নিজের বাল্যবিয়ে বন্ধ করল ১৪ বছরের কিশোরী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ডিসেম্বর ১৫, ২০২১, ০৮:১২ পিএম

নিজের বাল্যবিয়ে বন্ধ করল ১৪ বছরের কিশোরী

মা-বাবার ইচ্ছায় বাল্য বিয়ে করতে রাজি না হয়ে থানায় গিয়ে নিজের বিয়ে নিজেই ভাঙলেন ১৪ বছরের কিশোরী। সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় এই ঘটনা ঘটে।

অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া কিশোরী নুসরাত জাহানের (১৪) জন্য পাত্র ঠিক করেছিল পরিবার। বরপক্ষ মেয়েটির বাড়িতে এসে আংটিও পরিয়ে যায়। কিন্তু নুসরাত তাকে বিয়ে না দিতে মা–বাবাকে অনুরোধ করে। কিন্তু তারা সেই অনুরোধ রাখেননি। উপায় না দেখে নুসরাত থানায় হাজির হয়ে নিজের বাল্যবিবাহ বন্ধে পুলিশের সহায়তা নেয়।

নুসরাতের এমন সাহসী কাজে সবাই প্রশংসা করছেন তার। অনেকেই দিয়েছেন তার পড়াশোনা চালিয়ে নিতে সহযোগিতার আশ্বাস।

নুসরাত মঠবাড়িয়ার ওহেদাবাদ গ্রামের ভ্যানচালক আবদুর রহমানের মেয়ে। সে স্থানীয় নূরুন-আলা নূর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।

মঠবাড়িয়া উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রূপ কুমার পাল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “নুসরাতের এমন সাহসী কাজের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি তাকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছি।”

নুসরাত জাহান জানায়, “আমি পাঠ্যবই ও শিক্ষকদের কাছে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে জেনেছি। পরিবার আমাকে বাল্যবিবাহ দেওয়ার চেষ্টা করছিল, আমি নিরুপায় হয়ে থানায় যাই। আমি পড়াশোনা শেষ করে বিয়ে করতে চাই। নিজের বাল্য বিয়ে বন্ধ করার পর প্রশাসনের কর্মকর্তা ও শিক্ষকেরা আমাকে ধন্যবাদ জানিয়ে উৎসাহ দিয়েছেন। এতে আমি খুশি।”

নুসরাতের বাবা আবদুর রহমান বলেন, তিনি দরিদ্র মানুষ। অভাব–অনটনের কারণে তিনি মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। এখন ভুল বুঝতে পেরেছেন।

নুসরাতের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুপার মো. রুহুল আমিন বলেন, “নুসরাত যে সাহসী কাজ করেছে, এ জন্য আমি শিক্ষক হিসেবে গর্বিত। সে যদি বিষয়টি আমাকে জানাত, তাহলে আমি বাল্যবিবাহ বন্ধে তার পাশে দাঁড়াতাম। মেয়েটি যাতে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, এ জন্য আমি তার পাশে সব সময় থাকব।”

মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূরুল ইসলাম বলেন, সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে ওই কিশোরী থানায় এসে তাকে বাল্যবিবাহ দেওয়ার কথা জানায়। এরপর তার অভিভাবকদের ডেকে বাল্যবিবাহ না দেওয়ার জন্য মুচলেকা নেওয়া হয়। এরপর মেয়েটিকে তার মায়ের জিম্মায় দেওয়া হয়। নিজের বাল্যবিবাহ বন্ধের জন্য থানায় আসায় মেয়েটিকে পুলিশের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ।

Link copied!