হাজারো বিতর্ক চারদিকে ঘিরে রাখে যাকে, তিনি সবকিছু তুড়ি মেরে দূরে সরিয়ে নিজের ঝলক ঠিকই মাঠে দেখিয়ে যান। সিলেটের মাঠে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিবের ব্যাট যেমন উঠলো ঝলসে তেমন করেই আজ ঝলমলে সাকিবকে দেখা গেল কালো-সবুজ রঙে গ্রাজুয়েশনের গাউনে। খেলার মাঠে সময়কে গুরুত্ব দিলেও গ্রাজুয়েট হতে অনেকটা সময়ই পার করে দিলেন সাকিব! বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ১৪ বছরে হলেন গ্রাজুয়েট!
রবিবার (১৯ মার্চ) আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এর ২১তম সমাবর্তনে গ্রাজুয়েট হিসেবে অংশ নেন তিনি।
‘খন্দকার সাকিব আল হাসান’ পোশাকি নামে সাকিবের নাম দেখা যায় গ্রাজুয়েটের তালিকায়। আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (এআইইউবি) ২০০৯-১০ সেশনের ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (বিবিএ) শিক্ষার্থী ছিলেন সাকিব।
সমাবর্তনে সাকিব বলেন, ‘ক্রিকেটে যখন আমার অভিষেক হয়, ক্যাপটা যখন হাতে পেয়েছিলাম তখন যেমন মনে হয়েছিল, এত বছর পর আজ সেই একই অনুভূতি কাজ করছে। ২০০৯ সালের দিকে আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের তিন বছর হয়ে যাওয়ার পরও আম্মা যখন ফোন করতেন, তখন জিজ্ঞেস করতেন; আমার পড়াশোনার কী অবস্থা। আজ আমি খুবই খুশি, খুবই আনন্দিত এবং গর্বিত। অবশেষে আমার এ স্বপ্নটা পূরণ হলো। খেলার মাঠে হয়তো বেশকিছু অর্জন আছে, কিন্তু এ গ্র্যাজুয়েশন আমার সবসময় স্বপ্ন ছিলে।’
কোচ-শিক্ষকদের ধন্যবাদ জানিয়ে সাকিব বলেন, ‘আমার সকল কোচ-টিচারকে আমি ধন্যবাদ জানাই। তাদের সাপোর্ট ছাড়া এটা সম্ভব হতে না। এআইইউবিকে ধন্যবাদ জানাই, তারা সবসময় আমাকে সমর্থন করেছে। শুধু আমাকে না, আমাদের ক্রিকেট দলের অনেকেই এখানে পড়াশোনা করছে।’
সাকিব আরও যোগ করেন, ‘খুব বেশি কিছু বলার নেই। সবাইকে দেখে খুব ভালো লাগছে। আশা করি সবার জীবন সামনে এগিয়ে যাবে। শুধু একটা কথাই বলবো, যখন আপনারা স্বপ্ন দেখবেন, স্বপ্নটা বড় দেখবেন। লক্ষ্য নির্ধারণ করে সততার সাথে কাজ করবেন, আমি নিশ্চিত আপনাদের সবার স্বপ্ন পূরণ হবে। আমরা সবাই বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদের সদয় সম্মতিক্রমে সভাপতিত্ব করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে সনদ বিতরণ করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ২১তম সমাবর্তনে বিভিন্ন অনুষদের মোট ৪ হাজার ৭২২ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেওয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে কৃতিত্ব ও শিক্ষায় সর্বোত্তম ফলাফল অর্জনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের স্বর্ণ পদক, একাডেমিক অ্যাওয়ার্ড ও সনদপত্র দেওয়া হয়।
পাঠক্রমবহির্ভূত কার্যক্রমের জন্য ডা. আনোয়ারুল আবেদীন লিডারশিপ পদক পেয়েছেন সাকিব। তাঁর গলায় পদকটি পরিয়ে দেন সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করা শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।