বঙ্গবন্ধুর ছিলাম, বঙ্গবন্ধুর আছি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে সারা জীবন কাটিয়ে যাব: কাদের সিদ্দিকী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৩, ১০:৪৭ পিএম

বঙ্গবন্ধুর ছিলাম, বঙ্গবন্ধুর আছি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে সারা জীবন কাটিয়ে যাব: কাদের সিদ্দিকী

কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, আমার বোনের (শেখ হাসিনা) সাথে একটু দেখা হওয়ায় আমার দলের অনেক মানুষ মনে করছে, আমাগো নেতা গেছে গা, নৌকা মার্কা হইয়া গেছে। অনেক আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছে আমাগো কাম হইছে। না, কিছুই হয় নাই। আমি বঙ্গবন্ধুর ছিলাম, বঙ্গবন্ধুর আছি, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে আমার সারা জীবন কাটিয়ে যাব, এখানে কোনো আপস নেই।

শনিবার বিকেলে টাঙ্গাইল শহীদ মিনার চত্বরে সখীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র সানোয়ার হোসেন সজীবের কৃষক শ্রমিক জনতা লীগে যোগদান অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় এসব কথা বলেন কাদের সিদ্দিকী।

সভায় কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, ড. কামাল হোসেনকে নেতা মনে করছিলাম বইলা গেছিলাম। যদি ভুল হইয়া থাকে সেটা আমার ভুল হইছে, জীবনের সেরা ভুল। ঐক্যফ্রন্টে যাওয়া প্রসঙ্গে বলেছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে আবদুল কাদের সিদ্দিকীর সপরিবারে সাক্ষাতের পর তার কর্মসূচিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর উপস্থিতি নিয়ে রাজনীতিতে নতুন কোনো ‘মেরুকরণের সম্ভাবনা’ সরাসরি নাকচ করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে আলোচিত সেই সাক্ষাতের ঘটনায় আওয়ামী লীগের ‘উৎফুল্ল হওয়ারও কিছু নেই’ বলে মনে করেন তিনি। সেই সাথে তিনি ‘নৌকা মার্কার’ হয়ে গেছেন, এমনটি না ভাবতে নিজের দলের নেতা-কর্মীদের পরামর্শ দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, সখীপুরের সাবেক পৌর মেয়র সানোয়ার হোসেন ১৯৯৩ সালে সখীপুর শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে হন উপজেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক। ১৯৯৯ সালে কাদের সিদ্দিকী আওয়ামী লীগ থেকে সরে গিয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ গঠন করলে সানোয়ারও পক্ষ বদল করেন। তিনি দলের জেলা কমিটির যুববিষয়ক সম্পাদক হন।

২০১১ সালের ২৬ মে তিনি কাদের সিদ্দিকীর দল ছেড়ে দিয়ে চলে যান বিএনপিতে। ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে হন বহিষ্কৃত। প্রায় আট বছর পর তিনি ফের কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ফিরলেন।

দলে যোগদানের এই আয়োজনে কাদের সিদ্দিকীর বক্তব্যে প্রাধান্য পায় প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার সাক্ষাৎ, বিএনপি নিয়ে ভাবনা। গত জাতীয় নির্বাচনে ব্যাপক ‘চুরি’ হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সেই নির্বাচনে তার মেয়ের কুঁড়ি সিদ্দিকীর ‘হেরে যাওয়াটাই ভালো হয়েছে’ বলেও উপলব্ধির কথা জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন সেই নির্বাচনে বিএনপি জোটের অংশ হওয়াটা ছিল ‘জীবনের সেরা ভুল।’ 

১৯৯৬ সালে টাঙ্গাইল-৮ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য হন কাদের সিদ্দিকী। দলের সাথে বিরোধের জেরে তিন বছর পর আওয়ামী লীগ ছেড়ে তিনি গঠন করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। ২০০১ সালে সেই দলের হয়েই নির্বাচিত হন সংসদ সদস্য। এরপর থেকে আওয়ামী লীগের কট্টর সমালোচক হয়ে উঠেন তিনি। যোগাযোগ বাড়ে বিএনপির সাথে।

২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির ২০ দলীয় জোটের পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে যে জোট গঠন করা হয়, তাতেও অংশ নেয় কাদের সিদ্দিকীর দল। জোট থেকে তাকে টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) ও টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল সখীপুর) আসন থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। তবে খেলাপি ঋণের অভিযোগে দুটি মনোনয়নই বাতিল হয়ে যায়।

পরে টাঙ্গাইল-৮ আসনে মনোনয়ন পান তার মেয়ে কুঁড়ি সিদ্দিকী। তবে নৌকার প্রার্থীর কাছে হেরে যান বড় ব্যবধানে। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জোয়াহেরুল ইসলাম পান ২ লাখ ৮ হাজার ৩৩৪ ভোট। কুঁড়ির বাক্সে পড়ে ৭২ হাজার ২১১ ভোট।

Link copied!