সাতছড়ি উদ্যানে বিরল প্রজাতির বন্য ভালুক, বন বিভাগের সতর্কতা জারি!

মুজাহিদ মসি

জানুয়ারি ২২, ২০২৫, ০৬:০০ পিএম

সাতছড়ি উদ্যানে বিরল প্রজাতির বন্য ভালুক, বন বিভাগের সতর্কতা জারি!

ছবি: সম্প্রতি সাতছড়ি উদ্যানের গভীর অরণ্যে ক্যামেরায় ধরা পড়া এশিয়াটিক ব্ল্যাক প্রজাতির বিলুপ্ত ভালুক।

সম্প্রতি হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের গভীর অরণ্যে দেখা মিলেছে একটি বিরল প্রজাতির বন্য ভালুকের। হারিস দেব বর্মা নামের এক স্থানীয় সৌখিন ফটোগ্রাফারের ক্যামেরায় এই ভালুকের ছবি ধরা পড়ে। এ নিয়ে এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।  

এ ঘটনায় উদ্যানের ভেতরে জনসাধারণের অবাধ চলাফেরায় বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে উদ্যান কর্তৃপক্ষ।

বনবিভাগ সূত্র বলছে, ওইসব ভালুক এশিয়াটিক ব্ল্যাক জাতের বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির ভালুক। এরা অত্যন্ত আক্রমণাত্মক স্বভাবের হয়। বন বিভাগের কর্মকর্তাদের ধারণা, ছোট বড় মিলিয়ে এরকম প্রায় ১০-১২টি ভালুক রয়েছে ওই উদ্যানে।

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের বিট কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ জানান, ভালুক থাকার ঘটনাটি আমাদের মধ্যে রীতিমতো চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। এটি সংরক্ষণে আমরা আরো কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছি। পর্যটকদের উদ্যানের ভেতরে প্রবেশ করতে নিরাপত্তা ঝুকি বিষয়েও সতর্ক করছি। তবে এখন পর্যন্ত ভালুক দ্বারা কেউ আক্রান্ত হয়নি। 

এ নিয়ে তেলমাছড়া বিটের কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, এই উদ্যানে যথেষ্ট পরিমাণ মায়া হরিণ, বন বিড়াল, বন্য শুকরের চলাফেরা আমরা সচরাচর লক্ষ্য করে থাকি। কিন্তু এবার ভালুক থাকার বিষয়টি আমাদেরকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আরো নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করিয়েছে। কেউ যাতে শিকার বা পাচার করতে না পারে এ বিষয়ে কড়া সতর্ক রাখছি।

পাখি-প্রেমিক সোসাইটির যুগ্ম-আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ পাল বলেন, “বনের অবাধ চলাফেরা নিশ্চিত করতে ‘ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠী’ তথা বনের কিছু বাসিন্দারা যাতে ওই ভালুকগুলোকে শিকার বা নিধন করে না ফেলে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ভালুকের খাদ্য যোগানের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। বনের ভেতরে বন্যপ্রাণীর শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে।”

এশিয়ান কালো ভালুকের কালো পশম, একটি হালকা বাদামী মুখ এবং বুকে একটি স্বতন্ত্র সাদা বা ক্রিমি প্যাচ থাকে, যা কখনও কখনও ইংরেজি ‘ভি’ অক্ষর আকৃতির হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের ওজন ৬০-২০০ কেজি। যার গড় ওজন প্রায় ১৩৫ কেজি। এশিয়ান কালো ভালুক সর্বভুক। এছাড়া এরা পোকামাকড়, বিটল লার্ভা, অমেরুদণ্ডী প্রাণী, মৌমাছি, ঘাস, ছাল, শিকড়, কন্দ ও ফল ইত্যাদি খেয়েও বেঁচে থাকে।

Link copied!