আগস্ট ১০, ২০২৫, ০৩:০৩ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
গাজায় ইসরাইলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনের ফুটবল তারকা সুলেইমান আল-ওবেইদের প্রতি উয়েফার শ্রদ্ধাঞ্জলি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন লিভারপুলের তারকা মোহামেদ সালাহ। তবে মিশরের ফরোয়ার্ডের সেই প্রশ্নের কোনো জবাব মেলেনি উয়েফার কাছ থেকে।
প্যালেস্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন জানায়, গত বুধবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলে মানবিক সহায়তা পাওয়ার জন্য অপেক্ষায় থাকা বেসামরিক মানুষদের ওপর ইসরাইলের হামলার ঘটনায় মারা যান ৪১ বছর বয়সী সুলেইমান। ভিড়ের মধ্যে ত্রাণের অপেক্ষায় ছিলেন তিনিও।
স্ত্রী, দুই ছেলে ও তিন মেয়ে রেখে গেছেন সুলেইমান।
ফিলিস্তিনের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবলারদের একজন ছিলেন এই ফরোয়ার্ড। বল পায়ে তার স্কিল, দর্শনীয় সব গোল ও সামগ্রিক প্রভাবের জন্য পরিচিতি পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি ‘ফিলিস্তিনের পেলে’ নামে। ফিলিস্তিনের হয়ে তার অভিষেক ২০০৭ সালে। ২০১০ সালে ওয়েস্ট এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন চ্যাম্পিয়নশিপে ইয়েমেনের বিপক্ষে তার বাইসাইকেল শটের গোল সাড়া জাগিয়েছিল তুমলভাবে।
শুধু ফুটবলেই নয়, ফিলিস্তিনের ক্রীড়াঙ্গনেই সুলেইমান ছিলেন অনেকের আদর্শ। বিরুদ্ধ পরিস্থিতি ও নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও এগিয়ে যাওয়ার পথে তাকে প্রেরণা মানতেন অসংখ্য মানুষ। উঠতি ও তরুণ ক্রীড়াবিদদের ‘মেন্টর’ হিসেবেও তিনি ছিলেন ঘনিষ্ঠ। সব মিলিয়ে মাঠের ভেতরে-বাইরে তার আবেদন ছিল প্রবল। তার এমন মৃত্যুতে শুধু একজন ফুটবল কিংবদন্তির বিদায় নয়, বরং ফিলিস্তিনের সামগ্রিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অংশের সমাপ্তি বলে মনে করা হচ্ছে।
সুলেইমান নিহত হওয়ার তিন দিন পর শনিবার সামাজিক মাধ্যমে ছোট্ট শ্রদ্ধাঞ্জলিতে তার ছবি পোস্ট করে উয়েফা লিখেছে, “সুলেইমান আল-ওবেইদকে বিদায়, ফিলিস্তিনির পেলে। এমন এক প্রতিভা তিনি, সবচেয়ে অন্ধকার সময়েও যিনি অসংখ্য শিশুকে আশা জুগিয়েছেন।”
উয়েফার সেই পোস্ট শেয়ার করে সালাহর প্রশ্ন, “আমাকে কি বলতে পারবেন, তিনি কিভাবে, কোথায় ও কেন মারা গেছেন?”
সালাহর মন্তব্যের পর স্কাই স্পোর্টসকে উয়েফা জানায়, তারা এটি নিয়ে কোনো মন্তব্য করবে না।
ফিলিস্তিনে ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদে বরাবরই সোচ্চার সালাহ। সেখানে মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার দাবিও জানিয়ে আসছেন তিনি অনেক দিন ধরেই।
গাজার মানবিক বিপর্যয় ক্রমে ভয়ঙ্কর পর্যায়ে যাওয়ার পরিক্রমায়ই এলো সুলেইমানের মৃত্যুর এই খবর। জাতিসংঘের হিসেবেই মে মাসের শেষ দিক থেকে এখনও পর্যন্ত সেখানে ১ হাজার ৩০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে স্রেফ ত্রাণ নিতে গিয়েই।
পেশাদার ফুটবলারদের অ্যাসোসিয়েশনের হিসেবে, গত প্রায় দুই বছরে গাজায় ৬৬০ জনের বেশি ক্রীড়াঙ্গনের মানুষ নিহত হয়েছে ইসরাইলের হামলা ও এর প্রভাবে। এর মধ্যে ফুটবল সংশ্লিষ্ট ছিলেন অন্তত ৩২১ জন।