জুলাই ১৫, ২০২১, ০৯:০৩ পিএম
জিনিজিয়াংয়ে উইঘুরদের এলাকায় শ্রম অধিকার সংরক্ষণ বিষয়কে ধারাবাহিকভাবে উন্নত করা হচ্ছে। এ অঞ্চলে বেতন বকেয়া, শ্রম চুক্তি ও অন্যান্য শ্রম বিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে করা উইঘুরদের অভিযোগগুলো তদন্ত করে সংশোধন করা হয়েছে।
দেশটির সরকারি দফতর থেকে প্রকাশিত শ্বেতপত্র 'জিনজিয়াংয়ের সমস্ত জাতিগত গোষ্ঠীর অধিকারের সম্মান ও সুরক্ষা'র আলোকে জিনজিয়াংয়ে ক্ষুদ্রজাতি গোষ্ঠীদের অধিকার সংরক্ষণে যেই কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে সেখানে কর্মসংস্থানের বিষয়টিকে প্রাধান্য প্রদান করা হয়েছে। এই ব্যবস্থাপনার আলোকে এই অঞ্চলে থাকা সকলের আইন অনুসারে বৈধ শ্রম অধিকার, সম কর্মসংস্থান, বেতন, সামাজিক বীমা, বিশ্রাম ও ছুটি এবং পেশাগত সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও বিদেশি রাজনীতিবিদ দাবি করেন, জিনজিয়াংয়ে 'শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠানে। এর প্রতিউত্তরে এই শ্বেতপত্রে বলা হয়, জিনজিয়াং প্রদেশের কাউকে কোন কাজে বাধ্য করা হচ্ছে না। এই অঞ্চলে সকলে নিজ নিজ পছন্দ অনুসারে গ্রামে বা শহর অঞ্চলে কর্মসংস্থানে যুক্ত হচ্ছেন। আবার অনেকে নিজের ব্যবসাও শুরু করেছেন।
এখানে লেখা হয়, 'বর্তমানে কিছু বিদেশী গণমাধ্যম এবং রাজনীতিবিদ বিকৃতি এবং সম্পূর্ণ মনগড়া কথা বলে গুজব ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এটি জাতিগত সাম্য রক্ষায় চীন সরকারের বিশাল প্রচেষ্টাকে ক্ষুণ্ণ করার একটি প্রচেষ্টা এবং এটি মানবাধিকার নিয়ে যে ঐতিহাসিক অগ্রগতি হয়েছে তা ভুলভাবে উপস্থাপন করা। .. তাদের লক্ষ্য চীনকে অসম্মান করা, চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা, চীনের উন্নয়ন সীমাবদ্ধ করা এবং জিনজিয়াংয়ের স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি নষ্ট করা।'
'বাধ্যতামূলক শ্রম'-এর ভিত্তিহীন অভিযোগের কারণে জিনজিয়াং ভিত্তিক বেশ কিছু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্যোগ অনুমোদনের অপেক্ষায় থমকে আছে। গত ২৪ শে জুন হোয়াইট হাউস থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন এক ঘোষণা দেয়। যেখানে জিনজিয়াং ভিত্তিক পাঁচটি ব্যবসাকে 'স্বত্ব তালিকাভুক্ত' করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসার জন্য পৃথকভাবে মার্কিন লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে বলে ঘোষণা করা হয়। জিনজিয়াংয়ের পিপলস কংগ্রেস আঞ্চলিক আইনসভা উইঘুর স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানায়, মার্কিন কর্তৃপক্ষ তথাকথিত 'বাধ্যতামূলক শ্রমের' নামে জিনজিয়াংয়ের ক্রমবর্ধমান ফটোভোলটাইজ শিল্পের বিকাশ রোধ করার চেষ্টা করছে। আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক সহযোগিতা এবং প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপের মাধ্যমে আমেরিকা স্পষ্টভাবে তার লাভ খোঁজার চেষ্টা করছে।
পলিসিলিকন উৎপাদনে বিশ্বে প্রতিনিধিত্বকারী অঞ্চল হয়ে উঠেছে জিনজিয়াং প্রদেশের এই অঞ্চলটি। আর এ কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টিকে তাদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে। বিশ্বব্যাপী পলিসিলিকন উৎপাদনের প্রায় ৮৫ ভাগই আসে চীন থেকে যার পরিমাণ ৫ লাখ ৬৭ হাজার মেট্রিকটন। এর মধ্যে ৫৭ ভাগই আসে জিনজিয়াং প্রদেশে অবস্থিত শিল্প কারখানাগুলো থেকে।
জিনজিয়াং প্রদেশের স্থানীয় সরকার জানায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের এই অভিযোগ আরোপ ও বিধি নিষেধের মাধ্যমে এই অঞ্চলের উৎপাদন হ্রাস করতে চায়। সেই সঙ্গে এই অঞ্চল থেকে অন্য স্থানে এই কারখানাগুলো প্রতিস্থাপন করাতে চায়, যা নিশ্চিতভাবে এই অঞ্চলের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে। তবে মনে রাখা উচিত, এই পণ্যটির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিশ্বে অন্য সকল বাজারেও রফতানি করতে পারছে চীন। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রের এই অন্যায় আচরণে ভয় পাই না আমরা।