২০০৫ সালের সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় সরাসরি জড়িত নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য দীর্ঘদিন পলাতক তুহিন রেজাকে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩।
শুক্রবার (২৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য জানান র্যাব-৩ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ ।
গ্রেফতারকৃত তুহিন রেজা ২০০৪ সালে জেএমবির ঝিনাইদহ সদর শাখায় সদস্য হিসেবে যোগদান করে। লিফলেট তৈরি, লিখিত প্রচার-প্রচারণার সম্পাদনা, গোপন ও নাশকতামূলক খবরাখবর আদান-প্রদান, বিভিন্ন ভিডিও এডিটিংয়ের মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করত।
২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট হামলার পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অন্যান্য হামলাকারীদের সাথে রেজা আদালত চত্বরের আশেপাশে অবস্থান নেয়। এলোপাথাড়ি বোমা হামলার পর তারা বিভিন্ন দিকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে এসে ঝিনাইদহ সদরে জঙ্গি ক্যাম্পে কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকে রেজা। এরপর মামলা ও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে সেখান থেকে ঢাকায় চলে আসে।
র্যাব ৩ অধিনায়ক আরও জানান, গ্রেফতারকৃত আসামি প্রথমে যাত্রাবাড়ী পরবর্তীতে খিলগাঁও, উত্তরা, মহাখালীসহ বিভিন্ন জায়গায় স্থান পরিবর্তন করে বসবাস করে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হওয়ার ভয়ে সে বিভিন্ন সময় বাসা পরিবর্তন করে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় বসবাস শুরু করে। ২০২১ সাল থেকে সে তেজগাঁও এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকে এবং সেখান থেকেই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পলাতক অবস্থায় সে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভিডিও এডিটিংসহ বিভিন্ন সফটওয়্যার ভিত্তিক কাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করত।
উল্লেখ্য, নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে একযোগে সিরিজ বোমা হামলা চালায়। ওই সময় সারা দেশের ৬৩টি জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার পাশাপাশি রাজধানী ঢাকার ৩৪টি স্পটসহ সর্বমোট ৪৫০টি স্পটে প্রায় ৫০০ বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় জেএমবির জঙ্গিরা। আধা ঘণ্টার ব্যবধানে চালানো এ সিরিজ বোমা হামলায় ২ জন নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়। একযোগে এই হামলার মাধ্যমে বাংলাদেশে নিজেদের সংঘবদ্ধ উপস্থিতির জানান দেয়ার চেষ্টা করেছিল জেএমবির সদস্যরা।