ডিসেম্বর ৩১, ২০২৫, ০৬:৩১ পিএম
রাষ্ট্রপতি ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছেন। এ অধ্যাদেশের মাধ্যমে পাবলিক প্লেসে ধূমপানের শাস্তি বাড়ানোসহ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে।
নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, প্রকাশ্যে ধূমপান করলে জরিমানা আগের ৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়। ২০০৫ সালের ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন সংশোধন করে এ অধ্যাদেশ কার্যকর করা হয়েছে।
অধ্যাদেশে পাবলিক প্লেসের সংজ্ঞা ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস, হাসপাতাল, রেস্টুরেন্ট, হোটেল, শপিংমল, পরিবহন টার্মিনাল, পার্ক, মেলা ছাড়াও ভবনের বারান্দা, প্রবেশপথ ও আশপাশের উন্মুক্ত স্থানকে পাবলিক প্লেসের আওতায় আনা হয়েছে। এসব স্থানে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। আগের আইনে পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্দিষ্ট স্থান রাখার যে বিধান ছিল, তা বাতিল করা হয়েছে।
নতুন অধ্যাদেশে তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেজিংয়ে স্ট্যান্ডার্ড প্যাকেজিং বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। প্যাকেটের উভয় পাশে কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ জায়গাজুড়ে রঙিন ছবি ও লেখাসহ স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা মুদ্রণ করতে হবে, যা আগে ছিল ৫০ শতাংশ। একই সঙ্গে উৎপাদনের তারিখ ও কুইটলাইন হেল্প নম্বর উল্লেখ করাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ওটিটি প্ল্যাটফর্ম, সিনেমা, নাটক ও প্রামাণ্যচিত্রে তামাক ও ই-সিগারেট ব্যবহারের দৃশ্য প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইন্টারনেটসহ যে কোনো মাধ্যমে তামাকজাত দ্রব্যের সব ধরনের বিজ্ঞাপন, প্রচার ও প্রসার নিষিদ্ধ থাকবে। বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট বা মোড়ক প্রদর্শনও নিষিদ্ধ করা হয়েছে; কেবল বিক্রির সময় ছাড়া পণ্য দৃষ্টির আড়ালে রাখতে হবে।
করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কার্যক্রমের নামে তামাক কোম্পানির নাম, লোগো বা সহায়তা প্রদর্শনও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এসব বিধান লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে জরিমানা আগের এক লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অধ্যাদেশে আইন ভঙ্গের অভিযোগ ও মামলার ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধি প্রযোজ্য হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রয়োজনে অবৈধ বিজ্ঞাপন অপসারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নেওয়ার ক্ষমতাও কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে।