আগস্ট ১১, ২০২৫, ১২:৫০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ভিয়েনতিয়েনের নিউ লাওস স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষে মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় মুখটা মলিন থাকলেও দিন শেষে বাংলাদেশের মেয়েদের মুখে হাসিই ফিরেছে। মলিন হওয়ার কারণ—এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ৬-১ গোলের বড় ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। কিছুক্ষণ পরই হাসি ফেরার কারণ—বাছাইয়ে অন্যদের সব ম্যাচ শেষ হওয়ার পর জানা গেল বাংলাদেশ নিরাপদ জায়গাতেই আছে।
অর্থাৎ, অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপের চূড়ান্তপর্বে জায়গা করতে ন্যূনতম সেরা তিন রানার্সআপের মধ্যে থাকার যে প্রয়োজনীয়তা ছিল, সেটি বাংলাদেশ পূরণ করেছে। শীর্ষ তিন রানার্সআপের মধ্যে দ্বিতীয় হয়ে ২০২৬ অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপে জায়গা করে নিয়েছেন আফঈদা খন্দকার-মোসাম্মত সাগরিকারা।
অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ‘এইচ’ গ্রুপে দক্ষিণ কোরিয়া, লাওস ও পূর্ব তিমুরের বিপক্ষে। এই গ্রুপের সব ম্যাচ হয়েছে লাওসে। গত ২ থেকে ১০ আগস্ট সময়ে আরও ৭টি দেশে বাছাইপর্বের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে, তাতে অংশ নিয়েছে ২৯টি দেশ।
মোট ৩৩টি দল আট গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলেছে ১১টি জায়গার জন্য। আগামী বছরের এপ্রিলে দ্বাদশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ হবে থাইল্যান্ডে। স্বাগতিক হিসেবে থাইল্যান্ডের অংশগ্রহণ নিশ্চিত ছিল আগেই। ১২ দলের টুর্নামেন্টে বাকি দলগুলোই চূড়ান্ত হয়েছে রোববার শেষ হওয়া বাছাইপর্বে।
আট গ্রুপের আট সেরা দল হিসেবে থাইল্যান্ডের টিকিট কেটেছে দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান, জাপান, চীন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ভিয়েতনাম ও উত্তর কোরিয়া। প্রতিটি গ্রুপের রানার্সআপগুলোর মধ্যে পয়েন্ট ও গোল ব্যবধানে সেরা তিনে অবস্থান নিশ্চিত করেছে জর্ডান, বাংলাদেশ ও চাইনিজ তাইপে।
যে ১১টি দল বাছাইপর্ব উত্তীর্ণ হয়ে ২০২৬ সালের মূল পর্বে জায়গা করেছে, তাদের মধ্যে বিশেষভাবে ব্যতিক্রম বাংলাদেশ। বাকি ১০টি দলই এএফসির দ্বিবার্ষিক যুব টুর্নামেন্টে (অনূর্ধ্ব-১৯ ও অনূর্ধ্ব-২০) আগেও অংশ নিয়েছে। একবার নয়, একাধিকবার।
এশিয়া মহাদেশের নারী ফুটবলের এই প্রতিযোগিতার আগের ১১ আসরের মধ্যে সবচেয়ে কম অংশ নিয়েছে ভারত, তাও তিনবার। কিন্তু বাংলাদেশ কখনো বাছাইপর্বই উতরাতে পারেনি। আফঈদা-সাগরিকাদের ২০২৬ আসরে জায়গা করে নেওয়া তাই বিশেষই।
বিশ্বকাপও কাছেই!
থাইল্যান্ডে ১২ দল নিয়ে অনূর্ধ্ব-২০ নারী এশিয়ান কাপ শুরু হবে ২০২৬ সালের ১ এপ্রিল, ফাইনাল ১৮ এপ্রিল। এই টুর্নামেন্টে ১২টি দল মোট ৩টি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। কোন দল কোন গ্রুপে আর কোন কোন দলের বিপক্ষে খেলবে, সেটি চূড়ান্ত হয় যে ড্রতে, এএফসি তা এখনো ঘোষণা করেনি। তবে পট চূড়ান্ত হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ পট ৪-এ আছে জর্ডান ও ভারতের সঙ্গে। অর্থাৎ, এশিয়ান কাপের গ্রুপ পর্বে এ দুই দেশ বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হবে না। তিন দলই অন্য তিনটি পট থেকে একটি করে দলকে গ্রুপসঙ্গী হিসেবে পাবে। তিন গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ এবং সেরা দুই তৃতীয় স্থানধারী খেলবে কোয়ার্টার ফাইনালে, সেখান থেকে সেমিফাইনাল হয়ে ফাইনাল।
অনূর্ধ্ব-২০ এশিয়ান কাপের যে ফরম্যাট, তাতে দলগুলোর সামনে বিশ্বকাপ খেলার হাতছানিও আছে। ২০২৬ ফিফা অনূর্ধ্ব২০ নারী বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে পোল্যান্ডে। এই আসরেই প্রথমবারের মতো ২৪টি দল অংশ নেবে। আগের চেয়ে ৮টি দল বেড়ে যাওয়ায় এশিয়া থেকে খেলার সুযোগ পাবে ৪টি দল। আর এই চার দলই চূড়ান্ত হবে এশিয়ান কাপ থেকে। ১২ দলের টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালে ওঠা চার দলই পাবে বিশ্বকাপের সেই টিকিট।