জানুয়ারি ১৯, ২০২৩, ০৩:৪১ পিএম
রাজধানীর গুলশানে হোলি আর্টিজানে নৃশংস হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ‘ফারাজ’ নামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন বলিউড পরিচালক হংসল মেহতা। ছবিটির ট্রেলর মুক্তি পেয়েছে সম্প্রতি। তবে সিনেমা হলে মুক্তির আগেই সিনেমাটি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। সমালোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছেন নৃশংস হামলায় নিহত অবিন্তার মা রুবা আহমেদ। তিনি অনুরোধ করে বলেন, বাংলাদেশের ওটিটি বা অন্য কোন প্লাটফর্মে যেন এ সিনেমাটি মুক্তি না পায়। বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহজাহানপুরে এক সংবাদ সম্মলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ফারাজ সিনেমায় ‘অবিন্তার’ চরিত্রকে আয়েশা নামে সরাসরি চিত্রায়ণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে পরিচালক বা প্রযোজনা সংস্থার কাছে এ ব্যাপারে আপত্তি জানালেও তারা কর্ণপাত করেনি।
রুবা আহমেদ বলেন, “হাত জোর করে বলছি, আমার দেশে যখন এটা আসবে প্লিজ ওটিটিতে এটা প্রকাশ হতে দিয়েন না। দেশের মানুষের দরকার নেই এটা দেখার।”
আসছে ৩ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে ‘ফারাজ‘ চলচ্চিত্রটি। সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, ছবিটি নির্মাণের আগে পরিচালক বা প্রযোজনা সংস্থা নিহতদের পরিবারের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি। নৃশংস ঘটনায় শোক বা সহানুভূতিও জানানো হয়নি। সিনেমাটিতে অবিন্তা কবির ও তার পরিবারের সদস্যদের চরিত্র উপস্থাপন করায় পরিবারের সদস্যরা বিব্রত বাধ করছেন বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
রুবা আহমেদ বলেন, “আমার মেয়ে সাধারণ একটি মেয়ে। আমার মেয়ে কোনো পণ্য নয়। ও কোনো কিচ্ছু না। ও অবিন্তা কবির, আমার মেয়ে। আপনারা কেউ ওকে জানতেন না। আপনারা কি আসলেই অবিন্তা কবিরকে চিনতেন? যদি ও ২০১৬ তে মারা না যেত? চিনতেন না। আপনার ওর (অবিন্তা) নামটা জেনেছেন কারণ, শি পাসড ওয়ে দ্যাট নাইট।”
হলি আর্টিজানে নৃশংসভাবে নিহত অবিন্তা কবিরের মা আরও বলেন, “এই মুভিতে আমার মেয়ের জন্য আরেকজন জীবন দিয়েছে, সে হিরো। নো, দ্যাটস রং। আমি এটা বিশ্বাস করি না। কারণ এটার কোনো প্রমাণ নাই। ওখান থেকে কেউ ফিরে আসেনি। যারা বেঁচে এসেছে তারা কেউ কিচ্ছু জানে না, বলতে পারে না। এখানে কোনো এভিডেন্স নাই যে কেউ হিরো হয়েছে। যদি হিরো হয়ে থাকে, তাহলে ২২টা মানুষ যে চলে গেছে (মারা যাওয়া) তারা হিরো। আমরা কেউ না। সো কাউকে এককভাবে হিরো বানানোটা আপনারা যদি আমাকে বলেন, আমি সেটা বিশ্বাস করি না। ইটস অ্যা রং, রং স্টেটমেন্ট। এটা হতে পারে না। এই মুভিটা রং, এটা কোনো দিনই হতে পারে না।”
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজানে ‘সন্ত্রাসী হামলায়’ ফারাজ, অবিন্তা কবিরসহ নিহত হন ২৮ জন। এ্ই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা দেশ-বিদেশে ব্যাপকভাবে নাড়া দেয়।