এপ্রিল ১৩, ২০২৫, ১১:৩৭ এএম
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে বর্ষবরণের আনন্দ শোভাযাত্রার মোটিফ পোড়ানোর ঘটনায় নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি ছিল কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র্যাব মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান।
বাংলা নববর্ষের আগের দিন রোববার রমনা বটমূলে ছায়নটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা প্রস্তুতি দেখতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
শহিদুর রহমান বলেন, “যে ঘটনাটি ঘটেছে, তার তদন্ত হবে। ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখানে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যারা ছিলেন, তাদের কোনো ঘাটতি ছিল কিনা, সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যদি সেরকম কিছু পাওয়া যায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” খবর বিডিনিউজ টয়েন্টিফোর ডটকম।
শনিবার ভোরে চারুকলায় শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ এবং ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফে আগুন দেওয়া হয়।
সিসিটিভি ভিডিও বিশ্লেষণ করে চারুকলা অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইসরাফিল রতন বলেন, এক যুবক দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে মাত্র দেড় মিনিটের মধ্যে আগুন লাগিয়ে একইভাবে চলে যায়।
“আমরা সিসিটিভি ফুটেজে একজনকে দেখেছি। আমাদের দুই তিনটা ক্যামেরাতে ধরা পড়েছে। যার পরনে ছিল কালো রঙের টিশার্ট এবং মুখে মাস্ক ছিল।”
পুরো ঘটনাটি ‘পূর্বপরিকল্পিত’ বলে মনে হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ছেলেটি অনেক স্মার্ট, অর্ডিনারি কোনো পিপল মনে হয়নি। মনে হয়েছে কারও অ্যাসাইন করা ছিল।”
ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “আপাতদৃষ্টিতে দেখে যেটা মনে হচ্ছে এটা অ্যাক্সিডেন্টাল না, কেউ ইনটেনশনালি এটা করছে। এটুকু আমরা নিশ্চিত।”
সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী সরাসরিই বলেন, চারুকলায় ‘ফ্যাসিবাদের মুখাবয়ব’ পুড়িয়েছে ‘হাসিনার দোসররা’।
রোববার সকালে রমনা বটমূলের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে এসে র্যাব প্রধান বলেন, বর্ষবরণ উপলক্ষে সকল ধরনের অনুষ্ঠানের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
“আমাদের ডগস্কোয়াড আছে, সাদা পোশাকে গোয়েন্দারা কাজ করছে, মোটরসাইকেল ও গাড়ির টহল টিম কাজ করছে। সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টিতেও র্যাব অন্তত গুরুত্বের সাথে কাজ করছে যেন কেউ অপপ্রচার, ভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়াতে না পারে।”
তিনি বলেন, “আমরা সমন্বয় করে কাজ করছি। পুলিশ আছে, সেনাবাহিনী আছে, অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরাও আছে, অন্যান্য সংস্কৃতির গোষ্ঠী, জনপ্রতিনিধি সবার সাথে সমন্বয় করে এ অনুষ্ঠান যেন সুন্দরভাবে করা যায় সেভাবে কাজ করছি।”
এবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগের চেয়ে ‘অনেক ভালো’ দাবি করে তিনি বলেন, “বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়ে ঝামেলামুক্তভাবে রমজান, ঈদ, বড়দিন, হিন্দুদের বড় উৎসব পূজা, একুশে ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়েছে। এবারও আশা করি সবাইকে নিয়ে আমরা সুন্দরভাবে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পালন করব।”
ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান রয়েছে, সে কথা তুলে ধরে শহিদুর রহমান বলেন, “চারুকলায় আনন্দ শোভাযাত্রা, রমনা বটমূলের অনুষ্ঠান, রবীন্দ্র সরোবরে, হাতিরঝিলে এসব অনুষ্ঠান ঘিরে সবরকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।”