কেরালায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, মৃত বেড়ে ৩৫

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ১৯, ২০২১, ১০:৪৯ এএম

কেরালায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, মৃত বেড়ে ৩৫

কয়েক দিনের চলা বিরামহীন ভারী বৃষ্টিপাতে বিধ্বস্ত ভারতের কেরালা প্রদেশ। সোমবার (১৮ অক্টোবর) পর্যন্ত নিম্নচাপের বৃষ্টিতে দক্ষিণের এই রাজ্যে অন্তত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যার পানিতে  ধস নেমে মারা গিয়েছেন অধিকাংশ মানুষ। নিখোঁজ আরও অনেকে। তাই নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এই পরিস্থিতিতে দু’টি বড় নদীবাঁধের লকগেট খোলার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে কেরল প্রশাসন। ফলে পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা থাকছে।

ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, বাড়তি সতর্কতায় এখনও রাজ্যের ১১টি জেলায় অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি রয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত কিছুটা কমায় গতি বেড়েছে উদ্ধারে। বন্যাকবলিত এলাকায় সেনা ও নৌ বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালাচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। তবে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ সতর্ক করে বলেছে, বুধবার থেকে আবারও ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।  বন্যার পানি বেরিয়ে যেতে এরই মধ্যে খুলে দেয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি বাধ।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও দ্য হিন্দুর খবরে বলা হয়, প্রতি বছর বন্যার কবলে পড়লেও গেলো ১০ বছরের মধ্যে এমন ভয়াবহ বন্যা দেখেননি কেরালার জনগণ। বন্যার ভয়াবহতার কারণে চরতি বছর শবরী মালা মন্দিরে রাজ্যের সবচেয়ে বড় তীর্থ উৎসব স্থগিত করা হয়েছে।

আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, যে দু’টি বাঁধের পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার মধ্যে একটি এশিয়ার বৃহত্তম খিলেন বাঁধ ইদ্দুকি। যা রয়েছে পেরিয়ার নদীর উপর। অন্যটি ইদামালায়ার বাঁধ। এই বাঁধটিও পেরিয়ারেরই একটি উপনদীর উপর রয়েছে।

সোমবার(১৮ অক্টোবর) প্রাদেশিক পানিসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী  রসি অগাস্টিন জানান, ইদ্দুকি বাঁধের পানিস্তর যে কোনও মুহূর্তে বিপদসীমা পেরিয়ে যাবে। বাঁধের পানিস্তর সোমবার সকাল ৭টায় ছিল বিপদসীমার মাত্র দু’ফুট নীচে। মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) সেই সীমা পেরিয়ে যায়।

কেরালার পানি সম্পদ বিষয়ক এই মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘বাড়তে থাকা পানিস্তর বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই ইদ্দুকির দু’টি গেট ৫০ সেন্টিমিটার করে খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে প্রতি সেকেন্ডে ১০০ কিউবিক মিটার করে পানি বেরিয়ে যাবে।’’

কেরালা প্রাদেশিক সরকারের এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ বেড়েছে রাজ্যবাসীর। বিশেষজ্ঞদের একটি অংশের মতে, রাজ্যের অধিকাংশ জেলা যেখানে প্লাবিত সেখানে বাঁধের জল ছাড়লে বিপদ আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।  তবে প্রাদেশিক সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,  প্রশাসনের সতর্কবার্তা মেনে চললে সাধারণ মানুষও ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে চলতে পারবেন।

শুধু কেরালা  নয়,  সোমবার উত্তরাখণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, দিল্লিসহ দেশের আরও ১০টি রাজ্যে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরাখণ্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি সংক্রান্ত দুর্ঘটনায় পাঁচ জন মারা গিয়েছেন। আহত হয়েছেন দু’জন। হিমাচল প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, উড়িষ্যা ও  উত্তরপ্রদেশও রবিবার রাত থেকে সোমবার সারা দিন হওয়া টানা ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত। এসব প্রদেশের বিভিন্ন জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে।  

Link copied!