কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূলধারায় আনতে আসন্ন ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে নতুন পদক্ষেপ থাকবে। শিল্প বা কারখানায় তাদের চাকরি দিলে উদ্যোক্তাদের নির্দিষ্ট অঙ্কের কর ছাড় দেয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
৫ শতাংশ পর্যন্ত কর ছাড়ের সুযোগ
কোনো প্রতিষ্ঠানে মোট জনবলের ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী নিয়োগ দিলে সে প্রতিষ্ঠানের প্রদেয় করের ৫ শতাংশ কর ছাড় দেয়া হয়। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে হিজড়াদের নিয়োগের ক্ষেত্রে একই রকম সুবিধা দেয়া হচ্ছে। কোনো প্রতিষ্ঠান বছরের পুরো সময় মোট জনবলের ১০ শতাংশ বা ১০০ জনের বেশি হিজড়াকে চাকরি দিলে প্রদেয় করের ৫ শতাংশ রেয়াত পাবে। সমাজসেবা অধিদফতরের জরিপ মতে, দেশে হিজড়া জনসংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সরকার প্রতিবন্ধীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে এ ধরনের সুবিধা দিয়েছে।
সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের আশা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) মনে করে, হিজড়া দেশের মোট জনসংখ্যার ক্ষুদ্র অংশ হলেও আবহমান কাল থেকে এ জনগোষ্ঠী অবহেলিত। সমাজে বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার এ জনগোষ্ঠীকে অর্থনীতির মূলধারায় আনতে পারলে দেশের উন্নয়নে তারা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারবে। তাই বাজেটে হিজড়াদের চাকরি দিলে কর ছাড় সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এ পদক্ষেপের ফলে হিজড়াদের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে এবং তাদের সম্পর্কে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হবে।
নতুন ৯ হাজার হিজড়া, বেদে পাবে সুবিধা
নতুন বাজেটে হিজড়া, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর মানোন্নয়নে সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হবে। বর্তমানে ৮৬ হাজার জনকে এ ভাতা দেওয়া হচ্ছে। আসন্ন বাজেটে এ ভাতা দেওয়া হবে ৯৫ হাজার জনকে।
যা যা সুবিধা পাচ্ছে হিজড়া জনগোষ্ঠী
স্কুলগামী হিজড়া শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ৪ স্তরে (জনপ্রতি মাসিক প্রাথমিক ৭০০, মাধ্যমিক ৮০০, উচ্চ মাধ্যমিক ১০০০ এবং উচ্চতর ১২০০ টাকা হারে) উপবৃত্তি প্রদান। ৫০ বছর বা তদুর্ধ বয়সের অক্ষম ও অসচ্ছল হিজড়াদের বিশেষ ভাতা জনপ্রতি মাসিক ৬০০ প্রদান করা হচ্ছে।
এছাড়া বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মক্ষম হিজড়া জনগোষ্ঠীর দক্ষতা বৃদ্ধি ও আয়বর্ধনমূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করে তাদের সমাজের মূল স্রোতধারায় আনয়ন প্রশিক্ষণোত্তর আর্থিক সহায়তা দশ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।