বিচ্ছেদের দুই বছর আগে থেকেই আলাদা ছিলেন তাহসান-মিথিলা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জুলাই ৪, ২০২৫, ০৫:১৪ পিএম

বিচ্ছেদের দুই বছর আগে থেকেই আলাদা ছিলেন তাহসান-মিথিলা

ছবি: সংগৃহীত

তাহসান-মিথিলার বিচ্ছেদ শোবিজের আলোচিত ঘটনার একটি। ২০১৭ সালে বিচ্ছেদের পথে হাঁটেন তারা। তবে মিথিলা জানিয়েছেন, এর দুই বছর আগে থেকেই আলাদা থাকছিলেন তারা। অভিনেত্রী ভেবেছিলেন, হয়তো শেষ পর্যন্ত বিচ্ছেদ হবে না, সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু সেটা বিচ্ছেদেই গড়ায়। তখন মানসিক ও অর্থনৈতিক অনেক সংকটের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল মিথিলাকে। সম্প্রতি বিচ্ছেদের পর কঠিন সময়ের কথা তুলে ধরেছেন তিনি। এশা রুশদীর ইউটিউব পডকাস্টে জীবনের অনেক অজানা কথা ভাগ করেছেন তিনি।

মিথিলা বলেন, ‘২০১৫ সালে আমরা সেপারেশনে গেছি, তারপর আরও দুই বছর গেছে। আমি অপেক্ষা করেছি, ভেবেছি যে এটা ঠিক হয়ে যাবে, ঠিক হয়ে যাবে। ২০১৭ সালে এসে সিদ্ধান্ত নিতে পারলাম যে মনে হয় সম্পর্কটা আসলেই কাজ করবে না। আমি ছিলাম তখন অনেক অল্প বয়সী এবং মা হিসেবেও তরুণী। আমি যে কোনো একটা ভালোমন্দ বিচার করব বা কোনো একটা সিদ্ধান্তে আসব, সেটার শক্তিই আমার ছিল না। কারণ, আমার একটা এক বছরের বাচ্চা। আমার মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না, যেখানে আমি কোনো একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারব নিজের জীবনের।’

কঠিন সেই সময়ে শুধু মানসিকভাবে নয়, অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়েও যেতে হয়েছিল মিথিলাকে। অভিনেত্রী বলেন, ‘২৩ বছর বয়স থেকে আমি আমার জীবনকে একভাবে ভেবে এসেছিলাম। হঠাৎ করে জীবনটা সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তন হয়ে যায়। শ্বশুরবাড়ির মানুষদের সঙ্গে থাকতাম, একে তো আমার বাচ্চা আছে, তারপর আমি জানলাম সেই জায়গাটা আমার ভবিষ্যৎ না। তখন চাকরি করতাম, বছরে একদুইটা কাজও করতাম। কিন্তু আমার একটা গাড়িও ছিল না। আমার তো অভ্যাস ছিল গাড়িতে করে বাইরে যাওয়ার, আমার বাচ্চার অভ্যাস ছিল গাড়িতে চড়ার।’

মিথিলা মনে করেন, মেয়েদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা জরুরি। অভিনেত্রী বলেন, ‘মেয়েদের নিজেদের আসলে জায়গা থাকে না। শ্বশুরবাড়ি আবার বাবার বাড়ি, থ্যাঙ্কফুলি এখন আমার নিজের জায়গা আছে। তাও এত বছর পর। যদিও এর ক্রেডিট আমি আমাকেই দেব, অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে আমাকে। মেয়েদের জন্য সবার আগে যেটা দরকার, সেটা হলো অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। এই অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ছাড়া জীবনের অন্য সব সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়। এখন হয়তো মেয়েরা অনেক বেশি সিদ্ধান্ত নিতে পারছে; কারণ, এখন মেয়েরা অনেক বেশি অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পাচ্ছে। আমাকে ছোটবেলা থেকে মা বলেছে, “যা-ই করো, নিজের পায়ে দাঁড়াবে।” ফলে বিয়ের পরও আমি আমার পড়াশোনা, চাকরি সব চালিয়ে গেছি। তবে তখন আমি অতটা অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন ছিলাম না যে একা একা অতটা ভাবতে পারব, বাচ্চা মানুষ করতে পারব। সেটার জন্য সময় লেগেছে।’

হঠাৎ করেই ২০১৭ সালে গায়ক তাহসান খান ও অভিনেত্রী মিথিলা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যৌথভাবে তাদের বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দেন। সে সময় বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে মিথিলা ফেসবুকে লেখেন, ‘জীবনচলার পথে একটা সময় এসে আমরা বুঝতে পারলাম, দুজন মানুষ যার যার জায়গা থেকে দুই ধরনের জিনিস চাই। আমাদের যখন বিয়ে হয়, তখন আমাদের দুজনের বয়সই অনেক কম। আমাদের ক্যারিয়ারও একসঙ্গে গড়ে উঠেছে। এমন না যে কেউ কারও আগে বা পরে এসেছি। সেসব দিক থেকে আমাদের মধ্যে কোনো ঝামেলা ছিল না। কিন্তু একটা সময় এসে মনে হচ্ছিল, ১১ বছর আগের একজন মানুষ আর পরের একজন এক থাকে না। অনেক পরিবর্তন দেখা যায়। তাই বিচ্ছেদের মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হতে হয়েছে।’

সে সময় তাহসান বিচ্ছেদের কারণ প্রসঙ্গে লিখেছিলেন, ‘সমাজ কী বলবেএই ভয়ে অভিনয় করে সারা জীবন কাটিয়ে দিতে হবে, আমরা দুজন এ ব্যাপারে একমত নই।’ ফেসবুকে তারা লেখেন, ‘অতি দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমাদের বিবাহবিচ্ছেদ হচ্ছে। কয়েক মাস ধরেই আমরা বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। অবশেষে কোনো চাপে না থেকে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমরা জানি, আমাদের এ সিদ্ধান্তে অনেকে ব্যথিত হবেন। সে জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।’  

Link copied!