ইউটিউবার ও ছাত্র সাংবাদিকদের জন্যও পিআইডি কার্ডের ব্যবস্থা রাখার প্রস্তাব

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জানুয়ারি ২২, ২০২৫, ০৯:২৩ পিএম

ইউটিউবার  ও  ছাত্র সাংবাদিকদের জন্যও পিআইডি কার্ডের ব্যবস্থা রাখার প্রস্তাব

ইউটিউবার ও ছাত্র সাংবাদিকদের জন্যও পিআইডি কার্ডের ব্যবস্থা রাখার প্রস্তাব

ইউটিউব ভিত্তিক সাংবাদিক, ফ্যাক্ট চেকারসহ ছাত্র  সাংবাদিক ও তরুন সাংবাদিকদের জন্য বিশেষ প্রেস এক্রেডিটেশান কার্ড বা পিআইডি কার্ডের প্রস্তাবনা এসেছে। প্রেস এক্রেডিটেশান নীতিমালা ২০২২ সংশোধন কিংবা পুনঃলিখন কিংবা সংশোধন কমিটির সদস্য সিকদার আবির মাহমুদ জাহান এই প্রস্তাবনা দেন। সেখানে তিনি ক্ষেত্রবিশেষে ইউটিউব বা ভিডিও তথা সোশ্যাল মিডিয়াভিত্তিক সাংবাদিকসহ যারা ফ্যাক্টচেক সাংবাদিক আছেন, সবাইকেই ‍‍`সাংবাদিক‍‍` সংজ্ঞার আওতায় আনার পরামর্শ দেন। ফলে  ব্যক্তিপর্যায়েও পিআইডি কার্ড পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

প্রস্তাবনাগুলো হলো :

১/ পিআইডি এক্রেডিটেশান কার্ড গ্রহণ করতে চাইলে যেকোনো সাংবাদিককে একটি ‍‍`সাংবাদিকতার নীতি ও এক্রেডিটেশান কার্ড এর যথার্থ ব্যবহার‍‍` নামক একটি অনলাইন কোর্স সম্পন্ন করে সনদ গ্রহণ করতঃ পিআইডি অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে পিআইডি এক্রেডিটেশান কার্ড গ্রহণ করার ইচ্ছা পোষণ করতে হবে। সেখানে সে অবশ্যই সেই সনদ প্রকাশ করতে বাধ্য থাকবে। ন্যূনতম পাঁচ বছরের ফুলটাইম সাংবাদিকতার প্রমাণযোগ্য অভিজ্ঞতা থাকলেই একজন সাংবাদিক পিআইডি এক্রেডিটেশান কার্ড এর জন্য আবেদন করতে সক্ষম হবেন।

১.১/ প্রতি বছর সকল সাংবাদিক --  নতুন এমনকি পুরাতন পিআইডিপ্রাপ্তরা এই কোর্সটি রিফ্রেশার হিসেবে পুনরায় সম্পন্ন করতে বাধ্য থাকবেন। নতুবা কর্তৃপক্ষ তাঁর পিআইডি এক্সেস বন্ধ করে দেবার এখতিয়ার রাখবে। সেক্ষেত্রে অটোমেটেড ইমেইল এর মাধ্যমে প্রতি সাংবাদিককে কোর্সটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কিছুদিন আগে রিমাইন্ডার দেয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে।  

২/ পিআইডি এক্রেডিটেশান প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে ডিজিটালাইজেশান করতে হবে। উক্ত কার্ডের জন্য সাংবাদিকগণ অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন সম্পূর্ণরূপে পেশ করতে পারবেন। কার্ড হবে ইলেক্ট্রনিকালি রিডেব্যল/এনএফসি যুক্ত যা সংযুক্ত থাকবে সাংবাদিকের এনআইডি কার্ড/ ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং পাসপোর্টের সাথে।

