জানুয়ারি ১৫, ২০২৪, ১২:২৫ পিএম
ইসলামি পোশাকবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ইরানের রাজধানী তেহরানে মাশা আমিনি (২২) নামে এক কুর্দি তরুণীকে গ্রেফতার করে নীতি পুলিশ। ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশি হেফাজতে মারা যান তিনি। এই মৃত্যুর খবর প্রচার করায় দেশটির দুই নারী সাংবাদিককে ১৩ ও ১২ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এক বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে থেকে জামিনে মুক্তি পেলেন ওই দুই নারী সাংবাদিক নিলুফার হামেদি (৩১) ও এলাহেহ মোহাম্মদী (৩৬)।
ইরানের সংবাদমাধ্যমের বরাতে বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ইরানের সংস্কারপন্থী পত্রিকা শার্ঘের সাংবাদিক ছিলেন নিলুফার হামেদি। তিনিই প্রথম মাশা আমিনির মৃত্যুর খবর প্রচার করেন।
মাশা আমিনির মৃত্যু হয়েছে জেনে তাঁর বাবা ও দাদি পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলেন। এই দৃশ্য ধারণ করে অনলাইনে প্রকাশ করেন নিলুফার হামেদি। ছবির ক্যাপশনে লেখেন, ‘শোকের কালো পোশাক আমাদের জাতীয় পতাকায় পরিণত হয়েছে।’
গ্রেফতার আরেক সাংবাদিক এলাহেহ মোহাম্মদী দেশটির আরেক সংস্কারপন্থী হাম-মিহান সংবাদপত্রে কাজ করতেন। তিনি মাশা আমিনির নিজ শহরে তাঁর দাফন-কাফনের খবর সংগ্রহ ও প্রচার করেছিলেন।
এলাহেহ মোহাম্মদী লিখেছিলেন, কীভাবে শত শত শোকার্ত মানুষ মাশা আমিনির জন্য কেঁদেছিলেন, তাঁরা কীভাবে ‘নারী, জীবন, স্বাধীনতা’ বলে প্রতিবাদী স্লোগান দিয়েছিলেন।
মাশা আমিনির দাফনের পর ইরানে প্রথম বিক্ষোভ হয়। দ্রুত দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এই বিক্ষোভ। বিক্ষোভকারীরা আরও স্বাধীনতা দাবি করেন। তাঁরা সরকারের পতন দাবি করেন।
বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পরপরই এই দুই নারী সাংবাদিককে গ্রেফতার করে ইরানের কর্তৃপক্ষ। মার্কিন সরকারের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগ, জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে নিলুফার হামেদি ও এলাহেহ মোহাম্মদীকে যথাক্রমে ১৩ ও ১২ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
কারাদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে দুজনই আপিল করেন। আপিলের বিষয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তাঁরা জামিনে মুক্ত থাকবেন বলে প্রতিবেদনে জানা যায়।
২ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ জামানতে দুই নারী সাংবাদিককে জামিন দেওয়া হয়। জামিনে থাকাকালে তাঁরা দেশত্যাগ করতে পারবেন না।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ফুটেজে দেখা যায়, জামিনে মুক্তির পর এই দুই সাংবাদিক তাঁদের পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের আলিঙ্গন করছেন।