রাত পোহালেই মমতা-প্রিয়াঙ্কার দ্বৈরথ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২১, ১০:১৮ পিএম

রাত পোহালেই মমতা-প্রিয়াঙ্কার দ্বৈরথ

রাত পোহালেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের তিন আসনের উপনির্বাচন। এর মধ্যে ভবানীপুর আসন থেকে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এই আসনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির প্রিয়াঙ্কা টিবড়েওয়াল। বাম প্রার্থী সিপিএমের শ্রীজীব বিশ্বাস আছেন কিন্তু মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর সঙ্গে প্রিয়াঙ্কা টিবড়েওয়াল এর।

এই কেন্দ্রে গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তিনি ইস্তফা দেওয়ায় এই আসনটি শূন্য হয়।  বর্ষণমুখর ভবানীপুরে যত বেশি ভোট হবে ততই লাভ তৃণমূলের। আটটি ওয়ার্ড নিয়ে গড়া ভবানীপুর কেন্দ্রে ছটি ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রাধান্য। ইতোমধ্যে ভবানীপুর কেন্দ্রে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।

এর আগে নন্দীগ্রামে মমতাকে হারিয়ে বিজেপির বিরোধী দলনেতা হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এ বার তিনি চান, ভবানীপুরে মমতাকে হারাতে পারলে, তিনি প্রিয়াঙ্কাকে বিরোধী দলনেতার আসন ছেড়ে দেবেন। 

বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের বাকি দুই কেন্দ্র সামশেরগঞ্জ–জঙ্গিপুরেও বুধবার সকাল থেকেই নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী  ৩ অক্টোবর ভোটের ফলাফল ঘোষণা হবে।

কলকাতা পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র নির্দেশিকা দিয়ে জানিয়েছেন, ‘বুথের ২০০ মিটারের মধ্যে পাঁচজনের বেশি জমায়েত করা যাবে না। সব বুথে ওয়েব কাস্টিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সব বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে।

দুর্যোগের জন্য কয়েক দফা ব্যবস্থা নিল নির্বাচন কমিশন। ইভিএম মেশিনকে নিরাপদ রাখার জন্য পলিথিন ব্যাগ দেওয়া হবে। যাতে ইভিএম মেশিন জলে না ভিজে যায়। প্রত্যেক ভোট–কর্মীকে দেওয়া হচ্ছে রেনকোট। প্রত্যেকটি বুথে সেডের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যেখানে যেখানে জল জমার সম্ভাবনা আছে, সেখানে পাম্প বসানো হচ্ছে। বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর এবং সিভিল ডিফেন্স ডিপার্টমেন্ট দুটি নৌকার ব্যবস্থা রাখছে যাতে তিন ফুটের উপর জল জমলে সেগুলি ব্যবহার করা যায়।’

মুর্শিদাবাদের দুই কেন্দ্র জঙ্গিপুর এবং সামশেরগঞ্জ। এখানে শুরু হয়েছে ভোটের জন্য প্রয়োজনীয় ইভিএম এবং অন্যান্য সামগ্রীর বণ্টন প্রক্রিয়া। জঙ্গিপুর পলিটেকনিক কলেজে শুরু হয়ে গিয়েছে ভোট কর্মীদের ব্যস্ততা। ভোটের সরঞ্জাম সংগ্রহ থেকে সমগ্র ভোট প্রক্রিয়া বুঝে নিচ্ছেন ভোট কর্মীরা। সমস্ত সরঞ্জাম প্লাস্টিকে মুড়ে ফেলা হচ্ছে। ভোট কর্মীদেরকে বিভিন্ন কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বাস এবং গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে।

মুর্শিদাবাদ–বীরভূম সীমানায় কাসিম নগরে শুরু হয়েছে চেকিং। ছোট বড় বিভিন্ন গাড়িতে চলছে পুলিশের তল্লাশি। জঙ্গিপুর বিধানসভা কেন্দ্রে মোট ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৬৩টি। মোট ভোটার ২৫৪৭১৫ জন। আর সামশেরগঞ্জে মোট ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৩২৯। মোট ভোটার ২৩৫৫১১ জন। এখানেও গাড়ির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের শাসন ক্ষমতা পেলেও পরাজিত হয়েছিলেন মমতা। তার মুখ্যমন্ত্রী পদ টিকিয়ে রাখতে আগামী ৬ মাসের মধ্যে কোনো একটি বিধানসভা আসন থেকে নির্বাচনে জয়ী হতে হবে। আর সেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৪ নভেম্বর।

বিধানসভা নির্বাচনে ২৯৪টি আসনের বদলে নির্বাচন হয়েছিল ২৯২টি আসনে। ভোটের আগে মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর ও সামসেরগঞ্জে দুই বাম প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় নির্বাচন হয়নি। এছাড়া আরও চারটি কেন্দ্র- কোচবিহার জেলার দিনহাটা, উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ, নদীয়ার শান্তিপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা গোসাবায় ভোট হলেও একাধিক কারণে উপ-নির্বাচন হবে। তবে এদিন এই চার আসনের তফসিল ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, এএনআই নিউজ।

Link copied!