২.১/ কার্ডটির বিপরীতে পিআইডি‍‍`র ওয়েবসাইট বা ডাটার মধ্যে প্রত্যেক সাংবাদিকের আলাদা আলাদা প্রোফাইল খোলা থাকবে, যা তাঁরা নিজেরা আপডেট করতে পারবেন (যেমনঃ নতুন কর্মক্ষেত্র, পরিবর্তিত ঠিকানা, নতুন পরিচয় ইত্যাদি)। পিআইডি কর্মকর্তারা এডমিন হিসাবে সেসব দেখতে পারবেন এবং আপডেটেড ডাটার ওপর ভিত্তি করে মেয়াদকাল বাড়াবেন বা স্থগিত করবেন। অবশ্যই সেক্ষেত্রে নির্দিষ্ট প্রফাইলধারী সাংবাদিকের সাথে ইনবক্স মেসেজ কিংবা ইমেইলের মাধ্যমে আলোচনা এবং রিমাইন্ডার দিতে হবে।

২.২/ এনআইডি কার্ডের ন্যায় পিআইডি কার্ড একবারই ইস্যু করা হবে। কারও কার্ড হারিয়ে গেলে, নষ্ট হয়ে গেলে একটা নির্দিষ্ট বিনিময়ের অর্থ ও পুলিশী জেনারেল ডায়েরি করতঃ নতুন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। স্থায়ী, অস্থায়ী কিংবা তিন বছর পাঁচ বছর অন্তর অন্তর নতুন করে সম্পূর্ণ কাগজপত্র পুনরায় ঘাটাঘাটি করা কেবল সময় ও ম্যানপাওয়ারের অহেতুক ব্যবহার বলে মনে করি।

২.৩/ বাৎসরিক আপডেটের উপর ভিত্তি করে প্রয়োজন মোতাবেক সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্সের ব্যবস্থা করবে এক্রেডিটেশান এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃপক্ষ। এজন্য বারংবার সাংবাদিকদের ডেকে ডেকে কাগজপত্র আদানপ্রদানের প্রলম্বিত ব্যবস্থা এড়ানো সম্ভব।

২.৪/ চিকিৎসকদের বিএমডিসি সার্টিফিকেট নম্বরের ন্যায় সাংবাদিকদের পিআইডি নম্বর, নাম ও কর্মস্থল এবং সম্মতিক্রমে ফোন/ইমেইল এড্রেস ওয়েবসাইটে পাবলিক ইনফরমেশান হিসেবে উন্মুক্ত থাকবে। তাতে কে সাংবাদিক এবং কে সাংবাদিক নয়, সে সম্পর্কে পাবলিকলি স্বচ্ছতা বজায় রাখা সম্ভব হবে।

৩/ পিআইডি এক্রেডীটেশান দেয়া হবে ব্যক্তি সাংবাদিকের প্রোফাইলের বিপরীতে; কোন কর্মস্থলে কয়টা কার্ড দেয়া যেতে পারে, এটা একটা সম্পুর্ণ সেকেলে ধারণা যেহেতু বাংলাদেশে সাংবাদিকেরা ঘন ঘন চাকরি পরিবর্তন করেন। এই ব্যবস্থা গ্রহণ করলে পত্রিকার প্রকাশক, মালিকপক্ষ, প্রশাসন ইত্যাদি অসাংবাদিকদের নামে কার্ড ইস্যু ও অপব্যবহার কমবে।

৪/ কার্ড প্রদানের দায়িত্ব পিআইডির হাতে থাকলেও প্রাথমিক সুপারিশ আসতে হবে সুপারিশকারী সাংবাদিকের অন্তত দশ জন রেফারির কাছ থেকে যারা নিজেরাও সাংবাদিক। তাদের যে সাংবাদিক নেতা কিংবা সিনিয়র হতে হবে তা নয়।

৪.১/ বীট ভিত্তিক সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে স্ব স্ব বীটের সহকর্মীদের কাছ থেকে অন্তত অর্ধেক মানুষের রেফারেন্স নিয়ে জমা দিতে হবে। নিরাপত্তা বিশ্লেষণের সময় এক্রেডিটেশান বাছাই কমিটি এসব রেফারিদের সাথে ক্রস চেক করে নেবেন।

৪.২/ এক্রেডিটেশান বাছাই কমিটিতে থাকবেন বিভিন্ন সাংবাদিক সংস্থার সদস্যবৃন্দ যারা একবছর পর পর আসন বদল করবেন। পরবর্তী কমিটিতে কারা আসবেন তা নির্বাচন না করে লটারি করে নির্বাচন করলে তা ‍‍`ব্যাড ইনটেনশান‍‍` মুক্ত থাকবে।

