশিংটনভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস (আইসিআইজে)। এই সংগঠনের সঙ্গে কাজ করেছেন ব্রিটেনের বিবিসি এবং দ্য গার্ডিয়ান সংবাদপত্র এবং ভারতের 'দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস'সহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের ৬ শতাধিক গণমাধ্যমকর্মী। এসব গণমাধ্যম দাবি করেছে এক কোটি ১৯ লাখ দলিলপত্র তাদের হাতে এসে পৌঁছেছে।
প্যারাডাইস পেপার্স, পানামা পেপার্স ইত্যাদি নামে গত ৭ বছর যেসব গোপন দলিলপত্র ফাঁস হয়েছে, এই প্যানডোরা পেপার্স হচ্ছে তার সবশেষ ঘটনা।