ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কোনোভাবেই থামছে সংক্রমণের হার । বরং প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এই সংখ্যা। গত সাত দিনে ভারতজুড়ে বেড়েছে করোনা। এক সপ্তাহে ভারতে সংক্রমণ বেড়েছে ৪৩০.৮৩ শতাংশ। ২৮ ডিসেম্বরের পর থেকেই দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে শুরু করেছে।
আনন্দবাজার, টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ ভারতের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গত ২৮ ডিসেম্বর ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ছয় হাজার ৩৫৮। এর মাত্র সাত দিন পর অর্থাৎ ৩ জানুয়ারি করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক ধাক্কায় পৌঁছেছে ৩৩ হাজার ৭৫০-এ। অর্থাৎ দৈনিক সংক্রমণ বেড়েছে প্রায় ৪৩১ শতাংশ।
সংক্রমণের দিক দিয়ে শীর্ষস্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র। গত ২৪ ঘণ্টায় এই রাজ্যে মোট ১১ হাজার ৮৭৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এর পরেই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া ভারতের এই রাজ্যে সোমবার গত ২৪ ঘন্টায় ছয় হাজার ১৫৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
তবে স্বস্তির বিষয় হলো, আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও কমছে মৃত্যুর সংখ্যা। রবিবার দেশে মোট করোনায় মৃতের সংখ্যা ছিল ২৮৪ জন, কিন্তু তার এক দিন পরেই অর্থাৎ সোমবার মৃতের সংখ্যা কমে হয়েছে ১২৩। একই সঙ্গে বাড়ছে দৈনিক সুস্থতার হারও।
এরই পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যাও। ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু ওমিক্রনেই আক্রান্ত এক হাজার ৭০০ জন। ওমিক্রন আক্রান্তের দিক দিয়েও শীর্ষ স্থানে মহারাষ্ট্র। মহারাষ্ট্রে মোট ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৫১০। এর পরেই রয়েছে দিল্লি। দিল্লিতে এ সংখ্যা ৩৫১।
করোনার লাগামছাড়া সংক্রমণ বৃদ্ধিতে উদ্বেগ দেখা গেছে পশ্চিমবঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত কঠোর বিধি-নিষেধও জারি করেছে রাজ্য সরকার।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। গত চার দিনে চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে বাতিল হয়েছে একাধিক সরকারি অনুষ্ঠান। পাশাপাশি সোমবার থেকে রাজ্যের সমস্ত স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। সন্ধে ৭টা পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চলবে, তবে মোট যাত্রী আসনের ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে।
আনন্দবাজার অনলাইন আরও জানায়, সোমবার থেকে রাজ্যের সব স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। বিদেশ থেকে বিমানে আসা যাত্রীদের আরটিপিসিআর পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়া বিয়েসহ সব ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠানে ৫০ জনের বেশি লোক থাকতে পারবে না বল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এই রাজ্যে রাত ১০টার পর বন্ধ থাকছে শপিং মল ও সিনেমা হল। সরকারি অফিসে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও এই নিয়ম মানতে হচ্ছে। এছাড়া বন্ধ রয়েছে সুইমিং পুল, পার্ক ও সেলুন।