৪.৩/ বাছাই কমিটির সুপারিশ মোতাবেক প্রতিবছর দুইবার (ছয় মাস অন্তর অন্তর) এক্রেডিটেশান কমিটি এই কার্ড প্রদান করবেন। কোনও সাংবাদিক যদি অনলাইন এথিক্স কোর্স করতঃ এবং বাকি সব নিয়ম মানার পরেও এক্রেডিটেশান কার্ড না পান, তাহলে তাকে পুনঃসুপারিশ করার জন্য বিশেষ একটি কমিটি থাকতে হবে যার প্রধান থাকবেন পিআইও এবং সাথে অন্তত দুইজন বাছাই কমিটির সাংবাদিক এবং পিআইডির যেকোনো একজন কর্মকর্তা।

৫/ সাংবাদিকতা এখন আর কেবল প্রিন্ট, রেডিও, টিভি কিংবা অনলাইনে সীমাবদ্ধ নেই। আমরা চাই বা না চাই, ক্ষেত্রবিশেষে ইউটিউব বা ভিমিও তথা সোশ্যাল মিডিয়াভিত্তিক সাংবাদিকসহ যারা ফ্যাক্টচেক সাংবাদিক আছেন, সবাইকেই ‍‍`সাংবাদিক‍‍` সংজ্ঞার আওতায় আনতে হবে।

৫.১/ ছাত্র সাংবাদিক বা তরুণ সাংবাদিকদের জন্য যুক্তরাজ্যের এনইউজে‍‍`র ন্যায় ‍‍`স্টুডেন্ট প্রেস কার্ড‍‍` দেয়া যেতে পারে। তবে অবশ্যই তাঁর ব্যবহারিক সীমাবদ্ধতা আলোচনা করে নিতে হবে।

৫.২/ জেলাভিত্তিক ও প্রবাসী বাংলাদেশী সাংবাদিকদের ক্ষেত্রেও অনুচ্ছেদ ১ ও ২ এর সকল নিয়ম প্রযোজ্য হবে। তবে তাঁরা তাদের এক্রেডিটেশান গ্রহণ করতে ঢাকায় আসবেন না। বরং স্ব স্ব বিভাগীয় শহরের তথ্য অফিস হতে তাদের কার্ড এবং পাশ সরবরাহ করা হবে। প্রবাসীরা তাদের কার্ড স্ব স্ব অবস্থানের বাংলাদেশ এমব্যাসি বা হাই কমিশন থেকে সংগ্রহ করবেন। তবে তাদের ডাটাবেজ ঢাকার মূল ডাটাবেজের সাথে যুক্ত থাকবে এবং পাবলিক ডোমেইনে তা উন্মুক্ত থাকবে।

৬/ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গুরুতর কোনও অভিযোগ বা মামলা হলে তাঁর পিআইডি কার্ড স্থগিত করতে চাইলে পিআইডি কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই সেই সাংবাদিকের ১০জন রেফারির মতামত এবং বাছাই কমিটির ভোট নিতে হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে পিআইডি কার্ড বাতিলের ক্ষেত্রেও নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য একিভাবে বাছাই কমিটির সাথে আলোচনা করে ওয়েবসাইটে যথাযথ প্রজ্ঞাপন জারি করতঃ তা করতে হবে।

৭/ প্রেস এক্রেডিটেশান কার্ড কেবলমাত্র সচিবালয়/কেপিআই সমূহে প্রবেশের পাস নয় বরং একজন সাংবাদিকের জন্য পেশাদার পরিচয় বহন করবে। ভিভিআইপি এসাইনমেন্টসহ বিবিধ এসাইনমেন্টের ক্ষেত্রে স্পেশাল ব্রাঞ্চ পুলিশ/স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স এর কাছ থেকে বিশেষ ক্লিয়ারেন্স পাশ আনা নেয়ার ক্ষেত্রে যে হয়রানি করতে হয়, তা পিআইডি‍‍`র ডিজিটালাইড প্রোফাইল ব্যবহার করে অনলাইন এ পাশ ইস্যু করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৭.১/ পিআইডি এক্রেডিটেশান কার্ড এ এনএফসি করতে হবে যাতে সাংবাদিকেরা সহজে নির্দিষ্ট গেটসমূহ ব্যবহার করে সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারেন। ইলেক্ট্রনিক হবার ফলে তাতে ডিজিটাল রেকর্ড থাকবে কে কখন এলেন আর
 

Link copied!