মালিকের স্ত্রী ছক্কায় আহত হয়ে ব্যাংককে, তাই পারিশ্রমিক পায়নি রাজশাহীর ক্রিকেটাররা!

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

জানুয়ারি ১৬, ২০২৫, ০৩:২১ পিএম

মালিকের স্ত্রী ছক্কায় আহত হয়ে ব্যাংককে, তাই পারিশ্রমিক পায়নি রাজশাহীর ক্রিকেটাররা!

গত ২ জানুয়ারি বলের আঘাতে আহত হয়েছিলেন রাজশাহী কিংসের মালিকের স্ত্রী। ছবি: সংগৃহীত

রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের একটি ছক্কা গিয়ে লেগেছিল দুর্বার রাজশাহীর মালিকের স্ত্রীর শরীরে। সেই ঘটনায় তিনি আহত হন। চিকিৎসা নিতে যান থাইল্যান্ডে।

আর এ কারণেই সময়মতো রাজশাহীর ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক দেয়া যায়নি! এটি কোন কল্পকাহিনি নয়। দলটির অপারেশন ইন-চার্জ জায়েদ আহমেদ নিজেই এই তথ্য দিয়েছেন। খবর দেশ রূপান্তর।

গতকাল বুধবার হুট করেই জানা যায়, পারিশ্রমিক না পাওয়ায় অনুশীলন বর্জন করেছেন দুর্বার রাজশাহীর ক্রিকেটাররা। আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যে টাকা বুঝে না পেলে তারা শুক্রবারের ম্যাচ বয়কটেরও হুমকি দিয়েছেন। তবে দিনভর নাটকের পর রাতে রাজশাহীর ওই কর্মকর্তা এসে দাবি করেন, এদিন নাকি অনুশীলনই ছিল না। ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দেয়া হয়েছিল।

তার ভাষায়, ‘অনুশীলন ও পারিশ্রমিকের বিষয়ে আমরা সারা দিন যে খবরগুলো দেখেছি, এটার সাথে আসলে (পারিশ্রমিক না পাওয়ার বিষয়) একদমই সম্পৃক্ত নয়। ক্রিকেটাররা বিশ্রাম চেয়েছিল বলেই ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে বিশ্রাম দেয়া হয়। এটাই ছিল বিষয়। আমরা এরই মধ্যে প্রতিটি ক্রিকেটারকে টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি আগামীকাল অর্থাৎ ১৬ জানুয়ারি সবাইকে পারিশ্রমিক দেওয়া হবে। এটার সঙ্গে অনুশীলনের সম্পর্ক নেই।’

ক্রিকেটাররা যে চেক বাউন্স হওয়ার অভিযোগ করেছেন, সেটার বিষয়েও যুক্তি দাঁড় করানোর চেষ্টা করেছেন দুর্বার রাজশাহীর এই কর্মকর্তা, ‘চেক বাউন্সের ব্যাপারটা হলো, যেই ম্যাচে আমাদের দলের কর্ণধারের স্ত্রী মাঠে ছিলেন, ওই ম্যাচে সাইডলাইনে বসে থাকা অবস্থায় একটি বল আঘাত করে ওনার শরীরে। একটা হাড়ে চিড় ধরা পড়ে। তাই তৎক্ষণাৎ তাকে ব্যাংকক নিয়ে যেতে হয় চিকিৎসার জন্য। তিনি সেখানেই ছিলেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘চেকটা আমরা এর আগেই দিয়ে ফেলেছিলাম। আমরা চেকটা ওই তারিখে লিখে ফেলেছিলাম কিন্তু উনি দেশে নেই, তখন তিনি বললেন, “আমি তো দেশে নেই, তুমি দলকে বলো আমি আসার পরে যেন চেকটা জমা দেয়। না হয় ব্যাংক তো ফোন করে আমাকে পাবে না।” এই জিনিসটা প্রতিটা ক্রিকেটারকে বলা হয়েছিল। এর ভেতরে ২-১ জন ক্রিকেটার হয়তো চেক জমা দিয়ে ফেলেছিল। তাদের মনে ছিল না। পরে যোগাযোগ করি যে, “আপনাদের তো বলা হয়েছে চেকটা জমা না দিতে।” তখন তারা বলে যে, তাদের মাথায় ছিল না। তারা ভেবেছিল সমস্যা সমাধান হয়ে গেছে।’

এদিকে বিসিবি থেকে কড়া বার্তাই গেছে বিপিএলের দল দুর্বার রাজশাহীর কাছে। গতকাল পর্যন্ত খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিকের একটি টাকাও না দেওয়া এই ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তৃপক্ষকে বিসিবির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আজকের মধ্যে প্রতিশ্রুত টাকা না দিলে তাদের ফ্র্যাঞ্চাইজি বাতিল করা হবে। নতুন মালিক পাওয়া না গেলে দুর্বার রাজশাহীর দায়িত্ব নিতে পারে বিসিবি।

ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে খেলোয়াড়দের চুক্তি অনুযায়ী, টুর্নামেন্ট শুরুর আগে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে পাওনা টাকার ৫০ শতাংশ দিয়ে দেওয়ার কথা ফ্র্যাঞ্চাইজিদের। টুর্নামেন্ট চলাকালীন দিতে হবে আরও ২৫ শতাংশ। বাকি ২৫ শতাংশ টাকা দিতে হবে টুর্নামেন্ট শেষে।

তবে অন্যান্যবারের মতো এবারও বিপিএল শুরু হওয়ার আগে চুক্তি মেনে কোনো দলই ক্রিকেটারদের প্রতিশ্রুত টাকা পরিশোধ করেনি। এখনো অনেক দলের ক্রিকেটাররা প্রতিশ্রুত পুরো টাকা পাননি বলে জানা গেছে। এর মধ্যে দুর্বার রাজশাহী আজ এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দেয়নি কোনো টাকাই।

Link copied!