আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা ৬ মাস আগেই করা হয়েছিল

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ৮, ২০২৩, ০৩:২৯ পিএম

আদালত থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা ৬ মাস আগেই করা হয়েছিল

আদালত চত্বর থেকে নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’র এর সদস্য ছিনিয়ে নেয়া চক্রের প্রধান সমন্বয়ক ও তার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ। গতকাল ৭ই এপ্রিল ঢাকা মহানগরীর কোতয়ালী থানাধীন চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গন হতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন-ফাতেমা তাসনীম শিখা (৩১) ও  হুসনা আক্তার (২২)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, ঘটনার ছয় মাস আগেই তারা ‘জঙ্গি সদস্য’ ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন।

শনিবার দুপুরে রাজধানীতে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান,পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, শুক্রবার (৭ এপ্রিল) ঢাকার কোতয়ালি থানার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গন থেকে দুজনকে  গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন, ফাতেমা তাসনীম ওরফে শিখা এবং হুসনা আক্তার ওরফে হুসনা। ফাতেমা তাসনীম শিখা ২০১৪ সালে প্রথম শ্রেণিতে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেন। একপর্যায়ে তার ভাই মোজ্জাম্মেল হোসেন ওরফে সাইমনের মাধ্যমে সে আনসার আল ইসলামের আদর্শে দীক্ষিত হয় এবং পরবর্তীতে সায়মনের মাধ্যমে আবু সিদ্দীক সোহেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সোহেল আনসার আল ইসলামের সামরিক (আসকারি) শাখার সদস্য ছিলেন।

তিনি জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ফাতেমা তাসনীম শিখা ২০১৪ সালে MIST হতে প্রথম শ্রেণীতে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করেন। একপর্যায়ে তার ভাই মোজ্জাম্মেল হোসেন  সাইমন এর মাধ্যমে সে আনসার আল ইসলামের আদর্শে দীক্ষিত হযন এবং পরবর্তীতে সায়মনের মাধ্যমে আবু সিদ্দীক সোহেলের সাথে তার বিয়ে হয়।

সংবাদ সম্মেলনে  জানানো হয়, সোহেল আনসার আল ইসলামের সামরিক (আসকারি) শাখার সদস্য ছিলেন। সোহেলের সাথে বিয়ের পর থেকে সে আরোও গভীরভাবে সংগঠনের সাথে জড়িয়ে পড়ে। ২০১৭ সালে মুক্তমনা ব্লগার অভিজিত রায়, দিপন ও নীলাদ্রি নিলয় হত্যা মামলার আসামী হিসাবে আবু সিদ্দিক সোহেল গ্রেফতার হয়। গ্রেফতারের পর থেকে বিভিন্ন এনক্রিপ্টেড অ্যাপসের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃত শিখা কারাবন্দী সোহলসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যদের সাথে যোগাযোগ বজায় রেখে সংগঠনের কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ শুরু করে।

 

আসাদুজ্জামান বলেন, “জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা সম্পর্কে গ্রেফতারকৃতরা আরও জানায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর শীর্ষ নেতৃবৃন্দের পরিকল্পনা ও নির্দেশনা মোতাবেক গত ২০ নভেম্বর ২০২২ সালে বিজ্ঞ আদালতের কার্যক্রম শেষে পুলিশের ওপর হামলা করে জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করা হয়। ফাতেমা তাসনীম  শিখা  এই কার্যক্রমে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে। পরিচয় গোপন করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন “আনসার আল ইসলাম” এর সদস্যরা জঙ্গি ছিনতাইয়ের পুরো পরিকল্পনা, প্রস্তুতি ও সমন্বয় করার উদ্দেশ্যে ঢাকা এবং এর পাশের জেলায় একাধিক আনসার হাউস ভাড়া নেয়। সেখানে আনসার আল ইসলামের শীর্ষ এবং সামরিক শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আয়মান এবং শিখাসহ অজ্ঞাতনামা আনসার আল ইসলাম সদস্যদের নিয়ে নিয়মিত মিটিং করত। ঘটনার প্রায় ৬ মাস আগে থেকে জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করা হয়। কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার হতে সিজেএম কোর্টে হাজিরা দেয়ার সময় এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হয় এবং পরিকল্পনার সমন্বয়ক হিসাবে শিখাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। পরবর্তীতে ঘটনার দিন সে সিএমএম কোর্ট এলাকায় এসে পৌঁছে সে কৌশলে তার বাবার কাছ থেকে বিছিন্ন হয়ে ছিনতাইয়ের ঘটনায় নেতৃত্ব দেয়া মশিউর রহমান আয়মানসহ আনসার আল ইসলামের সদস্যের সাথে যোগাযোগ করে পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে।

Link copied!